ন্যায়বিচারের অঙ্গীকার করলেন আপিল বিভাগে নবনিযুক্ত ৪ বিচারপতি
প্রকাশ | ২০ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
আইন ও বিচার ডেস্ক
আপিল বিভাগে নবনিযুক্ত চার বিচারপতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শহীদদের স্মরণ, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা, বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণের অঙ্গিকার করেছেন। আপিল বিভাগের ১ নম্বর বিচারকক্ষে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠান তারা এ অঙ্গীকার করেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রথমে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও পরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি সিনিয়র আইনজীবী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বক্তব্য রাখেন। এ সময় প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিরা উপস্থিত ছিলেন।
আপিল বিভাগে নিয়োগ পাওয়া চার বিচারপতি হলেন- বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল করিম, বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি এস এম এমদাদুল হক।
আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান বলেন, 'গণ-অভু্যত্থানের উদ্দেশ্যই হলো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। আমরা যেন জনগণের হয়ে কাজ করতে পারি, আইনঙ্গনের সবার প্রতি এই আহ্বান রইল।' সম্মানহানি হয় এমন কাজ না করতে আইনজীবীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল করিম বলেন, 'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শহীদদের স্মরণ, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করব। বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণের চেষ্টা করব।'
আরেক বিচারপতি রেজাউল হক বলেন, 'বহুপ্রাণের বিনিময়ে দ্বিতীয় স্বাধীনতা, শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা, আহতদের আরোগ্য কামনা করি। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সর্বদা চেষ্টা করব, ন্যায়বিচারের জন্য প্রয়োজন তীক্ষ্ন দৃষ্টি ও সত্যকে বুঝার সক্ষমতা।'
বিচারপতি এস এম এমদাদুল হক বলেন, 'আজকে এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে বিজয়ী ছাত্র- জনতার যারা তাদের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য শপথ নিয়ে নতুনভাবে চলার পথ তৈরি করেছেন। যেখানে থাকবে না কোনো বৈষম্য, কোনো অন্যায়, কোনো অত্যাচার, কোনো অনাচার, কোনো নির্যাতন- তবে থাকবে স্বাধীন। বৈষম্যহীন রাষ্ট্র যেখানে নাগরিকরা তাদের মতামত স্বাধীনভাবে প্রকাশ করতে পারবে এবং ন্যায়বিচার প্রাপ্ত হবেন।'
১৩ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টায় সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে চার বিচারপতিকে শপথ বাক্য পাঠ করান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমদ ভূঞা। এর আগে, ১২ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগের চার বিচারপতিকে আপিল বিভাগে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি।
নিয়োগ পাওয়া চার বিচারপতির সংক্ষিপ্ত পরিচয়:
বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী
মরহুম বিচারপতি এ এফ এম আব্দুর রহমান চৌধুরীর ছেলে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ও এলএলএম ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে যুক্তরাজ্য থেকেও আন্তর্জাতিক আইনে এলএলএম ডিগ্রি নেন। ১৯৮৫ সালে তিনি জেলা আদালতে ও ১৯৮৭ সালে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। ২০০৩ সালের ২৭ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি এবং দুই বছর পরে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান।
বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল করিম
সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল করিম রসায়নে স্নাতক, আইনে এলএলবি ও এলএলএম ডিগ্রি এবং পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮৬ সালে তিনি জেলা আদালতে, ১৯৮৮ সালে হাইকোর্ট বিভাগে এবং ১৯৯৬ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। ২০০৪ সালের ২৩ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি এবং দুই বছর পরে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান।
বিচারপতি মো. রেজাউল হক
মো. রেজাউল হক এমএ ও এলএলবি ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৮৮ সালে তিনি জেলা আদালতে ও ১৯৯০ সালে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। ২০০৪ সালের ২৩ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি এবং দুই বছর পরে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান।
বিচারপতি এস এম এমদাদুল হক
এস এম এমদাদুল হক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ও এলএলএম ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে ১৯৯০ সালে তিনি জেলা আদালতে ও ১৯৯২ সালে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। ২০০৪ সালের ২৩ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি এবং দুই বছর পরে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান।