দলের কারাবন্দি নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের মুক্তির জন্য সরকারকে যথেষ্ট সময় দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, একে একে সব জাতীয় নেতারা মুক্তি পেলেও এ টি এম আজহারুল ইসলাম বৈষম্য ও জুলুমের শিকার।
শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে লক্ষ্ণীপুর জেলা আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে জামায়াতের জনসভায় শফিকুর রহমান এ কথাগুলো বলেন। তিনি বলেন, 'তাকে কারাগারে রেখে বাইরে অবস্থান করা আমার পক্ষে আর সম্ভব নয়। আমরা সরকারকে যথেষ্ট সময় দিয়েছি। আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে আমি নিজে গ্রেপ্তার হওয়ার জন্য ২৫ ফেব্রম্নয়ারি আদালত প্রাঙ্গণে হাজির থাকব। আইন মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আমাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।'
সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন জামায়াত আমির। সমাবেশ ঘিরে সকাল থেকেই নেতাকর্মীরা খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে জড়ো হন আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে। দীর্ঘ ২৮ বছর পর দলের কোনো আমির লক্ষ্ণীপুরে সমাবেশে যোগ দেওয়া নিয়ে উদ্দীপনা ছিল নেতাকর্মীদের।
সমাবেশে লক্ষ্ণীপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র তাহেরের পরিবারের প্রতি ইঙ্গিত করে জামায়াতের আমির বলেন, 'এক বছর আগে লক্ষ্ণীপুরের মাটিতে দাঁড়িয়ে কথা বলতে পারব, সেই কল্পনা করি নাই। স্বাধীনতার পর একটি গোষ্ঠী লক্ষ্ণীপুরকে সন্ত্রাসী এলাকায় পরিণত করেছে। বিশেষ করে একটি পরিবার। এখন তারাও পালিয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'এমন রাজনীতি ঘৃণা করি, যে রাজনীতি করতে গিয়ে দেশ থেকে পালাতে হয়। আবু সাঈদের মতো বুক পেতে মারা যাওয়াও যেন আনন্দের হয়, এমন রাজনীতি চাই।'
সমাবেশে উপস্থিত নেতাকর্মীদের কাছে জামায়াত আমির জানতে চান লক্ষ্ণীপুরে চাঁদাবাজি, দখলবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড হচ্ছে কিনা। নেতাকর্মীদের কাছে হঁ্যা সূচক জবাব পেয়ে জামায়াত আমির বলেন, 'দলমতনির্বিশেষে সবাইকে চাঁদাবাজি, দখলদারি বন্ধ করতে এগিয়ে আসতে হবে। জাতিকে সামনে এগিয়ে যেতে দিন। আবার যেন ফ্যাসিবাদের নতুন ধারা, অধ্যায় তৈরি না হয়। তার থেকে ফিরে আসুন। ফিরে না এলে আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে।'
তিনি বলেন, 'আপনারা পাশে থাকলে চাঁদাবাজ, দুর্নীতি ও দুঃশাসনমুক্ত দেশ হবে। এর জন্য প্রথমত, আপনাদের ভালোবাসা, দ্বিতীয়ত, সমর্থন, তৃতীয়ত, আপনাদের পাশে পেতে চাই।'
জনসভায় সভাপতিত্ব করেন লক্ষ্ণীপুর জেলা জামায়াতের আমির রুহুল আমিন ভূঁইয়া। সেক্রেটারি জেনারেল ফারুক হোসাইনের সঞ্চালনায় এ ছাড়াও বক্তব্য দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম মাসুম, কর্ম পরিষদের সদস্য রেজাউল করিম, মোবারক হোসেন প্রমুখ।