'আদিবাসী' শব্দযুক্ত চিত্রকর্ম
হামলার ঘটনায় আরও একজন গ্রেপ্তার
প্রকাশ | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
পাঠ্যবই থেকে 'আদিবাসী' শব্দযুক্ত চিত্রকর্ম বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে রাস্তায় নামা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে আরেকজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ৪২ বছর বয়সী সাঈদ ফজলুল করিম স্বপনকে শনিবার নারায়ণগঞ্জের ফতুলস্না থানার পূর্ব শিয়াচর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে মামলায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হলো।
ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, 'বিভিন্ন ফুটেজ পর্যালোচনা করে স্বপনকে শনাক্ত করা হয়। এরপর তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় স্বপনের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে মতিঝিল থানা পুলিশ।'
মতিঝিল থানার ওসি মেজবাহ উদ্দিন বলেন, 'স্বপন এজাহারনামীয় আসামি নন। কিন্তু ফুটেজ দেখে তাকে শনাক্ত করা হয়।'
ঘটনার দিন তিনি কেন এসেছিলেন জানতে চাইলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে ওসি বলেন, 'স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি নামের একটি সংগঠনের লোকজন তাকে সেদিন আসতে বলেছিল বলে জানিয়েছে।'
পেশায় স্থানীয়ভাবে জমি কেনা-বেঁচার কাজ করা স্বপনের প্রাথমিকভাবে কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা মেলেনি বলে ভাষ্য ওসির।
নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি বইয়ের পেছনের প্রচ্ছদে 'আদিবাসী' শব্দযুক্ত একটি চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছিল। সেখানে একটি গাছের পাঁচটি পাতায় লেখা ছিল মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ ও আদিবাসী; পাশে লেখা ছিল 'পাতা ছেঁড়া নিষেধ'।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী 'স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি' ব্যানারে গত ১২ জানুয়ারি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড- এনসিটিবি ঘেরাও করার পর রাতে ওই বইয়ের অনলাইন সংস্করণ থেকে চিত্রকর্মটি সরিয়ে ফেলা হয়।
এর প্রতিবাদে গত ১৫ জানুয়ারি বেলা ১১টায় পাঠ্যপুস্তক ভবন ঘেরাওয়ের ঘোষণা দেয় 'সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্রজনতা' নামে আদিবাসী শিক্ষার্থীদের একটি সংগঠন। পরে 'স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টি'ও একইসময়ে পাঠ্যপুস্তক ভবন ঘেরাও করার ঘোষণা দেয়।
নিজ নিজ কর্মসূচি পালনে উভয়পক্ষ পাঠ্যপুস্তক ভবনের সামনে পৌঁছালে আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়।
পরের দিন মতিঝিল থানায় একটি মামলা করেন আহত জগদীশ চাকমা। মামলায় এজাহারনামীয় ১৬ জনসহ অজ্ঞাত আরও ২০০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়।
এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মধ্যে ঘটনার দিন রাতেই আরিফ আল খবির ও আব্বাস নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর গত ২৯ জানুয়ারি হাবিবুর রহমান এবং ১২ ফেব্রম্নয়ারি গ্রেপ্তার করা হয় শাহাদাৎ ফরাজী সাকিবকে।
শাহাদাৎ ফরাজী সাকিব জাতীয় নাগরিক কমিটির ধানমন্ডি শাখার নেতা ছিলেন। ঘটনার দিন হামলায় তার 'সংশ্লিষ্টতার' অভিযোগ উঠলে তাকে জাতীয় নাগরিক কমিটি থেকে বহিস্কার করা হয়।