দ্রম্নত নির্বাচন দিয়ে অস্থিরতা দূর করুন :মির্জা ফখরুল

প্রকাশ | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
বৃহস্পতিবার লাকসাম স্টেডিয়ামে বিশাল জনসভায় বক্তব্য রাখেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর -ফোকাস বাংলা
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেছেন, আজকে পুরো জাতি অস্থিরতার মধ্যে আছে। নির্বাচন দিয়ে অস্থিরতা দূর করুন। আর একটি রাজনৈতিক দলকে বলব এমন কিছু বলবেন না যাতে দেশ আবারও অস্থির হয়ে উঠে। বৃহস্পতিবার বিকালে কুমিলস্নার লাকসাম স্টেডিয়ামে রাষ্ট্র সংস্কারে বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নে এক বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। মির্জা ফখরুল বলেন, 'সংস্কারের কথা বলে অনেকে নির্বাচন পেছানোর কথা বলছেন। সংস্কার সাধারণ মানুষ কয়জন বুঝে? দুইবেলা ভাত, মাথার গোঁজার ঠাই, চিকিৎসা, শিক্ষা এবং শান্তি চায় মানুষ। জনগণের কাছে এই মৌলিক অধিকারগুলোই হচ্ছে সংস্কার।' তিনি বলেন, দয়া করে দেশকে আর অস্থিতিশীল করবেন না, নৈরাজ্য সৃষ্টি করবেন না। সম্প্রতি ফেসবুকে ইউটিউবে দেখা যাচ্ছে বিদেশে বসেই কেউ কেউ সব সংগ্রাম করেছে। আমরা কিছুই করিনি। বিদেশে বসে অনেক কিছুই লেখা যায়, বলা যায়। এসময় বিএনপি মহাসচিব জুলাই বিপস্নবে জনগণের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানান। বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশকে আবার অস্থির করার পাঁয়তারা চলছে। আমরা চাই এই অন্তর্র্ব‌তী সরকার সফল হোক। কেননা ছাত্রজনতার রক্তের বিনিময়ে গঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। আজকে একটি ফ্যাসিবাদ সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে। সেখান থেকে ছাত্রজনতার সমন্বয়ে আমরা বিদায় করেছি। এখন একটি সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখন এ সরকারকে সমর্থন না দিলে কাজ করতে পারবে না। তাই সমর্থন দিয়ে যাচ্ছি। তিনি বলেন, আমরা ভোটের কথা কেনো বলছি, কারণ নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে জনগণ থাকে। অনির্বাচিত সরকারের সঙ্গে জনগণ থাকে না। তাই যতদ্রম্নত সম্ভব সংস্কার করে নির্বাচন দেন। বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন, '৭১ দেশ স্বাধীন করেছিলাম, পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ ভালো কিছু উপহার দিতে পারে নাই। তারই কন্যা সংসদ, বিচার বিভাগ, নির্বাচনি ব্যবস্থা, ভোটাধিকার, অর্থনীতি সব ধ্বংস করে দিয়েছে। এ থেকে দেশকে সুস্থধারায় ফিরে আনতে তারেক রহমান স্স্নোগান দিয়েছেন টেকব্যাক বাংলাদেশ। আরেকটি স্স্নোগান দিয়েছে ফয়সালা হবে রাজপথে। রাজপথেই ফয়সালা হয়েছে। হাসিনা পালিয়েছে। তিনি বলেন, এই লাকসামে বিএনপির নেতাকর্মীরা অনেক অত্যাচারের শিকার হয়েছে। ভয়ংকর রূপে আর্বিভূত হয়েছিল মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, বিএনপির কাউকে এলাকায় ঢুকতে দেননি। লাকসামের ত্রাস ছিলেন। এখন কোথায়? তিনি আরও বলেন, সারা দেশে আমাদের সাবেক এমপিসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। ৬০ লাখ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। জুলাই বিপস্নবেও ২ হাজার মানুষকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করেছে। সেই শহিদদের সম্মান জানাই, সম্মান জানাই শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে। শ্রদ্ধা জানাই গণতন্ত্রের জননীকে। মির্জা ফখরুল বলেন, নিজেদের মধ্যে কোনো বিভেদ সৃষ্টি করতে চাই না। কেউ কোনো বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করবেন না। অযথা দেশকে বিভ্রান্ত করবেন না। ২৪ যেমন আমাদের স্মরণীয়, ৭১-ও স্মরণীয়। ৭১ নিয়ে কটাক্ষ করে কেউ কথা বলবেন না। তিনি বলেন, অনেক বয়স হয়েছে। আর হানাহানি চাই না। দেশ নিয়ে শেখ হাসিনা দিলিস্নতে বসে এখনো ষড়যন্ত্র করছে। আগেও বলেছি ভারত আমাদের বড় প্রতিবেশী। তারা শেখ হাসিনা আশ্রয়-প্রশ্রয় দিলে জনগণ তাদের পক্ষে থাকবে না। এরা দেশের মানুষকে হত্যা করেছে। লাকসাম উপজেলা, পৌরসভা ও মনোহরগঞ্জ উপজেলা বিএনপি আয়োজিত জনসভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির শিল্পবিষয়ক সম্পাদক মো. আবুল কালাম। জনসভার শুরুতে ৩১টি কবুতর উড়িয়ে বিএনপির ৩১ দফাকে স্বাগত জানানো হয়।