বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২
নতুন বই এসেছে ১১৩টি

চিরায়ত সাহিত্যে আস্থা পাঠকের

যাযাদি রিপোর্ট
  ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
চিরায়ত সাহিত্যে আস্থা পাঠকের
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সোমবার বই মেলায় একটি স্টলে বই দেখছেন পাঠকরা -ফোকাস বাংলা

অমর একুশে বইমেলার ১৭তম দিন ছিল সোমবার। এদিনও মেলার শুরু থেকেই পাঠক-দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়তে থাকে মেলায়। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, পাঠক বাড়ার পাশাপাশি মেলায় বিক্রিও বেড়েছে। এতে খুশি সবাই। মেলায় ঘুরে দেখা গেছে, সমকালীন সাহিত্যের পাশাপাশি ক্রেতারা চিরায়ত সাহিত্যের খোঁজ করছেন। কিনছেনও। দেখা গেল, জিনিয়াস পাবলিকেশনসের প্যাভিলিয়নে সাজানো রয়েছে ধ্রম্নপদি সাহিত্যিকদের গল্পসংকলন। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, বনফুল, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম আছে সেখানে। মেলার অন্য স্টলেও চোখে পড়ে ধ্রম্নপদি লেখকদের গল্প; পাশাপাশি বেরিয়েছে নতুন গল্পকারদের লেখাও। তবে পুরনোতে আস্থা বেশি পাঠকের। জানালেন স্টলের বিক্রয়কর্মীরা।

বিক্রয়কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গল্প হলেও হরর বা সায়েন্স ফিকশন ধারার বই বেশি চলছে। আলাদা করে গল্প নিয়ে পাঠকের উপচে পড়া ভিড় আছে, তা বলা যাবে না। তারা জানান, সব রকমের পাঠক স্টলে আসেন। তার মধ্যে গল্পের পাঠকও আছেন। আলাদাভাবে গল্প নিয়ে খুব চাহিদা নেই। মোটামুটি চলে। তবে অনুভব প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী অর্পণ বললেন, 'চিরায়ত লেখকদের গল্প আমাদের স্টলে চলছে ভালো। প্রথমে যা নিয়ে আসছি, সেই স্টক শেষ। আবার আনা হয়েছে।'

বাংলা একাডেমি জানিয়েছে, সোমবার নতুন বই এসেছে ১১৩টি। এনিয়ে মোট বই এসেছে ১ হাজার ৬৪৪টি।

এদিন বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় 'আল মাহমুদ : জীবন ও কবিতা' শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মজিদ মাহমুদ। আলোচনায় অংশ নেন মুসা আল হাফিজ এবং কাজী নাসির মামুন। সভাপতিত্ব করেন মাহবুব সাদিক।

প্রাবন্ধিক বলেন, আল মাহমুদ বাংলা সাহিত্যের এমন এক গুরুত্বপূর্ণ সময়ের কবি, যখন বাঙালি তথা পূর্ববঙ্গের মানুষের আত্ম-পরিচয়ের প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল। একজন চারণ

কবির মতো প্রেরণায় ভর করে তিনি স্বদেশ ও স্বজাতির কথা বর্ণনা করে গেছেন। কৃষকের কাছে যেমন তার ভূমি, কৃষি উৎপাদন, স্ত্রী, সন্তান, গবাদিপশু জীবনের অবিচ্ছেদ্য উপকরণ, তেমনি আল মাহমুদের কাছে তাঁর স্বদেশ চেতনা জীবনের অপরিহার্য সহায়। তিনি কবিতায় শহর ও নগর জীবনের পার্থক্য ঘুচিয়ে দিয়েছেন। তাঁর কাব্যভাষায় একটি জাতির হাজার বছরের ক্রিয়াভিত্তিক শব্দরাজি পরম সফলতার সঙ্গে ধরা দিয়েছে।

আলোচকদ্বয় বলেন, কবি আল মাহমুদ তাঁর সমকালীন বাস্তবতা, আবহমান জীবন ও ঐতিহ্য থেকেই উঠে এসেছেন। তাঁর কবিতার প্রকৃতি, নারী, লোকায়ত জীবন, আধুনিকতা, সমসাময়িক বৈশ্বিক প্রবণতা নিজস্ব রূপে হাজির হয়েছে। মানবজীবনের পটভূমিতে তিনি প্রকৃতিকে জীবন্তরূপে তুলে ধরেছেন। তিনি শব্দের প্রচলিত অর্থকে অতিক্রম করেছেন এবং নতুন অর্থ নির্মাণ করেছেন। রাজনৈতিক চেতনা চোরাস্রোতের মতো তার কবিতায় প্রবাহিত হয়েছে।

সভাপতির বক্তব্যে মাহবুব সাদিক বলেন, 'কবি আল মাহমুদ ছিলেন ঐতিহ্য ও ইতিহাস সচেতন আপাদমস্তক একজন কবি। তাঁর কবিতা আমাদের স্বপ্ন দেখতে উদ্বুদ্ধ করে। বাংলা সাহিত্যে আল মাহমুদ উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে টিকে থাকবেন।'

সোমবার লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন- কবি মতিন বৈরাগী এবং কবি ফজলুল হক তুহিন।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছিল ঝর্ণা আলমগীরের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন 'ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী' এবং রূপশ্রী চক্রবর্তী'র পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন 'শিল্প বাংলা'-এর পরিবেশনা। মেলা শুরু হবে বিকাল ৩টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।

বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে 'জীবন ও কর্ম : শহীদ কাদরী' শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন তারানা নূপুর। আলোচনায় অংশ নেবেন শামস আল মমীন এবং আহমাদ মাযহার। সভাপতিত্ব করবেন হাসান হাফিজ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে