বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১ বৈশাখ ১৪৩২

যমুনা রেলসেতুর ডাবল ট্র্যাকের লাইন উদ্বোধন ১৮ ফেব্রম্নয়ারি

স্টাফ রিপোর্টার, টাঙ্গাইল
  ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
যমুনা রেলসেতুর ডাবল ট্র্যাকের লাইন উদ্বোধন ১৮ ফেব্রম্নয়ারি
বুধবার টাঙ্গাইলে নবনির্মিত রেলসেতু দিয়ে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরুর আগে প্রকল্পের কর্মীরা -যাযাদি

প্রমত্তা যমুনার ওপর নবনির্মিত যমুনা রেলসেতু দিয়ে বুধবার থেকে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হলেও বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলবে আগামী ১৮ ফেব্রম্নয়ারি থেকে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এদিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগাযোগ উপদেষ্টাসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।

রেলসেতু প্রকল্পের পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান জানান, বুধবার রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা ১১টি বগি সম্বলিত সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি ৬০০ যাত্রী নিয়ে এদিন সকাল ১১টা ১৮ মিনিটে যমুনা রেলসেতু হয়ে ঢাকা অভিমুখে যায়। ট্রেনটি মাত্র ছয় মিনিটে ১১টা ২৪ মিনিটে সেতু পার হয়। এসময় ট্রেনের গতিবেগ ছিল প্রায় ৭০ কিলোমিটার। ডুয়েলগেজ ডাবল ট্র্যাকের লাইনের সেতুর দুটি লাইনের মধ্যে একটি লাইনে বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চালু হলো। পর্যায়ক্রমে শিডিউল অনুযায়ী বাকি ট্রেনগুলো চলবে।

ফলে যমুনা বহুমুখী সেতু (বঙ্গবন্ধু সেতু) দিয়ে আর ট্রেন চলবে না।

তিনি জানান, ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ যমুনা রেল সেতুতে দুটি লাইন থাকলেও প্রথমে একটি লাইন দিয়েই উভয় দিকে ট্রেন চলাচল করবে। আগামি ১৮ ফেব্রম্নয়ারি রেলসেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের বিভাগীয় প্রকৌশলী-২ বীরবল মন্ডল জানান, প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিক ট্রেন যমুনা রেলওয়ে সেতু পার হয়েছে। এখন থেকে নিয়মিতভাবে যমুনা রেলওয়ে সেতু দিয়েই ট্রেন চলাচল করবে। যমুনা বহুমুখী সেতুতে (বঙ্গবন্ধু সেতুতে আর ট্রেন চলবে না।

১৯৯৮ সালের ২৩ জুন যমুনা নদীর ওপর নির্মিত সেতু চালু হওয়ার পরই ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। তবে ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় ট্রেনের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়। বুধবারের আগ পর্যন্ত প্রতিদিন প্রায় ৩৮টি ট্রেন ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পারাপার হচ্ছিল। এ সমস্যা সমাধানে ২০২০ সালের ৩ মার্চ যমুনা নদীর ওপর বিদ্যমান সড়ক সেতুর উজানে আলাদা রেলসেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতুর সমান্তরালে ডুয়েলগেজ ডাবল ট্র্যাকের ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলসেতু নির্মাণের পরিকল্পনা অনুমোদন করে তৎকালীন সরকার। ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর রেল সেতুটির নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ২০২১ সালের মার্চে রেল সেতুর পিলার নির্মাণে পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়।

প্রথমে প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা নির্ধারিত হলেও পরে তা ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় উন্নীত হয়। এর মধ্যে ২৭ দশমিক ৬০ শতাংশ অর্থায়ন এসেছে দেশীয় উৎস থেকে এবং ৭২ দশমিক ৪০ শতাংশ ঋণ দিয়েছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। দেশের বৃহত্তর এ রেল সেতুর নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করেছে জাপানি কোম্পানি ওটিজি ও আইএইচআই (জয়েন্টভেঞ্চার)।

রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী, বঙ্গবন্ধু সেতুর সমান্তরালে ডুয়েলগেজ ডাবল ট্র্যাকের এ রেলসেতু ব্যবহারের জন্য ৭ দশমিক ৬৬৭ কিলোমিটার রেলওয়ে অ্যাপ্রোচ এমব্যাংকমেন্ট এবং লুপ, সাইডিংসহ মোট ৩০ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ করা হয়। প্রকল্পের শুরুতে এই সেতুর নাম ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত বছরের ডিসেম্বরে এর নাম পাল্টে যমুনা রেলসেতু রাখা হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে