কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে চট্টগ্রামে শ্রমিক বিক্ষোভ ধাওয়া-পালটা ধাওয়া
প্রকাশ | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
চট্টগ্রাম বু্যরো
চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (সিইপিজেড) প্যাসিফিক জিন্সের দুটি পোশাক কারখানা বন্ধের ঘোষণার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। বন্ধ ঘোষণায় শ্রমিকদের একটি পক্ষ ক্ষুব্ধ, আরেকটি পক্ষ দাবি-দাওয়া বিবেচনার দাবি জানিয়েছে। এনিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১৫ থেকে ২০ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে কয়েকজনকে সিইপিজেড এলাকার বেপজা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
সোমবার সকালে সিইপিজেডের ভেতরে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, প্যাসিফিক ক্যাজুয়েলস লিমিটেড ও এনএইচটি ফ্যাশন লিমিটেডের শ্রমিকদের মধ্যে এ ধাওয়া-পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। দুই কারখানায় প্যাসিফিক গ্রম্নপের আওতাধীন। এর মধ্যে প্যাসিফিক ক্যাজুয়েলস লিমিটেড প্যাসিফিক নিট ডিভিশনের আওতাধীন। অন্যদিকে এনএইচটি ফ্যাশন লিমিটেড প্যাসিফিক জিন্স গ্রম্নপের আওতাধীন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সোমবার সকালে শ্রমিকরা কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে তাদের প্রতিষ্ঠানের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে তারা প্যাসিফিক গ্রম্নপের অন্তর্ভুক্ত অন্যান্য কারখানার শ্রমিকদের তাদের সঙ্গে আন্দোলনে সামিল হওয়ার জন্য বলেন। কিন্তু তাদের ডাকে অন্য কারখানার শ্রমিকরা সাড়া না দেওয়ায় তারা ক্ষুব্ধ হন। তারা ওই কারখানার শ্রমিকদের উদ্দেশ্য করে ইট-পাটকেল ছুঁড়েন। এতে ধাওয়া-পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানায়, মালিকপক্ষ তাদের দাবি-দাওয়া বিবেচনা করুক। কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের আরেকটি অংশ বলছে, মালিকপক্ষ গতমাসে অনেক দাবি-দাওয়া মেনে নিয়েছে। আপত্তি থাকলে গতমাসেই মীমাংসার প্রয়োজন ছিল। প্রতিমাসে আন্দোলন করলে মালিকপক্ষ তো ক্ষুব্ধ হবেই।
প্যাসিফিক ক্যাজুয়েলস ইউনিট-২ এর কাটিং সেকশনের শ্রমিক মো. সাকিব বলেন, 'আমরা কাটিং সেকশন থেকে আমাদের বাড়তি ডিউটির জন্য ওভারটাইম দেওয়ার দাবি জানিয়েছি। আমরা চাই মালিকপক্ষ রাগের মাথায় পুরো কারখানা বন্ধ না করে আমাদের দাবিগুলো ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করুক।'
কোয়ালিটি সেকশনের শ্রমিক সোবাহান বলেন, 'খানে মালিকপক্ষ গত মাসে যা বাড়ানোর তা বাড়িয়েছে। তখন যাদের আপত্তি ছিলো, তারা সেটি মীমাংসা করেনি কেন। প্রতিমাসে আন্দোলন করলে কোনো মালিকই তা মেনে নেবে না। তাই অন্য কারখানা স্টাফরা তাদের গন্ডগোল করার সুযোগ দেয়নি।'
প্যাসিফিক জিন্স গ্রম্নপের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, গত এক মাস ধরে শ্রমিকরা নাস্তা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার দাবিতে অসন্তোষ প্রকাশ করছিলেন। তবে মজুরি বা ভাতার সঙ্গে এই অসন্তোষের কোনো সম্পর্ক নেই বলে তিনি দাবি করেন।
তিনি আরও জানান, ম্যানেজমেন্ট এর আগে শ্রমিকদের বেশ কয়েকটি দাবি মেনে নিয়েছিল। কিন্তু রোববার সকালে আবারও শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করেন, যা শেষ পর্যন্ত উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করে। পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় দুপুর ২টার দিকে কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এভাবে চলতে থাকলে কর্তৃপক্ষ সব কারখানা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবে। শুধু এই দুটি ইউনিটে প্রায় ৬-৭ হাজার শ্রমিক কাজ করেন বলে জানান তিনি।