শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২ বৈশাখ ১৪৩২

ছুটির দিন দর্শনার্থী বাড়লেও জমে ওঠেনি বেচাকেনা

নতুন বই এসেছে ১০২টি
যাযাদি রিপোর্ট
  ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
ছুটির দিন দর্শনার্থী বাড়লেও জমে ওঠেনি বেচাকেনা
বইমেলার অষ্টম দিন শনিবার বিকালে পছন্দের বই দেখছেন ক্রেতা-দর্শনার্থীরা - স্টার মেইল

অমর একুশে বইমেলার অষ্টম দিন শনিবার মেলা শুরু হয় বেলা ২টায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা থাকায় মেলার সময়সূচি আগেই পরিবর্তন করেছিল আয়োজক সংস্থা বাংলা একাডেমি। তবে এদিন মেলার শুরু থেকেই বইপ্রেমিদের সমাগম বাড়তে থাকে। বিকাল গড়াতে না গড়াতেই ক্রেতা-দর্শনার্থীর মিলনমেলায় পরিণত হয় বইমেলা। বিকাল থেকেই লাইন ধরে মেলায় প্রবেশ করেন পাঠক দর্শনার্থীরা। ছুটির দিন থাকায় বাংলা একাডেমি চত্বর ও এর সামনের স্টলগুলোতে ছিল বইপ্রেমীদের ভিড়। বাংলা একাডেমি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে মেলার অষ্টম দিন শনিবার নতুন বই এসেছে

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রচুর মানুষ বইমেলায় এসেছেন এবং বই কিনেছেন। হাতে হাতে নতুন বই। এদিনও শিশুরা মা-বাবার হাত ধরে মেলায় ঘুরছেন। অনেকে আবার পরিবার-পরিজন নিয়ে এসেছিলেন বইয়ের এই উৎসবে।

মিরপুর থেকে এসেছেন আলিফ ইসলাম। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থী মেলায় এসেছেন নতুন বইয়ের ক্যাটালগ সংগ্রহ করতে। শেষের দিকে বই কিনবেন।

উত্তরা থেকে এসেছিলেন আসমত আলী। বাচ্চাদের নিয়ে ছুটির দিনে বইমেলায় ঘুরতে। কিনেছেন বেশ কিছু বই। ছুটির দিন হলেও 'শিশু প্রহর' নেই জাসতে পারেন মেলায় এসে। পরে বিকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করে মেলায় ঢুকে কয়েকটি বই কিনেছেন।

বিক্রেতারা বললেন, বিক্রি এখনো তেমন বাড়েনি। তবে শেষদিকে বিক্রি বাড়বে বলে আশা করছেন তারা।

অমর একুশে উদ্‌যাপনের অংশ হিসেবে শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে শিশু-কিশোর সংগীত প্রতিযোগিতার প্রাথমিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ক-শাখায় ৩৪ জন, খ-শাখায় ৬৬ জন এবং গ-শাখায় ৩৯ জন। সর্বমোট ১৩৯ জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করে।

বিকালে বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় 'একজন মোহাম্মদ হারুন-উর-রশিদ' শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান।

\হপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রফিক-উম-মুনীর চৌধুরী। আলোচনায় অংশ নেন করেন আবদুস সেলিম এবং মোহাম্মদ হারুন রশিদ। সভাপতিত্ব করেন খালিকুজ্জামান ইলিয়াস।

প্রাবন্ধিক বলেন, মোহাম্মদ হারুন-উর-রশিদ ছিলেন একাধারে শিক্ষক, শিক্ষাবিদ, প্রশাসক, কবি, লেখক, অনুবাদক ও সুফিবাদ চর্চাকারী। তার লেখালেখির জগৎ বিচিত্র। তিনি ভাষা-সমাজ-শিক্ষা প্রসঙ্গে জ্ঞানগর্ভ প্রবন্ধ যেমন লিখেছেন, তেমনি রচনা করেছেন সুখপাঠ্য ভ্রমণকাহিনি। অনুবাদের ক্ষেত্রেও তিনি তাঁর প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। তাঁর লেখনি ও ভাষার অন্যতম আকর্ষণীয় বিষয় হলো সহজবোধ্যতা ও রসবোধ। সময়ের পেক্ষাপটে তাঁর চিন্তাচেতনা বেশ আধুনিক ও সময়োপযোগী ছিল, যার আবেদন বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে আরও অর্থবহ হয়ে উঠেছে।

আলোচকদ্বয় বলেন, অধ্যাপক মোহাম্মদ হারুন-উর-রশিদ ছিলেন একজন সৎ, সাহসী, আপসহীন, ক্ষণজন্মা, মেধাবী ও আত্মমর্যাদাসম্পন্ন মানুষ। তিনি বাংলাদেশের সুফিবাদ ও সুফি-সাহিত্যের একজন বিশিষ্ট লেখক। অনুবাদকর্মের পাশাপাশি সংস্কৃতি ও সাহিত্য সমালোচক হিসেবেও তিনি তাঁর গভীর জ্ঞানের পরিচয় দিয়েছেন। তিনি ছিলেন সংবেদনশীল এবং বন্ধুবৎসল একজন মানুষ। ব্যক্তিজীবনে অত্যন্ত স্বাধীনচেতা মোহাম্মদ হারুন-উর-রশিদ একজন শুদ্ধ, লড়াকু এবং গভীর প্রজ্ঞাময় মানুষ হিসেবে আমাদের জন্য আদর্শ হয়ে থাকবেন।

সভাপতির বক্তব্যে খালিকুজ্জামান ইলিয়াস বলেন, অধ্যাপক মোহাম্মদ হারুন-উর-রশিদ উচ্চশিক্ষার মাধ্যম হিসেবে বাংলা প্রচলনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী বিরল প্রকৃতির একজন মানুষ।

লেখক বলছি মঞ্চে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন- কবি ও প্রাবন্ধিক মজিদ মাহমুদ এবং কবি জব্বার আল নাইম।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন- কবি ফরিদ সাইদ এবং কবি প্রদীপ মিত্র। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী কামাল মিনা এবং ফারহানা পারভীন হক তৃণা। আজ ছিল আরিফুজ্জামান চয়নের পরিচালনায় নৃত্য সংগঠন 'উদ্ভাস নৃত্যকলা একাডেমী'-এর পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী ফারাহ দিবা খান লাবণ্য, সুষ্মিতা দেবনাথ সূচি, বিজন চন্দ্র মিস্ত্রী, গার্গি ঘোষ, শার্লি মার্থা রোজারিও এবং মো. রেজওয়ানুল হক। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন চন্দন দত্ত (তবলা), শ্যামা প্রসাদ মজুমদার (কী-বোর্ড), শেখ আবু জাফর (বাঁশি), দীপঙ্কর রায় (অক্টোপ্যাড)।

আজ অমর একুশে বইমেলার নবম দিন মেলা শুরু হবে বিকেল ৩টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে 'স্মরণ : মাকিদ হায়দার' শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন চঞ্চল আশরাফ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন আসিফ হায়দার এবং সৈকত হাবিব। সভাপতিত্ব করবেন আতাহার খান।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে