যুবদল নেতা তৌহিদ হত্যায় ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশ | ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০

স্টাফ রিপোর্টার কুমিলস্না
কুমিলস্নায় বাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে তৌহিদুল ইসলাম নামের এক যুবদল নেতাকে হত্যার ঘটনায় ৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে নিহতের স্ত্রী ইয়াসমিন নাহার বাদী হয়ে কোতয়ালী মডেল থানায় এ হত্যা মামলা দায়ের করেন। বুধবার দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মককর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, 'নিহতের স্ত্রী অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা মামলা এফআইআর করেছি। ঘটনায় অভিযুক্তদের কেউই এলাকায় নেই। তাদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।' মামলার এজাহার নামীয় আসামিরা হলেন- জেলার আদর্শ সদর সদর উপজেলার পাঁচথুবি ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর (পান্ডানগর) গ্রামের সাইফুল ইসলাম, নিহত তৌহিদুলের প্রতিবেশী তানজিল উদ্দিন, নাজমুল হাসান টিটু, খাইরুল হাসান মাহফুজ, সাইদুল হাসান সবুজ ও একই উপজেলার বামইল গ্রামের সোহেল। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ২০/২৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে অভিযুক্তদের সাথে তৌহিদুলের পরিবারের জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে এলাকায় একাধিকবার সালিশ হয়। কিন্তু বিরোধ শেষ হয়নি। এ নিয়ে তৌহিদুলকে হত্যার হুমকী দেয় আসামিরা। গত বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দিবাগত মধ্য রাতে মামলায় অভিযুক্তরা পূর্ব বিরোধের জের ধরে ২০/২৫ জন সিভিল পোষাকধারী এবং সেনাবাহিনীর মতো পোষাক পরিহিত লোক বাড়িতে গিয়ে যুবদল নেতা তৌহিদ ও প্রতিবেশী লুৎফুর রহমানকে আটক করে নিয়ে যায়। পর দিন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে একই ব্যক্তিরা আবারো আহত তৌহিদ ও লুৎফুরকে নিয়ে বাড়িতে এসে ঘরে তলস্নাশী করে। এ সময় আটক লুৎফুর রহমানকে ছেড়ে দিলেও তৌহিদকে নিয়ে তারা চলে যায়। পরে তারা সংকটাপন্ন অবস্থায় তৌহিদকে গোমতী বাঁধের ঝাকুনি পাড়ায় ফেলে যায়। খবর পেয়ে কোতয়ালী থানা পুলিশ দুপুর পৌনে ১২টার দিকে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে কুমিলস্না মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মামলার বাদী ও তৌহিদুলের স্ত্রী ইয়াসমিন নাহার বলেন, ৪টি শিশু সন্তান নিয়ে আমি বিধবা হলাম। আমার স্বামী পরিকল্পিত হত্যাকান্ডের শিকার। আমরা সরকারের কাছে ন্যায় বিচার চাচ্ছি। মামলার রায় না হওয়ায় পর্যন্ত দেশের সকল মিডিয়াকে কাছে পাবো বলে আশা করছি। তৌহিদুলের বড় ভাই আবুল কালাম আজাদ বলেন, যাদের মামলায় আসামি করা হয়েছে এর বাই বাইরেও কেউ কেউ থাকতে পারেন। এখানে রাজনৈতিক কোন বিষয় আছে কিনা তাও তদন্ত করে পুলিশ বের করবে বলে আশা করি। এদিকে তৌহিদুলের মৃতু্যর ঘটনায় দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করে। তৌহিদুলের মরদেহের সুরতহালে পুলিশ তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনের চিহ্ন ছিল বলে উলেস্নখ করেছে। তিনি জেলার আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুবি ইউনিয়নের ইটালস্না গ্রামের মৃত মোখলেছুর রহমানের ছেলে। তিনি ইউনিয়ন যুবদলের আহবায়ক ছিলেন। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি চট্টগ্রামে একটি বেসরকারি শিপিং কোম্পানিতে চাকুরী করতেন। গত ২৬ জানুয়ারি বাধ্যর্কজনিত কারণে তার বাবা মারা যাওয়ার খবরে সে বাড়ি এসেছিল। মারা যাওয়ার দিন ছিল বাবার কুলখানির আয়োজন। দুই দফায় জানাজা শেষে তাকে বাবার কবরের পাশে সমাহিত করা হয়।