চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়কের নামে চাঁদাবাজির মামলা
প্রকাশ | ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
চট্টগ্রাম বু্যরো
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রবিউল হোসেন রবিসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে ১০ লাখ টাকার চাঁদাবাজির মামলা হয়েছে। এছাড়া চাঁদা না পেয়ে বাদীকে মারধর এবং হত্যার উদ্দেশ্যে আটকে রাখার অভিযোগও করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে চট্টগ্রামের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রবিউল হোসেন রবিসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে ১০ লাখ টাকার চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেন মিজানুর রহমান নামে এক যুবক।
মামলার বাদী মিজানুর রহমান চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ৭নং জিরি ইউনিয়নের মৌলবী আব্দুল নুরের বাড়ীর মো. জাফরের ছেলে। বর্তমানে তিনি নগরের চান্দগাঁও থানাধীন বাড়ইপাড়ার হাজী সাহেবের বিল্ডিংয়ের বাসিন্দা।
রবিউল হোসেন রবি (৩২), মোহাম্মদ হারুন উর রশিদ প্রকাশ কুরা হারুন (৩০), মোহাম্মদ ফারুক হোসেন (২৮), মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন (৪২), মোহাম্মদ ফরিদ (২৭), মোহাম্মদ ওয়াসিম (৩২), মোহাম্মদ ইব্রাহিম বুলু (৩৩), মোহাম্মদ ফেরদৌস (২৫), মোহাম্মদ মাহাফুজ (২৯), সিরাজুল ইসলাম (২৭), মো. সোহেল
(২৭), জিরি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলী (২৮), জিরি ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা সাদ্দাম হোসেন (৩২), সরোয়ার হায়দার (৪৯), তাজুল ইসলাম (৩৮), খোরশেদুল আলম (৪০), সাইফুল ইসলাম (৩৩), আবুল কালাম (৩১), মোহাম্মদ শফি (২৮), মোহাম্মদ হারুন (২৪), মোহাম্মদ ইমরান (২৫) ও মোহাম্মদ নুর আলম (২৩)। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ১৫ থেকে ২০জনকে আসামী করা হয়েছে।
মামলায় উলেস্নখ করা হয়, গত ২৬ জানুয়ারি সকালে মিজানুর রহমানের মোবাইলে কল দিয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন রবিউল হোসেন রবি। এ সময় বাদী টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে সেদিন রাত সাড়ে ৮টায় নগরীর বহদ্দারহাট বখতিয়ার মার্কেটের সামনে মোহাম্মদ আলীর ফলের দোকানে আসামিরা উপস্থিত হয়ে বাদীকে টেনে-হিঁছড়ে বের করে মারধর করে। পরে রবির নির্দেশে বাদীকে ফরিদারপাড়ার একটি গ্যারেজে নিয়ে আটকে রাখে। একপর্যায়ে আসামীরা বাদীকে হত্যা করে লাশ গুম করার ভয়ভীতি দেখায়। ছাত্রদলের আহ্বায়ক রবিউল হোসেন রবির নির্দেশে মামলার ২ থেকে ১২ নম্বর আসামীরা অবৈধ লাঠি, লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ী মারধার করে। আর ১৩ থেকে ২০ নম্বর আসামীরা এলোপাতাড়ি লাথি এবং চড় থাপ্পর মেরে জোরপূর্বক অবৈধভাবে ৫টি ১০০ টাকার স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন।
এছাড়া পরবর্তীতে মামলার বাদী মিজানুর রহমানের ভাই মো. আরমান তাকে উদ্ধার করতে গেলে রবিউল হোসেন রবি তাকেও হত্যার করা জন্য কিরিচ দিয়ে মাথায় আঘাত করে। বাকি আসামিরাও তাকে মারধর করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করে।
মামলার বাদী মিজানুর রহমান যায়যায়দিনকে বলেন, ছাত্রদলের আহ্বায়ক রবিউল হোসেন রবি ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দেওয়ায় রবি আমাকে ওয়েলফুডের দোকানের ভিতরে এবং বাহিরে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি ও লাথি মারে। পরে তার নির্দেশে ফরিদারপাড়ার তালতলা একটি রিক্সার গ্যারেজে নিয়ে আটক রেখে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
বিষয়টি বাদীপক্ষের আইনজীবী এস এম মিনহাজ উদ্দিন যায়যায়দিনকে বলেন, আমার বাদী একজন সহজ-সরল মানুষ। কিন্তু আসামীরা সংঘবদ্ধ প্রতারক, জুলুমবাজ, সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ প্রকৃত লোক হয়। আসামীরা দীর্ঘদিন যাবত বাদীকে চাঁদা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন প্রকার হুমকি প্রদান করে আসছে। পরে চাঁদা না পেয়ে বাদীকে মারধর করে এবং হত্যার উদ্দেশ্যে আটকে রেখে। এ ঘটনায় মামলায় দায়ের করা হয়েছে। মামলায় ২২ জনের নাম উলেস্নখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে ১৬ এপ্রিলের মধ্যে চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছেন।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রবিউল হোসেন রবির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি যায়যায়দিনকে বলেন, 'আমাকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে। আমি এই ঘটনার সাথে জড়িত নই।'