যুক্তরাজ্যে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আরো কয়েক সপ্তাহ পর দেশে ফিরতে পারেন। আপাতত তিনি বড় পুত্র তারেক রহমানের বাসায় থাকবেন। চিকিৎসকের ভাষ্য- চূড়ান্ত ফলোআপ শেষে চেয়ারপারসনের দেশে ফেরার তারিখ ঠিক করা হবে।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য লন্ডন থেকে শুক্রবার রাতে বলেন, 'খালেদা জিয়া অনেকটা ভালো আছেন। ছেলের বাসায় চিকিৎসা চলছে। কয়েকদিন পর হয়ত আবারো ফলোআপের জন্য হাসপাতালে নেওয়া হবে। চূড়ান্ত ফলোআপ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সুনির্দিষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না তিনি কবে দেশে ফিরবেন। দ্য লন্ডন ক্লিনিকে সেরা চিকিৎসা পাচ্ছেন তিনি।' খালেদা জিয়া না ফিরলেও সপ্তাহখানেকের মধ্যে তার কয়েকজন সফরসঙ্গী
চিকিৎসক দেশে ফিরবেন। বাকিরা শেষ পর্যন্ত থেকে যাবেন ম্যাডামের সঙ্গে। দেশে ফিরে তারা জুমে মেডিকেল বোর্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকবেন।
তিনি জানান, দুই পুত্রবধূ ও তিন নাতনির সঙ্গে খালেদা জিয়া আনন্দঘন সময় পার করছেন। বেশ খোশ মেজাজে আছেন তিনি। এর ফলে খালেদা জিয়ার মানসিক অবস্থা বেশ ভালো। শিগগির তিনি দেশে ফিরতে চান। তবে তার ছেলে তারেক রহমানের চাইছেন রোজার ঈদ পর্যন্ত তিনি লন্ডনে থাকুন। এখন দেখা যাক তিনি কবে দেশে ফেরেন।
এই চিকিৎসক বলেন, 'খালেদা জিয়ার চিকিৎসা প্রায় শেষ। দেশে ফেরার আগে তাকে শেষবার ফলোআপ চিকিৎসার জন্য নেওয়া হবে দ্য লন্ডন ক্লিনিকে। তার কিডনিতে যে সমস্যা ছিল তার অনেকটা উন্নতি হয়েছে। অন্য জটিলতাও কমছে। আর স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণে লিভার প্রতিস্থাপন সম্ভব হয়নি।'
টানা ১৭ দিন চিকিৎসা নিয়ে শুক্রবার রাতে দ্য লন্ডন ক্লিনিক থেকে খালেদা জিয়া সরাসরি ছেলে তারেক রহমানের বাসায় উঠেন। সম্প্রতি লন্ডন থেকে বিএনপি চেয়ারপারসনের মেডিকেল বোর্ডের প্রধান হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদার জানান, খালেদা জিয়ার শারিরীক অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি বিবেচনায় লিভার প্রতিস্থাপন সম্ভব হয়নি। এখন কিছুটা সমস্যা কিডনিতে। যদিও এতে উদ্বেগের কিছু নেই।
কবে দেশে ফিরবেন খালেদা জিয়া? জবাবে এই চিকিৎসক জানান, বলা যায় মূল চিকিৎসা শেষ। এখন ফলোআপ করতে হবে। কবে দেশে ফিরবেন এটা তার ওপর নির্ভর করছে।
দুইদিন আগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন লন্ডনে সাংবাদিকদের বলেন, খালেদা জিয়া দেশে ফেরার জন্য অত্যন্ত উদগ্রীব। উনি বলেছিলেন, চলো আমরা দ্রম্নত বাংলাদেশে ফিরে যাই। দেশই আমাদের জন্য ভালো।
জাহিদ হোসেন বলেন, খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন স্বৈরাচারের ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় কারারুদ্ধ ছিলেন। উনার বেশ কিছু পরীক্ষা আমরা করিয়েছি, যেগুলো এখানেও সম্ভব হয়নি। সেগুলো উনারা (লন্ডন ক্লিনিক) করিয়েছে। কিন্তু তার রিপোর্ট আমরা এখনো পাইনি। সেগুলো পাওয়ার পর পরই সিদ্ধান্ত হবে উনি কত দ্রম্নত বাংলাদেশে ফিরে যাবেন।
তিনি জানান, খালেদা জিয়া সার্বক্ষণিক প্রফেসর জন প্যাট্টিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রস, এই দুইজনের সার্বিক তত্বাবধানে চিকিৎসাধীন আছেন এবং মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা বাসায় নিয়মিত ফলোআপ করছেন। অর্থাৎ ইউকের যে নিয়ম, সেই নিয়ম মেনেই উনার চিকিৎসা চলছে।