জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান শুক্রবার রাজধানীর মগবাজারের আল ফালাহ মিলনায়তনে এক স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিলে বক্তব্য রাখেন -ফোকাস বাংলা
উত্তম কর্ম মানুষকে স্মরণীয় করে রাখে বলে মন্তব্য করে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, হঠকারিতা-ফ্যাসিজম দুনিয়া-আখিরাতে কারো জন্য কল্যাণকর নয়।
শুক্রবার রাজধানীর মগবাজারের আল ফালাহ মিলনায়তনে সাবেক এমপি, জামায়াতের কেন্দ্রীয় মহিলা বিভাগের সাবেক সেক্রেটারি হাফেজা আসমা খাতুনের স্মরণসভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, 'একটি সময় আপনজনকে বিদায় দিতে পারব না, বিদায় নিতে পারব না, সবার সঙ্গে দোয়াও করতে পারব না- এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি করা হয়েছিল। এমন পরিবেশ যেন আর ফিরে না আসে।'
তিনি বলেন- 'আমি দোয়া করি, সেই দুঃস্বপ্নের সময়গুলো থেকে গোটা জাতি যেন শিক্ষা নিতে পারি। একই পথে আর যেন কেউ পা না বাড়ায়।'
জামায়াত আমির বলেন, 'আলস্নাহ উত্তরাধিকার সূত্রে ও বৈবাহিক সূত্রে দু'টি ধারা সৃষ্টি করেছেন। এর বাইরে রুহানিয়াতের আরেকটি ধারা পয়দা করেছেন। তবে রক্তের ঊর্ধ্বে ঈমানের সম্পর্ক।
যারা আলস্নাহ তায়ালার ইচ্ছাকে সম্মান করবে না, তাগুত ও নফসের তাড়নায় চলবে, তাদের জেনে রাখা উচিৎ আলস্নাহ তায়ালা অত্যন্ত কঠিন।'
আসমা খাতুনের কর্মময় জীবনের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, 'হাফেজা আসমা খাতুন আন্তরিক ও নিষ্ঠাবান ছিলেন। তিনি যা বিশ্বাস করেছেন তাই বলেছেন ও করেছেন। তিনি যে যুগে সংগঠনের হাল ধরেছিলেন সে যুগে তিনিই হাল ধরার মতো ছিলেন। মাত্র ১০ জনকে নিয়ে কেন্দ্রীয় সংগঠনের কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। এখন এই সংখ্যা ৪৩ হাজার। আমার বিশ্বাস এমন কেউ নেই তাকে শ্রদ্ধা করেন না।'
\হজামায়াত আমির বলেন, 'উত্তম কর্ম মানুষকে স্মরণীয় করে রাখে। আমলদার মানুষ যখন কারো জন্য দোয়া করে। অল্প কথা বললেও সেটা হৃদয়ের ভেতরে পৌঁছে দেন আলস্নাহ। আবার চতুর মানুষ যখন অনেক পেচিয়ে গুছিয়ে কথা বলে, তখন তা আঁচর ফেলে না। তাদের আমলের আচঁর এমন যা প্রতিফলিত হতো এবং মানুষ উপকৃত হতো।
তিনি বলেন, 'তিনি একজন আদর্শ মা ছিলেন। একজন ভাগ্যবতী স্ত্রী ছিলেন- তিনি আদর্শ বোন ছিলেন এবং লাখ-লাখ মানুষের আদর্শ ছিলেন। তার পরিবারের যে যেখানে আছেন, সবাই দা'ঈ ইলালস্নাহ হিসেবে আছেন- এটা বিরল।'
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, 'আজকের কথাগুলো শুধু সংগঠনের জন্য নয়। এ কথাগুলো উপস্থিত সাংবাদিকসহ গোটা জাতির জন্য, মানব জাতির জন্য। এ রকম মানুষদের পরিবারগুলোর একেকটি জান্নাতের টুকরো।'
পরিবারটি মজলুম ছিলেন উলেস্নখ করে তিনি জানান, মারা যাওয়ার সময় তার সন্তানদের দেশে আসার সুযোগ ও পরিস্থিতি ছিল না। তারা বাবা ও মাকে দেখার সুযোগ পাননি। যিনি ধরে দ্বীন শিখিয়েছেন, মেন্টর ছিলেন- এই শহরে থেকেও পরিস্থিতির কারণে তার জানাযায় শরিক হতে পারেননি বলেও ভারাক্রান্ত হয়ে আফসোস করেন জামায়াত আমির।
মরহুমা হাফেজা আসমা খাতুনকে কোরআনের দা'ঈ হিসেবে কবুল করে তার মাগফিরাতের জন্য দোয়া কামনা করেন তিনি।
মরহুমার বড় ছেলে নিয়াজ মাখদুমের সভাপতিত্বে এবং ছোট ছেলে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সাইফুলস্নাহ মানছুরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার, ড. মামুন আল আযমী, হেমায়েত হোসেন ও ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন।