আইইইএফএ'র গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য

সংস্কারের মাধ্যমে বছরে ১২০ কোটি ডলার সাশ্রয় করতে পারে পিডিবি

প্রকাশ | ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ধাপে ধাপে বিদু্যৎ খাতের ভর্তুকির বোঝা শূন্যের কাছাকাছি নিয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে বলে মনে করছে ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিকস অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিস (আইইইএফএ)। সংস্থাটি বলছে, বিদু্যৎ খাতে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের মাধ্যমে বছরে ১২০ কোটি ডলার বা ১৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকা সাশ্রয় করতে পারে বাংলাদেশ বিদু্যৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। আইইইএফএ প্রকাশিত নতুন এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব কথা উঠে এসেছে। বুধবার বেলা ১১টায় অনলাইনে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৯-২০ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত বার্ষিক ১ দশমিক ৮ গুণ রাজস্ব বৃদ্ধির বিপরীতে পিডিবির বার্ষিক ব্যয় বেড়েছে ২ দশমিক ৬ গুণ। এর ফলে সরকারকে ১ লাখ ২৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরেই ৩৮ হাজার ২৮৯ কোটি টাকা ভর্তুকি চেয়েছে পিডিবি। ভর্তুকি কমাতে সরকারকে ধারাবাহিক পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মত দিয়েছে আইইইএফএ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিল্পে উৎপাদিত নিজস্ব বিদু্যৎ চাহিদার অর্ধেক জাতীয় গ্রিড থেকে মেটাতে হবে। নতুন করে তিন হাজার মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য বিদু্যৎ গ্রিডে যুক্ত করতে হবে। এর সঙ্গে বছরে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার পাশাপাশি বিদু্যৎ বিতরণে অপচয় ৮ শতাংশের মধ্যে রেখে এই অর্থ বাঁচাতে পারে পিডিবি। প্রতিবেদন বলছে, গত অক্টোবর পর্যন্ত বিদু্যৎ খাতে অতিরিক্ত উৎপাদনসক্ষমতা ৬১ শতাংশ। অতিরিক্ত উৎপাদনসক্ষমতার জন্যই পিডিবির ভর্তুকির বোঝা ক্রমেই ভারী হয়েছে। দফায় দফায় গ্রাহক পর্যায়ে বিদু্যতের মূল্য সমন্বয় করার পরও ভর্তুকি অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। অতিরিক্ত উৎপাদনসক্ষমতা কমাতে বিদু্যতের চাহিদার প্রাক্কলনে জ্বালানি দক্ষতা বৃদ্ধিকে বিবেচনায় নিতে হবে। গবেষণা প্রতিবেদনটির লেখক ও আইইইএফএ'র বাংলাদেশের প্রধান জ্বালানি বিশ্লেষক শফিকুল আলম বলেন, ভর্তুকির পরিমাণ শূন্যের কাছাকাছি নামিয়ে আনতে শিল্প কারখানাগুলোকে পুরোপুরি জাতীয় বিদু্যৎ গ্রিডের ওপর নির্ভরশীল করে তুলতে হবে। গ্যাসচালিত যন্ত্রপাতি থেকে ধীরে ধীরে বৈদু্যতিক যন্ত্রপাতিতে স্থানান্তরিত হওয়া উচিত। গ্যাসচালিত বয়লারের পরিবর্তে বিদু্যৎ-চালিত বয়লার ব্যবহার করতে পারে শিল্প। এতে বিদু্যৎ বিক্রি করে রাজস্ব বাড়ানোর সুযোগ পাবে পিডিবি। জ্বালানি দক্ষতা বৃদ্ধি ও শিল্প কারখানার চাহিদা গ্রিডের বিদু্যৎ দিয়ে মেটানোর পদক্ষেপকে বিবেচনায় নিয়ে বিদু্যতের চাহিদার প্রাক্কলন করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আইইইএফএ। আইইইএফএ বলছে, ২০৩০ সালে বিদু্যতের সর্বোচ্চ চাহিদা ২৫ হাজার ৮৩৪ মেগাওয়াট হতে পারে। এর মধ্যে সাড়ে ৪ হাজার মেগাওয়াটের জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক পুরানো বিদু্যৎকেন্দ্র বন্ধ করা হলেও ৩৫ হাজার ২৩৯ মেগাওয়াট বিদু্যৎ উৎপাদনসক্ষমতা থাকবে। এতে নবায়নযোগ্য বিদু্যৎসহ অতিরিক্ত সক্ষমতা ৩৬ শতাংশে নেমে আসবে। আবহাওয়ার ওপর নির্ভরশীল- এমন নবায়নযোগ্য বিদু্যৎ বাদ দিলে এটি হবে ২০ শতাংশ। ভারত ও ভিয়েতনামের মতো দেশগুলোর সঙ্গে এটি তুলনীয় হবে।