ভারতের অপতথ্য ছড়ানোয় বিএফইউজে ও ডিইউজের উদ্বেগ
প্রকাশ | ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের গণমাধ্যমের বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ইসু্য নিয়ে মনগড়া, মিথ্যা, ভিত্তিহীন অপতথ্য দিয়ে তৈরি সংবাদ প্রচার করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)।
বুধবার এক বিবৃতিতে বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন ও মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী এবং ডিইউজের সভাপতি শহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন। নেতারা ভারতের মূলধারার মিডিয়ার এমন 'হলুদ' সাংবাদিকতায় ক্ষোভ প্রকাশ করে এর তীব্র নিন্দা জানান।
সংগঠন দুটির নেতারা বলেন, ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার গণ-অভু্যত্থানে গত তিনটি বিতর্কিত, স্মরণকালের প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতার মসনদে আসীন হওয়া স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। এই অভূতপূর্ব গণ-অভু্যত্থানে আওয়ামী গোষ্ঠী ছাড়া এ দেশের ছাত্র-শ্রমিক-জনতা সবাই অংশগ্রহণ করে। তাদের একটিই লক্ষ্য- মহান মুক্তিযুদ্ধের ভূলুষ্ঠিত স্বপ্ন বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রূপান্তর করা।
তারা বলেন, 'আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, এই ইসু্যতে ভারতীয় মুলধারার গণমাধ্যমে বাংলাদেশ সম্পর্কে মনগড়া, মিথ্যা, ভিত্তিহীন অপতথ্য দিয়ে একের পর এক মিথ্যা সংবাদ তৈরি করে প্রচার করা হচ্ছে। বিশেষ করে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে ভারতের বক্তব্য ও এর প্রেক্ষিতে সে দেশের উগ্রজঙ্গিদের দ্বারা আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা ও বাংলাদেশের পতাকা ছিঁড়ে ফেলা, কলকাতা ও মুম্বাইয়ে বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশন কার্যালয়ের সামনে সেখানকার উগ্রবাদী সংগঠনগুলো যুদ্ধাংদেহী বিক্ষোভ দেখিয়েছে।
সাংবাদিক নেতারা বলেন, আমরা মনে করি, ভারতীয় মিডিয়ায় বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে অপপ্রচার ছড়ানোর কারণেই ফেনীর পরশুরামের বিলোনিয়া স্থলবন্দরে, সিলেটের দিকে আসামে ভারতীয় সীমানা থেকে বাংলাদেশকে কটাক্ষ করে বিভিন্ন উগ্র বক্তব্য ও স্স্নোগানসহ সারা ভারতেই বাংলাদেশবিরোধী ভূমিকায় নেমেছে সেখানকার উগ্রবাদীরা।
তারা বিভিন্ন ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠানের জরিপের তথ্য উলেস্নখ করে বলেন, ভারতে ভুয়া খবর এক বিপজ্জনক হুমকিতে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ নিয়েও দেশটির মূলধারার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম যাচাই-বাছাই না করেই বিভিন্ন ভুল খবর প্রকাশ করছে। ভুয়া খবর প্রকাশের তালিকায় আছে হিন্দুস্তান টাইমস, ইন্ডিয়া টুডে, টাইমস অব ইন্ডিয়া ইত্যাদির মতো প্রথমসারির সংবাদমাধ্যমও। বিশেষ করে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে ভারতের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমগুলোতে বাংলাদেশ-সংক্রান্ত ভিত্তিহীন খবর বেড়ে গেছে ব্যাপক হারে। বিজনেস ইনসাইডার ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাইক্রোসফটের এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ভুয়া খবর ছড়ায় ভারতেই। মাইক্রোসফটের জরিপ অনুযায়ী, ৬০ শতাংশেরও বেশি অনলাইনে ভুয়া খবরের মুখোমুখি হয়েছেন; যেখানে এই হারের বৈশ্বিক গড় ৫৭ শতাংশ। জরিপে অংশ নেওয়া অর্ধেকেরও বেশি ভারতীয় জানিয়েছেন, তারা ইন্টারনেট প্রতারণার শিকার হয়েছেন-যা বৈশ্বিক গড় ৫০ শতাংশের চেয়ে বেশি। অন্যদিকে ৪২ শতাংশ ভারতীয় বলেছেন, তারা ফিশিং বা স্পুফিংয়ের সম্মুখীন হয়েছেন। এই জরিপে ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ, অনলাইন বুলিং, অনাকাঙ্ক্ষিত যৌন বার্তা, মিথ্যা তথ্য ও ভুয়া খবরসহ বিভিন্ন অনলাইন ঝুঁকির বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করা হয়েছে।