রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন ফিরে পেতে জামায়াতে ইসলামীর পুনরুজ্জীবিত করা আপিলের শুনানি শুরু হয়েছে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চে মঙ্গলবার দুপুরে আংশিক শুনানির পর পরবর্তী তারিখ রাখা হয়েছে ১০ ডিসেম্বর।
রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন ফিরে পেতে জামায়াতে ইসলামীর যে আপিল আবেদন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এক বছর আগে খারিজ করে দিয়েছিল, গত ২০ অক্টোবর তা পুনরুজ্জীবিত করার আদেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত।
এর ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার মামলাটি আপিল বিভাগের দৈনিক কার্যতালিকায় আসে। জামায়াতের আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এহসান এ সিদ্দিক ও শিশির মনির।
পরে শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, 'যারা মামলা করেছিলেন তারা জনস্বার্থে তা করেছিলেন বলা হলেও তারা আসলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে মামলাটি করেছিলেন। আজকে আংশিক শুরু হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার পরবর্তী শুনানি হবে।'
জামায়াতকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে তরীকত ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, জাকের পার্টির মহাসচিব মুন্সি আবদুল লতিফ, সম্মিলিত ইসলামী জোটের প্রেসিডেন্ট মাওলানা জিয়াউল হাসানসহ ২৫ জন ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে একটি রিট আবেদন করেন।
২০১৩ সালের ১ আগস্ট বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি কাজী রেজা-উল হকের বেঞ্চ ওই রিটের রায়ে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে।
ওই রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে জামায়াতের করা আবেদন ওই বছরের ৫ আগস্ট খারিজ করে দেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হওয়ার পর ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন। তাতে এ দলটির দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করার সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে জামায়াতে ইসলামী আপিল করে। শুনানিতে জামায়াতের মূল আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় বিচারকের আপিল বেঞ্চ ওই আপিল খারিজ করে দেয়।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরিবর্তনের হাওয়ায় সেই আপিল পুনরুজ্জীবনের আবেদন করা হয় জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সহিংসতার অভিযোগে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর জামায়াতের আবেদনে সেই নিষেধাজ্ঞাও তুলে নেওয়া হয়।
এবার নির্বাচন কমিশনে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন ফিরে পেলে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অধিকারও ফিরে পাবে ২০০১-০৬ সময়ে বিএনপির সঙ্গে সরকারে থাকা দলটি।