ব্যবসায়ীর চোখ উপড়ানোয় ৫ জনের যাবজ্জীবন

প্রকাশ | ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ঢাকার ডেমরা এলাকায় রাজীবুল আলম নামে এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে দুই চোখ উপড়ে ফেলার মামলায় পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি প্রত্যেকের ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারা ভোগ করতে হবে? রোববার এ রায় ঘোষণা করেন ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শেখ ছামিদুল ইসলাম। দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- বিজয় ওরফে শামীম আহম্মেদ, দ্বীন ইসলাম, ইকবাল, নাছু ওরফে নাসির উদ্দিন ও রাজিব ওরফে মোটা রাজিব। এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় চারজনকে বেকসুর খালাস দেন আদালত। তারা হলেন- রিপন, রাশেদ, তপন ও রাসেল ওরফে রোসেল ওরফে মমিতুর রহমান। রায় ঘোষণার সময় বিচারক বলেন, 'এ ঘটনার সঙ্গে পাঁচজনের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মেলায় তাদের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। তবে তাদের সঙ্গে ধারালো অস্ত্র থাকা সত্ত্বেও রাজীবুলকে হত্যা না করায় বোঝা যায়, রাজীবুলকে হত্যা করা তাদের উদ্দেশ্য ছিল না। এ মামলার সঙ্গে রিপন, রাসেল, তপন ও রাশেদের সম্পর্ক থাকার প্রমাণ আদালত পায়নি। তাই তাদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।' রায় ঘোষণার আগে রাশেদ, রিপন ও ইকবাল আদালতে হাজিরা দিলেও রায় ঘোষণার সময় উপস্থিত ছিলেন না। মামলায় জামিনে থাকা অন্যান্য আসামিরাও অনুপস্থিত ছিলেন। আর মামলার প্রধান আসামি রুবেল ২০১০ সালের ১৬ মার্চর্ যাবের সঙ্গে ক্রসফায়ারে মারা যান। রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ভুক্তভোগী রাজীবুল বলেন, 'আমরা ন্যায় বিচার পাইনি। আমার চোখ উপড়ানোর ঘটনার সঙ্গে ১০ জন আসামি জড়িত ছিল। কিন্তু আদালত চারজনকে খালাস দিয়েছে। সমান অপরাধ করেও বাকিরা কীভাবে খালাস পায়? আমরা উচ্চ আদালতে যাব।' রায়ে অসন্তুষ্টির কথা জানিয়ে রাজীবুলের স্ত্রী মলি আক্তার বলেন, '১৬ বছর আগে আমার স্বামীর চোখ উপড়ে ফেলা হয়। সন্তানসহ কতটা কষ্ট নিয়ে আমরা জীবন-যাপন করছি। অথচ ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা খালাস পেয়ে গেল। চার্জশিটে তদন্ত কর্মকর্তা সকল আসামির সংশ্লিষ্টতা পেয়েছেন। এরপর অভিযোগপত্রেও তাদের নাম রয়েছে। এ মামলায় রায়ের বিরুদ্ধে আমরা আপিল করব।' মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ২০০৮ সালের ২৭ নভেম্বর রাত পৌনে ৯টার দিকে রিকশাযোগে ডেমরার বোর্ড মিল এলাকা থেকে বাসার উদ্দেশে রওনা হন রাজীবুল। পথে আসামিরা রিকশা আটকিয়ে রাজীবুলকে একটি ফাঁকা পস্নটে নিয়ে যায়। এরপর তার হাত-পা বেঁধে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে দুই চোখ উপড়ে ফেলে। এই ঘটনায় রাজীবুলের বাবা শাহ আলম বাদী হয়ে ডেমরা থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০০৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন পুলিশ পরিদর্শক মীর আতাহার আলী। ২০১১ সালের ১২ ডিসেম্বর ৯ আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন বিচারক। এ মামলার ২৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রোববার রায় ঘোষণা করা হলো।