ব্যবসার টাকা জোগাতে খুন করা হয় চিকিৎসককে

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ

প্রকাশ | ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
প্রবাসী চিকিৎসক হত্যার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ -সংগৃহীত
দুই সপ্তাহ আগে ঢাকার হাজারীবাগের নিজের বাসায় বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক ডা. একেএম আব্দুর রশিদ হত্যার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার খুলনার ডুমুরিয়া ও ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. নাইম খান (২২), মো. জাহিদুর রহমান রিফাত (২০) ও মো. আবু তাহের শিকদার ওরফে শাওন (২২)। শনিবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার নাইম ও রিফাত ওই বাসার সাবেক ভাড়াটিয়া, যারা রেস্তোরাঁ ব্যবসার 'মূলধন জোগাড়' এবং ভাড়া নিয়ে মালিকের সঙ্গে 'মনোমালিন্যের' জেরে চুরি করতে গিয়ে খুনের ঘটনা ঘটান। গত ১৪ নভেম্বর রাতে হাজারীবাগের একটি বাসার দ্বিতীয় তলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা প্রবেশ করলে নামাজরত আব্দুর রশিদের সঙ্গে 'ধস্তাধস্তি' হয়। এ সময় তার স্ত্রী সুফিয়া রশিদ পাশের কক্ষ থেকে এগিয়ে আসার চেষ্টা করলে তার মুখ চেপে ধরা হয়। একপর্যায়ে চাকু দিয়ে আব্দুর রশিদের বুকে একাধিকবার আঘাত করা হয়। এ সময় তার স্ত্রীর চিৎকারে দুর্বৃত্তরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে গুরুতর আহত চিকিৎসক আব্দুর রশিদকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে তিনি মারা যান। আব্দুর রশিদ ও সুফিয়া রশিদ দম্পতি পেশায় চিকিৎসক ও যুক্তরাজ্য প্রবাসী। তারা প্রতি সেপ্টেম্বরে দেশে এসে এ বাসায় কয়েকমাস থেকে চলে যেতেন। তাদের পরিবারের সবাই প্রবাসী। এ ঘটনায় ভিকটিমের চাচাতো ভাই মো. রেজাউল করিম ১৫ নভেম্বর হাজারীবাগ থানায় একটি মামলা করেন। শনিবারের সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. মাসুদ আলম বলেন, মামলার তদন্তকালে ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণে ওই বাসায় মেস হিসেবে বসবাসকারী ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহ ও প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যায় জড়িতদের শনাক্ত করা হয়। 'এর প্রেক্ষিতে খুলনার ডুমুরিয়ার শাহপুর বাজার এলাকা থেকে নাইম খান ও জাহিদুর রহমান রিফাতকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে মোহাম্মদপুর থেকে আবু তাহের শিকদার ওরফে শাওনকে গ্রেপ্তার করা হয়। নাইমের তথ্যে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাকুটিও উদ্ধার করা হয়।' গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি বলেন, নাইম ও জাহিদুর ওই বাসার একটি ফ্ল্যাটে মেস করে থাকতেন। একমাস আগেই বাসাটি ছাড়েন তারা। বকেয়া ভাড়া নিয়ে ভিকটিমের স্ত্রীর সঙ্গে তাদের মনোমালিন্যের জেরে তারা ক্ষিপ্ত ছিলেন। 'এছাড়া নাইম ও জাহিদুর রেস্তোরাঁ ব্যবসার পরিকল্পনা করে ওই বাসা থেকে টাকা-পয়সা নেওয়ার পরিকল্পনা করেন। সে অনুযায়ী তারা শাওনকে সঙ্গে নিয়ে ভিকটিমের বাসার সীমানা প্রাচীর টপকে বাসায় প্রবেশ করেন।' পুলিশ কর্মকর্তা মাসুদ আলম বলেন, 'আব্দুর রশিদ মধ্যরাতে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ার জন্য উঠলে গ্রেপ্তারদের উপস্থিতি টের পান। পরে তিনি বাধা দিতে গেলে ধস্তাধস্তি হয় ও এক পর্যায়ে ছুরিকাঘাতে নিহত হন তিনি।'