এখনো শকুনরা ছোবল মারতে চাইছে : জামায়াতের আমির

প্রকাশ | ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
শনিবার সাতক্ষীরায় জামায়াতে ইসলামীর কর্মিসম্মেলনে বক্তব্য রাখেন দলের আমির ডা. শফিকুর রহমান -স্টার মেইল
দীর্ঘ ১৭ বছর দেশ থেকে সাতক্ষীরার মানুষকে আলাদা করে রাখা হয়েছিল বলে উলেস্নখ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। শনিবার বিকালে সাতক্ষীরা সরকারি বালক বিদ্যালয় মাঠে এক কর্মিসম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। জামায়াতের আমির বলেন, বিগত সরকার সাতক্ষীরায় আমাদের অনেক নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। তারা লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ হত্যা করে ক্ষমতা দখল করেছে। জুলুম-নির্যাতন করে শত বছর ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিল। তারা এখন দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। আগামীতে সুন্দর সমৃদ্ধশালী দেশ উপহার দিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। ডা. শফিকুর রহমান বলেন, গত সরকারের নির্যাতনে দেশের মধ্যে সর্বাধিক শহীদ হয়েছেন সাতক্ষীরার মানুষ। এসব পরিবারের খোঁজ নিতে আমি সাতক্ষীরায় এসেছি। বিগত সরকারের নেতারা বলতেন, তারা ক্ষমতা থেকে চলে গেলে তাদের পাঁচ লাখ নেতাকর্মীকে হত্যা করা হবে। সেটি মিথ্যা প্রমাণ হয়েছে। আমরা ধৈর্য ধারণ করেছি। এখনো শকুনরা ওপর থেকে ছোবল মারতে চাইছে। তাদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। শকুন যেন ওপর থেকে নিচে না নামতে পারে। এর আগে সকাল ৯টায় সাতক্ষীরা পলস্নীমঙ্গল মাঠে সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের রোকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন তিনি। এ সময় কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসেন, অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ইজ্জত উলস্নাহ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, মুহাদ্দিস রবিউল বাশার, জেলা আমির উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম মুকুল, নায়েবে আমির শেখ নুরুল হুদা, সেক্রেটারি মাওলানা আজিজুর রহমানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য রাখেন। কলকাতার ঘটনায় জামায়াতের কড়া প্রতিবাদ এদিকে ভারতের কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনের সামনে সহিংস বিক্ষোভ এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ও প্রধান উপদেষ্টার কুশপুত্তলিকা পোড়ানোর ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এই প্রতিবাদ জানান। বিবৃতিতে তিনি জানান, 'ভারতের কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনের সামনে ভারতীয়দের বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ও প্রধান উপদেষ্টার কুশপুত্তলিকা পোড়ানোর ঘটনায় আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি এবং তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ভারতের 'বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণ' নামক উগ্রবাদী সংগঠনের এ ঘটনা সম্পূর্ণ অনভিপ্রেত, অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক'। বিবৃতিতে তিনি আরও জানান, 'বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণ' নামক একটি উগ্রবাদী সংগঠনের বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ও প্রধান উপদেষ্টার কুশপুত্তলিকা পোড়ানোর ঘটনা আন্তর্জাতিক আইন ও কূটনৈতিক শিষ্টাচারের পরিপন্থি। এ ঘটনা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিনষ্ট করার এক গভীর ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের অংশ বলেই কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। এমতাবস্থায় কলকাতার বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনে যথাযথ নিরাপত্তার অভাব রয়েছে। ভারত সরকারের উচিত, ভবিষ্যতে এ ধরনের অবাঞ্ছিত পরিস্থিতি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং বাংলাদেশ হাইকমিশনের নিরাপত্তা বিধান করা। তিনি বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির মূল কথা হলো 'সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রম্নতা নয়।' বাংলাদেশ সহাবস্থানের নীতিতে বিশ্বাসী একটি শান্তিপ্রিয় দেশ। বাংলাদেশও বিশ্বের সব দেশের কাছে একই নীতি আশা করে। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে, সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের এবং ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশের সব কূটনৈতিক মিশন, কূটনীতিক ও অকূটনীতিক কর্মীদের নিরাপত্তা বিধান করার জন্য আমরা ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।