কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স থেকে এবার রেকর্ড পরিমাণ প্রায় সোয়া ৮ কোটি টাকা পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, নগদ টাকার পাশাপাশি দানবাক্সে মিলেছে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার। শনিবার সন্ধ্যায় দানবাক্স থেকে পাওয়া ২৯ বস্তার টাকা গণনা শেষে এ তথ্য জানা যায়।

কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, তিন মাস ১৪ দিন পর শনিবার সকালে পাগলা মসজিদের দানবাক্সগুলো খোলা হয়। এর মধ্যে ১০টি দানবাক্স ও একটি ট্রাঙ্ক ছিল। এতে পাওয়া যায় ২৯ বস্তা টাকা। পরে মসজিদ কমপেস্নক্সের দুই তলায় নিয়ে টাকা গণনার কাজ শুরু হয়।

জেলা প্রশাসনের ১২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ১০ সেনা সদস্য, ১৭ পুলিশ সদস্য, ৯ আনসার সদস্য, মাদ্রাসার ২৮২ শিক্ষার্থী, ৩৬ শিক্ষক ও স্টাফ, রূপালী ব্যাংকের ৭৫ কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সাড়ে ৪০০ লোক টাকা গণনার কাজে অংশ নেন।

এ সময় উপস্থিতি ছিলেন কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী।

টাকা গণনা শেষে রূপালী ব্যাংক কিশোরগঞ্জ শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, 'এবার ২৯ বস্তায় মিলেছে ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা। গত ১৭ আগস্ট (৩ মাস ২৬ দিনে) পাগলা মসজিদের দানবাক্সগুলো থেকে পাওয়া যায় ৭ কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা। এর আগে ২০ এপ্রিল পাগলা মসজিদের ৯টি দানবাক্স খোলা হয়েছিল। তখন ৭ কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা পাওয়া যায়।'

মসজিদ পরিচালনা কমিটি সূত্রে জানা গেছে, মসজিদের দান থেকে পাওয়া এসব অর্থ সংশ্লিষ্ট মসজিদসহ জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানার পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় হয়। এছাড়া করোনাকালে রোগীদের সেবায় নিয়োজিত শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৮০ জন স্বেচ্ছাসেবককেও অনুদান দেওয়া হয়েছিল এই দানের টাকা থেকে।

কমিটি সূত্রে জানা গেছে, মসজিদে আন্তর্জাতিক মানের দৃষ্টিনন্দন ইসলামিক কমপেস্নক্স নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দ্রম্নতই এর কাজ শুরু হবে। যার নামকরণ হবে 'পাগলা মসজিদ ইসলামিক কমপেস্নক্স'। এটি নির্মাণে প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা। সেখানে ৬০ হাজার মুসলিস্ন একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন।