গাজীপুরের শ্রীপুরে বন বিভাগের দখল করা জমি উদ্ধার অভিযানে হামলা চালিয়েছে বনের জায়গা দখলকারীরা। হামলায় এসিল্যান্ডসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের গাড়িসহ তিনটি গাড়ি ও দুটি এক্সেভেটর ভাঙচুর করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুর ৩টার দিকে উপজেলার ইজ্জতপুর এলাকায় অভিযান চলাকালে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলাকারীদের ছোড়া ইটের আঘাতে শ্রীপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আতাহার শাকিল, ইউএনওর গাড়িচালক আ. হানিফ, স্টাফ আশিকুর রহমান, রাজেন্দ্রপুর রেঞ্জ কর্মকর্তার গাড়িচালক লিটন, এস্কেভেটর মেশিনের অপারেটর মো. রাসেল ও মো. হাকিমুলস্নাহসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হন। এ ঘটনায় দুই হামলাকারীকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
উপজেলা প্রশাসন, বন বিভাগ ও স্থানীয়দের বরাতে জানা যায়, শ্রীপুর উপজেলার ৪৯নং কাফিলতলী মৌজার বনের জমি দীর্ঘদিন ধরে জবরদখল হয়ে আসছে। গত ৫ আগস্ট গণ-অভু্যত্থানের পর শ্রীপুরে ব্যাপকহারে বনের জমি দখল হয়। গত কয়েকদিন ধরে বন বিভাগের জায়গায় গড়ে তোলা ওইসব অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে এলাকায় মাইকিং করা হয়। এতে অবৈধ দখলদাররা বন বিভাগের জায়গা থেকে স্থাপনা সরিয়ে নিয়ে যায়নি।
মঙ্গলবার গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার রাজাবাড়ী ইউনিয়নের ইজ্জতপুর এলাকায় সকাল থেকে যৌথবাহিনী বাংলাদেশ সেনাবাহিনী,র্ যাব, পুলিশ, আনসার, বনকর্মী ও উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে বন বিভাগ। অভিযানে ওই এলাকার কয়েক একর বনভূমি উদ্ধার ও বনের জায়গায় গড়ে তোলা শতাধিক স্থাপনা এস্কেভেটর মেশিনের (ভেকু) সাহায্যে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। দুপুর ৩টায় অভিযান শেষে ফেরার পথে হঠাৎই স্থানীয় বনের জায়গা দখলকারীরা একত্রিত হয়ে উপজেলা প্রশাসনের ওপর হামলা চালায়।
ঢাকা বন বিভাগের সরকারি বন সংরক্ষণ (এসিএফ) মো. শামসুল আরেফিন জানান, বন আইনের ৬৬ ধারায় কাফিলাতলী গ্রাম এবং ইজ্জতপুর বাজারে বন বিভাগের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে যৌথবাহিনীর অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযান শেষে ফেরার পথে বনের জায়গা জবরদখলকারীরা পেছন থেকে হামলা চালায়। হামলাকারীরা তিনটি গাড়ি, দুটি এক্সেভেটর ভাঙচুর করে। হামলায় আহত হন অন্তত দশজন।
শ্রীপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) আতাহার শাকিল বলেন, 'অভিযান প্রায় শেষের দিকে একটি জমির মালিকানা নিয়ে রেল ও বন বিভাগের সম্পৃক্ত নিয়ে স্থানীয়রা অভিযোগ জানায়। এ সময় ওই জমির অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ বন্ধ করে ফেলার পথে অতর্কিতভাবে ওই জায়গার দোকান ও বসতঘরের মালিকরা পাশেই রেললাইন থেকে পাথর ও ইট নিয়ে হামলা শুরু করে। এ সময় ইউএনও স্যারের গাড়ি ও আমার গাড়িতে ঢিল ছোড়া শুরু করে। এস্কেভেটর মেশিনের দুই চালককে মারাত্মকভাবে আহত করেছে। আমার ওপর ও ইউএনও অফিসের দুইজন স্টাফের ওপর হামলা করেছে। হয়তো ওনাদের কেউ ইন্ধন দিয়ে এমন কাজ করিয়েছে।'
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ব্যারিস্টার সজিব আহমেদ বলেন, 'হামলায় সম্পৃক্ত কয়েকজনের নাম আমরা পেয়েছি। এদের মধ্যে সিরাজুল, তার ছেলে মাসুদ, তার বোন ও স্ত্রী, মেয়ে শারমিন। বাকিদেরও পরিচয় শনাক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে বন বিভাগ তার বন আইনে মামলা করবে, আমরাও মামলা করবো।'