বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, স্বৈরাচার থেকে গণতন্ত্রের পথে যেতে প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো দ্রম্নত করে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।
রোববার রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক সভাপতি মহিদুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি একথা বলেন। মহিদুর রহমান দীর্ঘ ১৭ বছর পর গত ১৬ নভেম্বর সকালে যুক্তরাজ্য থেকে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।
নির্বাচন কমিশন গঠন করায় অন্তর্বর্তী সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে মঈন খান বলেন, স্বৈরাচার থেকে গণতন্ত্রের পথে আসতে নির্বাচন দরকার। অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রম্নত প্রয়োজনীয় সংস্কার করে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।
এসময় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনসহ বিএনপি অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন দেওয়া সম্ভব : মেজর হাফিজ
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আগামী ছয় মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন দেবে-এমনটাই প্রত্যাশা করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে এসময়ের মধ্যে নির্বাচন দেওয়া সম্ভব।
রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বরিশাল বিভাগ সমিতির উদ্যোগে 'মুক্তিযুদ্ধের ৯ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার, বাংলাদেশের প্রথম রাজবন্দি, বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) এম এ জলিলের ৩৫তম মৃতু্যবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলে তিনি এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
বরিশাল বিভাগ সমিতির সভাপতি যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ইকবাল হোসেন ফোরকানের সভাপতিত্বে এতে অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মজিবর রহমান সরোয়ার ও সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এদিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবে 'নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ন্যাব)' উদ্যোগে আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, অনেকে বলে বিএনপি তাড়াতাড়ি ভোট চায়। বিএনপি তো সবসময় গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে ছিল এবং আছে। সাধারণ মানুষের মনের কথা বুঝে। সাধারণ মানুষ অধীর আগ্রহে বসে আছে, কখন তারা নিজের অধিকার প্রয়োগ করবে। সেজন্য বিএনপি বলছে, যত দ্রম্নত সময়ের মধ্যে সম্ভব নির্বাচন দিতে হবে। নির্বাচন যত দ্রম্নত দেওয়া হবে, তত দ্রম্নত বিশৃঙ্খলা দূর হবে। দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। আজকের বাস্তবতায় সেটি (নির্বাচন) হচ্ছে সবচেয়ে বড় প্রয়োজনীয়তা।
তিনি বলেন, জনগণের প্রকৃত মালিকানা ফেরত দিতে হবে। গণতন্ত্রকে তার সঠিক জায়গায় রাখতে হবে। অর্থাৎ, মানুষ চিন্তা করবে তারা ভোট কাকে দেবে। দেশ শাসন কে করবে সেটা জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে। সংস্কার অবশ্যই হবে। সংস্কার করতে হলে জনআকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে হবে। জনআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হচ্ছে সংবিধান। সবকিছু আপনি-আমি করে ফেললে হবে না। মানুষ কী চায় এবং তাদের মতামতের সুযোগ হচ্ছে ভোট।
ড. জাহিদ বলেন, আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ২০১৭ সালে কর্মসূচি দিয়েছিলেন 'ভিশন ২০৩০'। এরপরে আমাদের নেতা তারেক রহমান ২০২২ সালের ডিসেম্বরে রাষ্ট্র মেরামতের ২৭ দফা কর্মসূচি দিয়েছেন। আর ২৩ সালের জুলাই মাসে সব গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দলকে নিয়ে ২৭ দফাকে ৩১ দফা করে সংস্কার কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন। বিএনপি শুধু নিজের কথা বলে তা নয়। বিএনপি রাষ্ট্রের কথা বলে, আগামী দিনের কথা বলে।
নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ন্যাব) সভাপতি জাহানারা খাতুনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলামসহ সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন।
প্রেস ক্লাবের সামেন পৃথক কর্মসূচিতে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, 'যত দ্রম্নত সম্ভব নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। আপনারা (অন্তর্বর্তী সরকার) সংস্কার করুন। তবে এমন সংস্কার করবেন না, যাতে নির্বাচনের দেরি হয়ে যায়।'
নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'দেশের জনগণ নিজেদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবেন, পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন, এমন নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। দেরি করলেই ষড়যন্ত্র শুরু হবে।'