বঙ্গবন্ধুর নামে প্রতিষ্ঠানে অনুদানে 'কর রেয়াত' সুবিধা বাতিলের উদ্যোগ

প্রকাশ | ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সংক্রান্ত জাতীয় দিবস বাতিল ও রাষ্ট্রপতির বাসভবন বঙ্গভবনের দরবার হল থেকে ছবি নামিয়ে ফেলার পর এবার তার নামে হওয়া জাতীয় প্রতিষ্ঠানে অনুদানের বিপরীতে আয়কর রেয়াত পাওয়ার বিধান বাতিল হচ্ছে। প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের রাষ্ট্রপতির প্রতি অন্তর্র্বর্তী সরকারের মনোভাবের পর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর এই সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন এনবিআরের আয়কর শাখার এক শীর্ষ কর্মকর্তা। এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান এখন দেশের বাইরে অবস্থান করছে। তিনি এলে প্রজ্ঞাপন জারি হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। প্রবল আন্দোলনে ক্ষমতাচু্যত শেখ হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে বঙ্গবন্ধুর নামে জাতীয় পর্যায়ের অনেক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছিল। এসব প্রতিষ্ঠানে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতারা দান বা অনুদান করলে আয়কর রেয়াত পেতেন। ২০২৩ সালের আয়কর আইন অনুযায়ী, মোট ১৫টি খাতে বিনিয়োগ ও দান করলে একজন করদাতা আয়কর রেয়াত বা তার প্রযোজ্য কর থেকে কম দেওয়ার সুযোগ পেয়ে থাকেন। এতে বলা হয়েছে, 'জাতির পিতার স্মরণে প্রতিষ্ঠিত কোনো জাতীয় পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানে কোনো করদাতা কর্তৃক অনুদান হিসেবে প্রদত্ত যে কোনো পরিমাণের অর্থ রেয়াতি সুবিধা পাবেন।' এনবিআরের সেই কর্মকর্তা বলেন, "এনবিআর মনে করছে এটা (আয়কর রেয়াতের বিধান) 'প্রাসঙ্গিকতা' হারিয়েছে। তাই এই আইন বাতিলের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।" এই বিধানে বঙ্গবন্ধুকে 'জাতির পিতা' হিসেবে উলেস্নখ রয়েছে; তবে গত ১৬ অক্টোবর তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের বলেছেন, অন্তর্র্বর্তী সরকার তাকে 'জাতির পিতা' মনে করে না। সেদিন তিনি বলেন, ''আওয়ামী লীগ দল হিসেবে ফ্যাসিস্টভাবে ক্ষমতায় ছিল। মানুষের ভোটাধিকার হরণ ও গুম-খুন করে এবং 'গণহত্যা' করে তারা ক্ষমতায় ছিল। কাজেই তারা কাকে জাতির পিতা বলল, তারা কোন দিবসকে জাতীয় দিবস ঘোষণা করল, নতুন বাংলাদেশে সেটার ধারাবাহিকতা থাকবে না।" একই দিন অন্তর্র্বর্তী সরকার ঐতিহাসিক ৭ মার্চ ও ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসসহ আটটি জাতীয় দিবস বাতিল করে পরিপত্র করে। বাতিল হয়েছে ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্ম দিবস ও জাতীয় শিশু দিবস, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার ভাই শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী, ৮ আগস্ট শেখ হাসিনার মা বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী, ১৮ অক্টোবর শেখ হাসিনার ছোটভাই শেখ রাসেল দিবস ও ৪ নভেম্বর জাতীয় সংবিধান দিবস এবং ১২ ডিসেম্বর স্মার্ট বাংলাদেশ দিবসও। এরপর ১১ নভেম্বর রাষ্ট্রপতির বাসভবন বঙ্গভবনের দরবার হল থেকে বঙ্গবন্ধুর ছবি নামিয়ে ফেলার কথা জানান উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। আগের দিন এই ছবিকে পেছনে রেখেই তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন।