বছরখানেক আগে ঢাকার ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খতনা করার সময় শিশু আয়ান আহমেদের মৃতু্যর ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটিকে আগামী ১২ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেছে হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ বি এম শাহজাহান আকন্দ মাসুম।
তিনি বলেন, শিশু আয়ানের মৃতু্যর ঘটনা তদন্ত করে প্রথমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর একটি প্রতিবেদন দেয়, যেটি হাইকোর্ট গ্রহণ না করে পুনরায় একটি কমিটি গঠন করে দেন গত ফেব্রম্নয়ারি মাসে। এই কমিটিতে দেশের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও বিজ্ঞানীরা রয়েছেন।
আইনজীবী আকন্দ মাসুম বলেন, 'তাদের এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল; কিন্তু আজ পর্যন্ত এ নয় মাসেও প্রতিবেদন দেননি তারা। বিষয়টি আমরা আদালতের নজরে আনি।
'এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষকে প্রশ্ন করা হলে তারা জানান, তারা তদন্ত কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এখনো প্রতিবেদন জমা দেননি। শুনানি শেষে আদালত আগামী ১২ জানুয়ারির মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।'
পাঁচ বছর বয়সি আয়ানকে খতনা করানোর জন্য গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার সাঁতারকুল এলাকার ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালে নিয়ে গিয়েছিল তার পরিবার। অ্যানেসথেসিয়া দেওয়ার পর তার আর জ্ঞান ফেরেনি।
পরে তাকে গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। গত ৭ জানুয়ারি সেখানেই মৃতু্য হয় শিশুটির।
আয়ানের বাবা শামীম আহামেদ পরে বাড্ডা থানায় মামলা করেন। ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অ্যানেসথেসিওলজিস্ট সাইদ সাব্বির আহমেদ, সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক তাসনুভা মাহজাবিন, অজ্ঞাতনামা পরিচালকসহ কয়েকজনকে আসামি করা হয় সেখানে।
আয়ানের মৃতু্যর ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন যুক্ত করে গত ৯ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ বি এম শাহজাহান আকন্দ মাসুম।
আয়ানের মৃতু্যর জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দায়ী করে ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয় সেখানে। পাশাপাশি হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল এবং নতুন রোগী ভর্তি না করার নির্দেশনা চেয়ে একটি সম্পূরক আবেদন করে রিট আবেদনকারী পক্ষ।
এ রিট মামলায় পরে শিশু আয়ানের বাবা পক্ষভুক্ত হন এবং পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের দাবি জানান।
স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে এ মামলায়।