সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

অক্টোবরে ৪০৫ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩৭৭

যাযাদি ডেস্ক
  ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
মুখোমুখি সংঘর্ষে দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া ট্রাক -ফাইল ছবি

অক্টোবর মাসে সারাদেশে ৪০৫টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় ৩৭৭ জন মারা গেছেন, আহত হয়েছেন ৪১৫ জন।

বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান মো. ইয়াসীন স্বাক্ষরিত সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়। বিআরটিএ'র বিভাগীয় অফিসের মাধ্যমে সারা দেশের সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান সংগ্রহ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, ঢাকা বিভাগে ১১৫টি দুর্ঘটনায় ১১৪ জন নিহত এবং ১৪২ জন আহত হয়েছেন; চট্টগ্রাম বিভাগে ৬১টি দুর্ঘটনায় ৪৯ জন নিহত এবং ৮৬ জন আহত হয়েছেন; রাজশাহী বিভাগে ৪৫টি দুর্ঘটনায় ৪৭ জন নিহত এবং ২২ জন আহত হয়েছেন; খুলনা বিভাগে ৪০টি দুর্ঘটনায় ৩৪ জন নিহত এবং ৩৮ জন আহত হয়েছেন; বরিশাল বিভাগে ২৯টি দুর্ঘটনায় ২২ জন নিহত এবং ৩৪ জন আহত হয়েছেন; সিলেট বিভাগে ২৪টি দুর্ঘটনায় ২৩ জন নিহত এবং ২৭ জন আহত হয়েছেন; রংপুর বিভাগে ৫৪টি দুর্ঘটনায় ৫৩ জন নিহত এবং ৩৪ জন আহত হয়েছেন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৩৭টি দুর্ঘটনায় ৩৫ জন নিহত এবং ৩২ জন আহত হয়েছেন।

সর্বমোট ৬৩০টি গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। এর মধ্যে মোটরকার/জিপ ১৬টি, বাস/মিনিবাস ১০১টি, ট্রাক/কাভার্ডভ্যান ১৩১টি, পিকআপ ২৯টি, মাইক্রোবাস ১০টি, অ্যাম্বুলেন্স ৩টি, মোটরসাইকেল ১৩৬টি, ভ্যান ১৮টি, ট্রাক্টর ৫টি, ইজিবাইক ২১টি, ব্যাটারিচালিত রিকশা ১৬টি, অটোরিকশা ৩৩টি এবং অন্যান্য যানবাহন ছিল ১১১টি।

মোটরকার বা জিপ দুর্ঘটনায় ৯ জন, বাস/মিনিবাস দুর্ঘটনায় ৪২ জন, ট্রাক/কাভার্ডভ্যান দুর্ঘটনায় ৮২ জন, পিকআপ দুর্ঘটনায় ১২ জন, মাইক্রোবাস দুর্ঘটনায় ২ জন, মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় ১১০ জন, ভ্যান দুর্ঘটনায় ১২ জন, ট্রাক্টর দুর্ঘটনায় একজন, ইজিবাইক দুর্ঘটনায় ১৪ জন, ব্যাটারিচালিত রিকশা দুর্ঘটনায় ১৮ জন, অটোরিকশা দুর্ঘটনায় ৩৪ জন ও অন্যান্য যানের দুর্ঘটনায় ৭৯ জন নিহত হয়েছেন।

এর আগে গত ১০ নভেম্বর রোড সেফটি ফাউন্ডেশন এক প্রতিবেদনে জানায়, গত অক্টোবর মাসে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪৪৩টি, নিহত হয়েছে ৪৬৯ জন এবং আহত হয়েছে ৮৩৭ জন। নিহতের মধ্যে নারী ৭৪, শিশু ৬৬। ২০৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ১৯৬ জন, যা মোট নিহতের ৪১ দশমিক ৭৯ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৪৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ১০২ জন পথচারী নিহত হয়েছে, যা মোট নিহতের ২১ দশমিক ৭৪ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছে ৬৭ জন, অর্থাৎ ১৪ দশমিক ২৮ শতাংশ। এ সময় চারটি নৌ-দুর্ঘটনায় সাতজন নিহত, তিনজন আহত হয়েছে। ২১টি রেল ট্র্যাক দুর্ঘটনায় ১৮ জন নিহত এবং ছয়জন আহত হয়।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে ওই প্রতিবেদনটি তৈরি করেছিল।

প্রতিবেদনে দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ১৯৬ জন (৪১.৭৯%), বাসের যাত্রী ৩১ জন (৬.৬০%), ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান-পিকআপ-ট্রলি-লরি আরোহী ২০ জন (৪.২৬%), প্রাইভেট কার-মাইক্রোবাস-অ্যাম্বুলেন্স আরোহী ১২ জন (২.৫৫%), থ্রি-হুইলার যাত্রী (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-টমটম) ৯৪ জন (২০.০৪%), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-করিমন-ভটভটি-আলমসাধু-ধান মাড়াই গাড়ি-পাওয়ার টিলার) ১০ জন (২.১৩%) এবং বাইসাইকেল-রিকশা আরোহী চারজন (০.৮৫%) নিহত হয়।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৭৩টি (৩৯.০৫%) জাতীয় মহাসড়কে, ১৬২টি (৩৬.৫৬%) আঞ্চলিক সড়কে, ৬৪টি (১৪.৪৪%) গ্রামীণ সড়কে এবং ৩৮টি (৮.৫৭%) শহরের সড়কে এবং ছয়টি (১.৩৫%) অন্যান্য স্থানে সংঘটিত হয়েছে।

দুর্ঘটনাগুলোর ১১২টি (২৫.২৮%) মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৭১টি (৩৮.৬০%) নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণে, ১০৪টি (২৩.৪৭%) পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেওয়া, ৪২টি (৯.৪৮%) যানবাহনের পেছনে আঘাতের ফলে এবং ১৪টি (৩.১৬%) অন্য কারণে ঘটেছে।

দুর্ঘটনায় সংশ্লিষ্ট যানবাহনের মধ্যে ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি-লরি-ড্রামট্রাক-আঠারো চাকার লরি ২৫.৪৮%, মাইক্রোবাস-প্রাইভেট কার-অ্যাম্বুলেন্স-জিপ ৪.৩৯%, যাত্রীবাহী বাস ১৪.৪৮%, মোটরসাইকেল ২৮.০৭%, থ্রি-হুইলার (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-টমটম) ১৭.৫৯%, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন (নসিমন-করিমন-ভটভটি-আলমসাধু-মাহিন্দ্র-হ্যালোবাইক-ধান মাড়াই গাড়ি-পাওয়ার টিলার) ৫.৪৩%, বাইসাইকেল-রিকশা ১.৮১% এবং অশনাক্তকৃত যানবাহন ২.৭১%।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে