চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
গাজীপুর শিল্পাঞ্চল
প্রকাশ | ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
গাজীপুর প্রতিনিধি
জেলার কাশিমপুর থানার সারাবো এলাকায় বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের একটি কারখানার শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের দাবিতে চক্রবর্তী এলাকায় চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। শ্রমিকরা বলছেন, বকেয়া বেতনের আশ্বাস না পেলে তারা মহাসড়ক ছাড়বেন না। অন্যদিকে, শিল্প পুলিশ শ্রমিকদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাতে দেখা যায়। এদিকে, মহাসড়ক অবরোধের কারণে সড়কের দুই পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। একে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় যাত্রীদের।
অন্যদিকে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধের পর শনিবার খুলে দেওয়া হয়েছে শিল্পাঞ্চল গাজীপুরের টিএনজেড অ্যাপারেলস কারখানাটি। ২৩ দিন পর এদিন সকালে শ্রমিকরা উৎসাহ নিয়ে কাজে যোগ দেন। এই কারখানায় এখন শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে।
পুলিশ জানায়, শনিবার সকাল ৬টার দিকে মহানগরের কাশিমপুর থানার সারাবো এলাকায় বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের আরএমজি কারখানার শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। শিল্প পুলিশ গিয়ে তাদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। কিন্তু শ্রমিকদের দাবি, বকেয়া বেতন প্রদানের আশ্বাস না পেলে তারা মহাসড়ক ছেড়ে যাবেন না।
কাশিমপুর থানার ওসি মো. সাইফুল ইসলাম জানান, শনিবার সকাল পৌনে ৬টার দিকে চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়কে অবরোধ তৈরি করে বিক্ষোভ করেন। এতে এই রুট ব্যবহারকারী যাত্রী ও চালকরা ভোগান্তিতে পড়েন। সড়কের উভয়পাশে তৈরি হয় যানজট। বিকাল সাড়ে ৪টায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শ্রমিকদের অবরোধ কর্মসূচি চলমান ছিল।
অন্যদিকে, গাজীপুর শিল্পপুলিশ সূত্রে জানা যায়, বেতন-ভাতা নিয়ে শ্রমিক অসন্তোষের কারণে বন্ধ থাকা গাজীপুর মহানগরীর মোগরখাল এলাকার টিএনজেড অ্যাপারেলস কারখানাটি ২৩ দিন পর শনিবার খুলে দেওয়া হয়। শ্রম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, মালিকপক্ষ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করেন।
কারখানা কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকরা জানান, গাজীপুর মহানগরীর মোগরখাল এলাকার টিএনজেড অ্যাপারেলস লিমিটেড গ্রম্নপের ৫টি কারখানা রয়েছে। এসব কারখানার শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের দাবিতে কয়েক দফা শ্রমিক আন্দোলন এবং ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন।
সর্বশেষ বেতনের দাবিতে গত শনিবার সকাল ৯টা থেকে গত সোমবার রাত ১০টা পর্যন্ত টানা তিন দিন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ
করে রাখেন। এ নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মালিক ও শ্রমিকপক্ষের দফায় দফায় বৈঠক হয়। পরে মালিকপক্ষ বৃহস্পতিবার বেতন পরিশোধের পর শনিবার থেকে কারখানা খোলার ঘোষণা দেন। নির্দেশনা অনুযায়ী শ্রমিকরা শনিবার সকালে কাজে যোগ দেন।
কারখানার শ্রমিক শরিফা বেগম বলেন, 'এখন আমাদের মধ্যে কোনো অসন্তোষ নেই, আমরা সবাই আন্তরিকতার সঙ্গে কাজে যোগ দিয়েছি। আজকে কাজে ফিরে যেন সবার মধ্যে ঈদের আনন্দ বিরাজ করছে।'
কারখানায় কাজের পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য তিনি কারখানার মালিকসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান।
কারখানার এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মো. মাকসুদুল রহমান চৌধুরী জানান, বকেয়া বেতন নিয়ে শ্রমিক অসন্তোষ হলেও মালিক বকেয়া বেতন পরিশোধ করেছেন। ফলে শনিবার থেকে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন। এখন কারখানার মধ্যে আর কোনো গোলযোগ নেই। শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই শ্রমিকরা অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে প্রফুলস্নচিত্তে কাজ করে যাচ্ছেন।'
এই পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সহায়তার জন্য তিনি শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্থানীয় প্রশাসন, বিজিবি, পুলিশ, সাংবাদিকসহ সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
বাসন থানার ওসি মো. রাহেদুল ইসলাম জানান, কারখানার পোশাক শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন। কারখানাগুলোতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে, এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা নেই।