অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ভোটের ম্যান্ডেট ফিরিয়ে দিতে হবে :মঈন খান
প্রকাশ | ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সব বাধা পাশ কাটিয়ে জনগণের ভোটের ম্যান্ডেট ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান।
বুধবার রাজধানীর মোমেনবাগে দি মিলেনিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেমোক্রেসি অডিটরিয়ামে এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান। 'ছাত্র-জনতার বিপস্নবের ১০০ দিন' শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়টি। সভাপতিত্ব করেন দি মিলেনিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট রোখসানা খন্দকার।
অন্তর্বর্তী সরকারের কাজের বৈধতার জন্য নতুন আইন তৈরি প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, 'এই সরকার একটি আইন করতে যাচ্ছে। আমার কাছে মনে হয় এটি একটি ইনডেমনিটি অ্যাক্ট। ১০০ দিন পর এসে কেন অন্তর্বর্তী সরকারকে এই আইন পাস করতে হচ্ছে? সরকারের মনে কেন ভয় ঢুকল, কেন ইনডেমনিটি আইন করতে হবে? এ আইন নিয়ে আমি শঙ্কিত। এই সরকার জনগণের আকুণ্ঠ সমর্থন নিয়েই তারা ক্ষমতায় আছে। এখানে আইনের প্রশ্ন বাধ্যবাধকতা মাত্র।'
আব্দুল মঈন খান আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০দিন ও ছাত্র-জনতার বিপস্নবের ১০০ দিন সম্পূর্ণ ভিন্ন। ৫ আগস্ট বাংলাদেশে একটি অভূর্তপূব বিপস্নব সংঘটিত হয়েছে। গত ৫ আগস্ট গণভবন দখল করে বাংলাদেশের মানুষ তার অধিকার পুনরায় ফিরিয়ে নিয়ে এসেছে। ৫ আগস্ট ছিল সত্যিকারের জনগণের বিপস্নব।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, রাজনীতিকে আগে পুনরুদ্ধার করতে হবে। ফ্যাসিস্ট থেকে গণতন্ত্র তৈরি করতে যা যা করা প্রয়োজন তা করা দরকার। সব সংস্কারই অন্তর্বর্তী সরকার করতে হবে কেন, অধিকাংশ সংস্কার করবে নির্বাচিত সরকার।
সর্বশেষ তিন উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়া ছেলে খেলার মতো মন্তব্য করে তিনি বলেন, দেশ ফ্যাসিবাদ থেকে গণতন্ত্রে রূপান্তর করতে হলে ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। তাই যত দ্রম্নত সম্ভব গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করা উচিত।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোই ছাত্রদের ভূমিকা স্বীকৃতি দিয়েছে। বর্তমান সরকার আমাদের সরকার, এর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কিছু নাই। এ সরকার আমাদের প্রতিপক্ষ না। নির্দিষ্ট সংস্কার শেষে অন্তর্বর্তী সরকার বিদায় নেবে। এমন আশা ব্যক্ত বরে সাকি বলেন, দেশ ফ্যাসিবাদ থেকে গণতন্ত্রে রূপান্তর করতে হলে ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।
গোলটেবিল বৈঠকে আরও বক্তব্য দেন, গণঅধিকার পরিষদ সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, গণফোরামের কো- চেয়ারম্যান অ্যাডভোটে সুব্রত চৌধুরী, প্রফেসর রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর, শামসুল আলম লিটন, শাখাওয়াত হোসেন সায়ন্ত প্রমুখ।
এমন সংস্কার হাতে নেবেন না যেটা জনপ্রতিনিধিরা করবেন : ফারুক
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, এমন পথে আপনারা এগোবেন না যেটার কারণে জনগণ আপনাদের আবার প্রত্যাখ্যান করে দেয়। এমন সংস্কার হাতে নেবেন না যেটা জনপ্রতিনিধিরা করবেন।
বুধবার দুপুরে নয়াপল্টনের ভাসানী ভবনে ঢাকা মহানগর উত্তর ওলামা দল আয়োজিত পরিচিতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সরকারের উদ্দেশে ফারুক বলেন, 'এমন সংস্কার হাতে নেবেন না যেটা জনপ্রতিনিধিরা করবেন। আমরা নির্বাচন চাই, নির্বাচনের দিনক্ষণ চাই, নির্বাচনের প্রস্তুতি চাই, নির্বাচন কমিশন গঠন চাই, সংস্কারও চাই। কিন্তু বিতর্কিত ব্যক্তিদের কবলে পড়ে আবার যেন নির্বাচন বিলম্বিত না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।'
অনুষ্ঠানে বিএনপির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল, সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক এটিএম আব্দুল বারী ড্যানী, বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য নেসারুল হক, ওলামা দলের আহ্বায়ক মোহাম্মদ সেলিম, সদস্যসচিব মো. আবুল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
স্বার্থপরের মতো পালিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা :রিজভী
ছাত্র-জনতার অভু্যত্থানে শেখ হাসিনা সঙ্গী-সাথী ফেলে স্বার্থপরের মতো পালিয়ে গেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বুধবার রাজধানীর বনানীতে এক চক্ষুসেবা ক্যাম্পের উদ্বোধনকালে তিনি একথা বলেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও 'আমরা বিএনপি পরিবার' এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের নির্দেশনায় জুলাই গণআন্দোলনে চক্ষু হারানো, চক্ষু ক্ষতিগ্রস্ত এবং নিম্নবিত্ত মানুষের চক্ষু সেবার উদ্দেশ্যে প্রখ্যাত চক্ষু বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে বিনামূল্যে এই চক্ষুসেবা ক্যাম্পের আয়োজন করে 'আমরা বিএনপি পরিবার।'
রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা শুধু নিজের ক্ষমতাকে ধরে রাখার জন্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব পার্শ্ববর্তী দেশের কাছে জিম্মি করে দিয়েছিলেন। এখন জনগণের একটাই দাবি, শেখ হাসিনা ২০০৯ সাল থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত যত চুক্তি করেছে, সেই চুক্তিগুলো অন্তর্বর্তী সরকার প্রকাশ করুন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ রশিদুজ্জামান মিলস্নাত, সহবিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, 'আমরা বিএনপি পরিবার'- এর আহ্বায়ক সিনিয়র সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমন, সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন প্রমুখ।