শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১

ঢাকায় সবজির দাম কমছে পেঁয়াজের কেজি ১৬০

যাযাদি রিপোর্ট
  ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
বাজারে এসেছে শীতের সবজি -ফোকাস বাংলা

ঢাকার বাজারগুলোতে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে দেড়শ' টাকা ছাড়িয়ে গেছে। দাম আরও বাড়বে এমন আশঙ্কার কথা বলছেন বিক্রেতারা।

বন্যার কারণ দেখিয়ে দুই ধাপে বেড়ে যাওয়া চালের দরও কমেনি। তবে সবজির দর কিছুটা কমেছে, যদিও ক্রেতারা বলছেন, শীতের আগাম সবজির দাম গত বছরের এ সময়ের তুলনায় দাম বেশি। শুক্রবার বিকালে কারওয়ান বাজার, তেঁজগাওয়ের তেজকুনিপাড়া বাজার ও বিজয়সরণির কলমিলতা কাঁচা বাজার ঘুরে মূল্য বৃদ্ধির এসব তথ্য পাওয়া যায়।

বেড়েই চলছে পেঁয়াজের দর

বছরের শেষের দিকে কৃষকের ঘরে পেঁয়াজ না থাকায় দুই থেকে তিন সপ্তাহ ধরে দাম বাড়া শুরু হয়েছে, যা এখনো বাড়ছে। সপ্তাহখানেক আগে খুচরা বাজারে প্রতিকেজি পাবনার পেঁয়াজ ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা বিক্রি হলেও। এখন বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা কেজি দরে। আর আমদানি করা পেঁয়াজ ক্রেতাদের কিনতে হচ্ছে ১২০ টাকা বা তার আশপাশে।

তেজকুনিপাড়ায় মুদি দোকানি মো. খোরশেদ আলম বলেন, 'পেঁয়াজের দাম আরও বাড়ছে। এখন পেঁয়াজের বেশ সংকট শুনতেছি।'

খোরশেদের দোকানে পেঁয়াজ কিনতে এসে রোকসানা খানম বললেন, 'যেভাবে বাড়তেছে, এর মানে ২০০ টাকা হতে এক সপ্তাহও টাইম লাগবে না।'

কলমিলতা কাঁচা বাজারের বিক্রেতা মো. রায়হানের পেঁয়াজ ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। তিনি কারওয়ান বাজার থেকে ১৫০ টাকা করে কিনেছেন বলে জানালেন করলেন।

বললেন, 'এটা পাবনার পেঁয়াজ। সবচেয়ে চাহিদা। অন্যগুলোর চেয়ে এটার দাম একটু বেশিই।'

কারওয়ান বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, পাইকারিতে পাবনার পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা কেজি দরে, ফরিদপুরের পেঁয়াজ ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ১১২ টাকা দরে।

পাইকারি দোকান কুতুবপুর বাণিজ্যালয়ের বিক্রেতা খায়রুল ইসলাম বলেন, 'দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ২০ থেকে ৩০ টাকার ওপর দাম বাড়ছে।'

দাম বাড়ছে আলুরও। সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারিতে দুই থেকে তিন টাকার মতো বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৭ টাকা কেজি দরে। আর পাড়া-মহলস্নার দোকানে খুচরায় দাম উঠেছে ৬৫ টাকা পর্যন্ত।

কারওয়ান বাজারের আলস্নাহর দান বাণিজ্যালয়ের বিক্রেতা ওয়াহিদ শেখ বলেন, 'এখন আলু লাগানো হচ্ছে, ৫০ দিনের মতো সময় লাগবে বাজারে আসতে। তখন দাম কম পাওয়া যাবে।'

পাইকারিতে ৬০ টাকায় নিচে চাল নেই

চাল বিক্রেতারা জানান, কোম্পানিগুলো বস্তাপ্রতি চাল বেশি দামে নির্ধারণ করে দিয়েছিল সপ্তাহ দুয়েক আগে। এই দাম আপাতত আর কমবে না। মাসখানেক পর আমনের নতুন ধান ওঠার আগ পর্যন্ত দাম কমার সম্ভাবনা নেই।

কারওয়ান বাজারে চালের পাইকারি দোকান বাদশা রাইস এজেন্সিতে চালের যে মূল্য তালিকা ঝুলছিল তাতে পাইকারি দরেও ৬০ টাকার নিচে কোনো চাল দেখা গেল না। খোঁজ নিয়ে দেখা গেল দাম বাড়তে বাড়তে এখন সব চালের দাম পাইকারিতে ৬০ টাকার ওপর চলে এসেছে। আর খুচরাতে ৬৩ টাকার ওপর দর।

এ বাজারে পাইকারিতে প্রতি কেজি আটাশ চাল বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬১ টাকা দরে, স্বর্ণা ৬৩ টাকা কেজি, মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৭১ থেকে ৭২ টাকা দরে। আর খুচরায় এসব চাল কেজিতে ৩ থেকে ৪ টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে।

বাদশা রাইস এজেন্সির বিক্রেতা মো. নূর হোসেন বলেন, 'এখন ৬০ টাকার নিচে কোনো চাল নেই বাজারে। দাম আপাতত কমবে মনে হয় না।'

শীতের সবজির দাম কমছে

বাজারে সপ্তাহখানেক আগে লম্বা ও সাদা গোল বেগুন বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা কেজি দরে। আর লাল গোল বেগুন বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকায়। এখন লম্বা বেগুনের দাম কমে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর সাদা ও লাল গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি দরে।

শিমের দামও কমে এসেছে, ক্রেতারা বাজারে ১২০ টাকা কেজি দরে কিনতে পারছে এই পণ্যটি।

সপ্তাহ তিনেক আগে টমেটোর দর ছিল ২৪০ টাকা, যা দুই সপ্তাহ আগে নেমেছিল ১৮০ টাকায়। গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ১৬০ টাকা কেজি দরে। আর এখন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা কেজি দরে। পণ্যটির দর ক্রমাগত কমছে।

এ ছাড়া প্রতি কেজি চিচিঙ্গা, ধুন্দল, বাঁধাকপি, ঢেঁড়স, প্রতিটি লাউ ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, আর পটোল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়।

উচ্ছে ৮০ টাকায় ও বরবটি ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। পেঁপে ও মুলা আগের দরেই বিক্রি হচ্ছে, প্রতি কেজি ৪০ টাকায়।

মরিচ ১৮০ টাকা কেজিতে পাওয়া যাচ্ছে। এই পণ্যটির দাম মঙ্গলবার ১০০ টাকার আশপাশেও নেমেছিল। আর গত শুক্রবার পণ্যটির দর ছিল ২০০ টাকার বেশি।

কারওয়ান বাজারের মরিচ বিক্রেতা হাবিবুর রহমান বলেন, দেশীয় মরিচ বাজারে আসতে শুরু করছে। এবার দাম আস্তে আস্তে কমে আসবে।

কমেছে মুরগি-মাছের দামও

গত শুক্রবার প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২০০ থেকে ২১০ টাকা কেজি দরে। এখন তা নেমেছে ১৯০ টাকায়। আর সোনালি মুরগিও ১০ টাকা কমে ক্রেতারা বিক্রি হচ্ছে ৩১০ টাকা দরে। বাজারগুলোয় প্রতি হালি মুরগির ডিম ৫০ টাকায় বিক্রি চলছে। আর হাঁসের ডিম বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা হলিতে।

চাষের পাঙ্গাসের দাম কেজিতে ২০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা দরে। তেলাপিয়া ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা কেজি ও রুই বিক্রি চলছে প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়। কারওয়ান বাজারের মাছ বিক্রেতা মো. আল আমিন বলেন, 'মাছের দর একটু কমতির দিকেই এখন।'

বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৩০ থেকে ৭৫০ টাকা কেজি দরে, আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকা কেজিতে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে