চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) ছাত্রাবাসে অবৈধ অনুপ্রবেশ, রুম দখল ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে যুক্ত থাকায় ৭৫ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১৪ শিক্ষানবিস চিকিৎসক রয়েছেন। পাশাপাশি আরও ১১ শিক্ষার্থীকে মুচলেকা নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
সোমবার অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় ওই ৭৫ শিক্ষার্থীর শৃঙ্খলা ভঙ্গের ধরনভেদে ৬ মাস থেকে ২ বছর পর্যন্ত বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া ১১ শিক্ষার্থী থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. জসীম উদ্দিন। তিনি জানান, চমেকে বিভিন্ন সময় যেসব ঘটনা ঘটেছে, এর প্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন মেয়াদে ৭৫ জনকে বহিষ্কার করেছে। এর মধ্যে ১৪ জন শিক্ষানবিস চিকিৎসক রয়েছে।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তাসলিম উদ্দীন জানান, শাস্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে ১৪ জন ইন্টার্ন রয়েছেন। তাদের শাস্তি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়ন করবে।
জানা যায়, ৮৬ শিক্ষার্থীর মধ্যে ২ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয় ৭ জনকে। ১৫ জনকে দেড় বছরের জন্য, ৩৯ জনকে এক বছরের জন্য, ১৪ জনকে ৬ মাসের জন্য বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়। ১১ জনের কাছ থেকে অভিভাবক ও নিজের মুচলেকা নেওয়া হবে।
জানা গেছে, যারা বহিষ্কার হয়েছে তাদের বেশিরভাগই নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। যাদের বিরুদ্ধে এর আগেও বিভিন্ন অভিযোগ ছিল। এ কারণে তাদের কয়েকজনকে এর আগে কয়েকবার বহিষ্কার করা হয়েছিল।
উলেস্নখ্য, জুলাই-আগস্টের অভু্যত্থানের পর ১১ সেপ্টেম্বর চমেক কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। এই কমিটির প্রধান ছিলেন নিউরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মো. হাসানুজ্জামান। এক মাসের বেশি সময় ধরে অভিযুক্তদের বিষয়ে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে কমিটি।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, কিছু শিক্ষার্থী সংঘবদ্ধ হয়ে কলেজ ক্যাম্পাস ও ছাত্রাবাসে সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। এর আগেও কিছু শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ এলাকায় সংঘটিত সংঘাতের কারণে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। শাস্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা কলেজ ক্যাম্পাস ও ছাত্রাবাসের ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার পরও ছাত্র রাজনীতির নাম ভাঙিয়ে একক কর্তৃত্ব, গোষ্ঠীগত আধিপত্য ও বিভিন্ন নিন্দনীয় ঘটনা ঘটায়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ছাত্রাবাসে অবৈধ অনুপ্রবেশ, অবৈধভাবে রুম দখল, অঙ্গীকার ভঙ্গ, মারধর ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের যুক্ত থাকায় তাদের বিরুদ্ধে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলো।