কালুরঘাট সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরু

প্রকাশ | ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
দীর্ঘ ১৪ মাস ধরে কয়েক ধাপে সেতুর সংস্কার কাজ শেষে সেতু দিয়ে রোববার সকাল থেকে যান চলাচল শুরু হয়। তবে বড় বাস-ট্রাক চলাচল বন্ধে ৮ ফুট উচ্চতায় স্থায়ী প্রতিবন্ধকতা নির্মাণ করে দিয়েছে রেলওয়ে। জানা গেছে, প্রায় ৯৩ বছরের পুরনো এ সেতুকে মজবুত করে ট্রেন ও যান চলাচলের জন্য উপযোগী করতে লেগে যায় এক বছরেরও বেশি সময়। এ সময় নদী পারাপারের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে ফেরি। এতে নানা ভোগান্তি পোহাতে হতো যাত্রীসাধারণের। কালুরঘাট সেতু একমুখী হওয়ায় এক প্রান্তের গাড়ি পার হতে গেলে অন্য প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এছাড়া গাড়ির সঙ্গে পালস্না দিয়ে পায়ে হেঁটে পার হতেন পথাচারীরা। ফলে দুর্ঘটনা ছিল নিত্যদিনের বিষয়। তবে এবার সেতু সংস্কার করে একপাশে যুক্ত করা হয়েছে ওয়াকওয়ে। সেতু সংস্কার কাজের তিন মাসের মাথায় শুরু হয় ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ট্রেন চলাচল। সেতুর সংস্কার কাজ বিলম্বিত হওয়ায় ও ফেরি পারাপারে দুর্ভোগ এড়াতে যান চলাচলের জন্য দ্রম্নত সেতু খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন সেতু ব্যবহারকারীরা। সেতু দিয়ে যানচলাচল শুরু হওয়ায় নগর যাতায়াতের দুর্ভোগ অনেকাংশে কমে যাবে বলে জানিয়েছেন গাড়ি চালক ও যাত্রীরা। সেতু পারাপারকারী শ্যামল বিশ্বাস বলেন, সংস্কারের মাধ্যমে যান চলাচলের উপযোগী করে সেতুটি খুলে দেওয়ায় দুর্ভোগ কিছুটা লাঘব হয়েছে, তবে নতুন রেল কাম সড়ক সেতুর কাজ দ্রম্নত চালু করার আহ্বান জানান তিনি। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রকৌশলীরা জানান, বুয়েট বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীদের পরামর্শে ও রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের তত্ত্বাবধানে গত বছরের ১ আগস্ট থেকে সংস্কারকাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রকচার লিমিটেড। সংস্কারকাজ শুরুর তিন মাসের মধ্যেই সেতুটি ট্রেন চলাচলের মজবুত ও উপযোগী করে তোলা হয়। এরপর ২০২৩ সালের ১২ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। প্রায় ৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুর সংস্কারকাজ শেষ হয়েছে। সেতুতে নতুন করে দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। সেতুর পাটাতনের ওপর বিশেষ প্রযুক্তির কংক্রিটের ঢালাই দেওয়া হয়েছে। ফলে এখন আর সেখানে পানি জমবে না। সেতু নির্মাণের ৯৩ বছর পর রেল ও যানবাহন চলাচলের পাশাপাশি এখন পথচারীরা হেঁটে পারাপার হতে পারবেন। রাতের জন্য সেতুতে রাখা হয়েছে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সেতু প্রকৌশলী জিসান দত্ত বলেন, কয়েকটি ধাপে সেতুটির সংস্কারকাজ করা হয়েছে। সর্বশেষ যান চলাচলের জন্য উপযোগী করে সেতু খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে বড় বাস-ট্রাক চলাচল বন্ধে সেতুর দুই প্রান্তে ৮ ফুট উচ্চতায় স্থায়ী প্রতিবন্ধকতা দেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর ওপর ১৯৩১ সালে প্রায় ৭০০ মিটার দৈর্ঘ্যের স্টিলের কাঠামোর কালুরঘাট রেলসেতু নির্মিত হয়েছিল।