'আওয়ামী লীগ যত মানুষকে হত্যা করেছে জামায়াতে ইসলামী তার ন্যায় বিচার আদালত থেকে পেতে চায় জানিয়ে দলটির আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, 'আদালতের কাছে আমাদের দাবি স্পষ্ট, আমাদের ওপর যেমন জুলুম করা হয়েছে, ওদের (আওয়ামী লীগের) ওপর যেন সেই জুলুম করা না হয়। ওদের যেন ন্যায় বিচারের মাধ্যমে তাদের আসল পাওনাটা বুঝিয়ে দেওয়া হয়। এতে যদি কারও ফাঁসি হয়, আমৃতু্য কারাদন্ড বা যাবজ্জীবন হয়, হবে। যার যেটা পাওনা, তা যেন হয়।'
রোববার দলটির ঢাকা মহানগর উত্তর আয়োজিত বিগত আন্দোলনে নিহত ও আহতদের পরিবারের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শফিকুর রহমান বলেন, 'প্রতিশোধের রাজনীতিতে আমরা বিশ্বাসী না, প্রতিহিংসা আমরা ছড়াব না। ওরা ছিল দায়িত্বহীন বর্বর। এই জাতি দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিবে। আলস্নাহ ক্ষমতা দেওয়ার মালিক, কেড়ে নেওয়ারও মালিক। আলস্নাহ ছাড় দেন, কিন্তু ছেড়ে দেন না। শেষ পর্যন্ত তারা আলস্নাহর কাছে ধরা খেয়েছে। জুলুমের ক্ষীণ বিচার এই পৃথিবীতে হবে, আসল বিচার হবে আখেরাতে। দুনিয়ার বিচারটাও আমরা দেখতে চাই।'
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে জামায়াত আমির বলেন, 'তারাই তো বলতেন বিচার বিভাগ স্বাধীন, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। তাহলে তিনিও তো আইনের ঊর্ধ্বে না। যে অপকর্ম করেছেন, তা আপনাকে প্রত্যক্ষ করতে হবে, এর স্বাদও গ্রহণ করতে হবে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত ও আহতদের পরিবারের পাশে সবাইকে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'সবাইকে জানতে দিতে হবে ফ্যাসিবাদীরা এ দেশে কী করেছিল আর কারা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই-সংগ্রাম করেছেন। যারা লড়াই করেছেন, তারা কেউ ব্যক্তিস্বার্থের জন্য করেননি, দেশের জন্য করেছেন। জাতির দায়িত্ব তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো।'
জামায়াত নেতা বলেন, 'এই ইতিহাস সবাইকে জানাতে হবে। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত ফ্যাসিবাদের থাবায় যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের সবার ইতিহাস পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।'
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, 'একটা সন্তানকে নিয়ে একটা পরিবার স্বপ্ন দেখে। তাদের স্বপ্ন মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে এই ফ্যাসিবাদ। তাই শহীদ পরিবারের কমপক্ষে একজন সদস্যকে সরকারি চাকরি, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানে তাদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। তারা যদি সুযোগ পায়, তারা এ ঘটনা লালন করে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করবে। আর চিকিৎসার অভাবে যারা হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন, তাদের পাশে রাষ্ট্রকে দাঁড়াতে হবে।'