গাজীপুরে জামায়াতের আমির

বর্তমান প্রজন্ম ব্যর্থতা দেখতে প্রস্তুত নয়

প্রকাশ | ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

গাজীপুর প্রতিনিধি
শুক্রবার গাজীপুর জেলার একটি কমিউনিটি সেন্টারে জামায়াতের উদ্যোগে আয়োজিত রোকন সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন দলের আমির ডা. শফিকুর রহমান -যাযাদি
বর্তমান প্রজন্ম আর ব্যর্থতা দেখতে প্রস্তুত নয় বলে মন্তব্য করে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, জাতীয় ঐক্যের ভিত্তি হবে ২৪-এর গণবিপস্নব। এই গণবিপস্নবের চেতনাকে পাস কাটিয়ে আমাদের দল এবং কোনো দল যেন ভিন্ন পথে হাঁটার চিন্তা না করে। যারাই হাঁটবে, তাদেরই স্বৈরাচারের রাস্তা ধরতে হবে। বর্তমান প্রজন্ম এই ব্যর্থতা দেখতে প্রস্তুত নয়। শুক্রবার সকালে গাজীপুর মহানগরীর নগপাড়া এলাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারে জেলা জামায়াতের উদ্যোগে আয়োজিত দলের রোকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন। শফিকুর রহমান বলেন, 'আমি আমার দলকে সতর্ক করছি এবং সব রাজনৈতিক দলকেও সতর্ক করছি। জনগণের চেতনার বিপক্ষে আমরা যেন কেউ না দাঁড়াই। আমাদের অবশ্যই জনগণের পক্ষে শক্ত হয়ে দাঁড়াতে হবে। জনগণের ন্যায্য দাবি যদি থাকে, সে দাবিকে পাশ কাটানোর চেষ্টা বা দুঃসাহস আমরা যেন কেউ না দেখাই। কিন্তু হঁ্যা, যদি জনগণের মধ্য থেকে কোনো একটি বিশেষ মহল জাতিকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য, প্রতারণা করার জন্য, কোনো কিছু নিয়ে আসে, সে ক্ষেত্রেও আমাদের লক্ষ্য থাকবে তাদের প্রতিহত করার জন্য।' জামায়াতের আমির বলেন, 'জুলাই আন্দোলনে যারা জীবন দিয়েছে, তারা আমাদের কলিজার টুকরা। তাদের দাবি ছিল, উই ওয়ান্ট জাস্টিস, আমরা সুবিচার চাই। সুবিচার যে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হবে, সেখানে ডাকাত এবং চোরের কোনো জায়গা নেই। সেখানে সম্পদ লুণ্ঠন করে বিদেশে পাচারের কোনো সুযোগ নেই। যেখানে সুবিচার প্রতিষ্ঠিত হবে, সেখানে ঘুষের রমরমা বাণিজ্য চলবে না।' তিনি বলেন, 'আমরা এমন বিচিত্র সংসদ ও সরকার পেয়েছিলাম, সেই সংসদ এবং সরকার জনগণের জন্য ছিল না। সেখানে ব্যক্তিবন্দনায় নেচে-গেয়ে জনগণের টাকা নষ্ট করা হতো। এক ব্যক্তির ইশারায় সবকিছু উঠত এবং বসত। ইতিহাসে এমন দুর্র্ধর্ষ শাসক যারা ছিল, স্বৈরশাসক যারা ছিল, তারা বলত আমি হচ্ছি সবচেয়ে বড় রব।' জাতীয় সংকটে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে জামায়াত আমির বলেন, 'আমরা বলেছি, দল এবং ধর্ম যার যার, দেশ আমাদের সবার। দেশের মৌলিক স্বার্থে দলগুলোর মধ্যে কোনো ধরনের বিভাজন এই জাতি কামনা করে না। সংকট এসেছে, সংকট আছে, সংকট থাকবে। সব জাতীয় সংকট ঐক্যবদ্ধভাবে এ জাতি মোকাবিলা করবে।' শফিকুর রহমান বলেন, 'একটা নাগরিক সে যে পর্যায়ের থাকুক না কেন, যে দলের হোক যে ধর্মের হোক, সে আদালতে গেলে ন্যায়বিচার পাবে। ওখানে ন্যায়বিচার বঞ্চিত হবে না। কারও টেলিফোনের কারণে একজন নাগরিকের জীবনে অত্যাচারের স্টিমরোলার আসবে না। মানুষকে তারা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করবে না। বিচারপ্রার্থী ন্যায়বিচার পেলে এ দুয়ার সে দুয়ারে ঘুরবে না। এমন একটি রাষ্ট্র আমরা গড়তে চাই, দেখতে চাই। সেই কল্যাণ সেই মানবিক রাষ্ট্রের অভিযাত্রী হিসেবে আমরা দেশবাসীর সহযোগিতা চাই, দোয়া চাই এবং পাশে চাই।' জেলা জামায়াতের আমির জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে ওই রোকন সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ মো. ইজ্জত উলস্নাহ ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন। এ ছাড়া জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো. সফি উদ্দিন, জেলা নায়েবে আমির আবদুল হাকিম ও মাওলানা সেফাউল হক, জেলা সহকারী সেক্রেটারি আনিসুর রহমান বিশ্বাস, প্রচার সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, মহানগর জামায়াতের আমির অধ্যাপক জামাল উদ্দিনসহ স্থানীয় নেতারা ছিলেন।