অপর মামলা খারিজ

গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াসহ তিন জনকে অব্যাহতি

প্রকাশ | ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
গেস্নাবাল অ্যাগ্রোট্রেড প্রাইভেট লিমিটেড (গ্যাটকো) দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ তিনজনকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। অব্যাহতিপ্রাপ্ত অপর দুজন হলেন সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ আদালত-৩ এর বিচারক আবু তাহেরের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। তবে এ মামলায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান কমডোর জুলফিকার আলীসহ অপর ১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। এদিন মামলাটির অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। খালেদা জিয়ার পক্ষে তার আইনজীবী হাজিরা দাখিল করেন। এরপর অভিযোগ গঠন শুনানি শুরু হয়। আসামিপক্ষে আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার, জিয়া উদ্দিন জিয়া, সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ, জাকির হোসেন ভূইয়া অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করেন। অন্যদিকে দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম অভিযোগ গঠনের পক্ষে শুনানি করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত খালেদা জিয়াসহ তিনজনকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেন। এছাড়া অপর ১২ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে। বিচার শুরু হওয়া অপর আসামিরা হলেন প্রয়াত মন্ত্রী কর্নেল (অব.) আকবর হোসেনের স্ত্রী জাহানারা আনছার, দুই ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মন ও এ কে এম মুসা কাজল, এহসান ইউসুফ, সাবেক নৌসচিব জুলফিকার হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক সদস্য এ কে রশিদ উদ্দিন আহমেদ, তৎকালীন গ্যাটকো পরিচালক শাহজাহান এম হাসিব, সৈয়দ তানভির আহমেদ ও সৈয়দ গালিব আহমেদ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান এ এস এম শাহাদত হোসেন ও বন্দরের সাবেক পরিচালক (পরিবহণ) এ এম সানোয়ার হোসেন। প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর তেজগাঁও থানায় এ মামলা করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী। এতে আসামি করা হয় চারদলীয় জোট সরকারের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোসহ ১৩ জনকে। মামলার পরদিন খালেদা জিয়া ও কোকোকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর মামলাটি অন্তর্ভুক্ত করা হয় জরুরি ক্ষমতা আইনে। পরের বছর ১৩ মে খালেদা জিয়াসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে এ মামলার অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। এ মামলার আসামি ২৪ জনের মধ্যে সাবেক মন্ত্রী এম সাইফুর রহমানসহ আটজন মারা গেছেন। এছাড়া জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ায় তাকেও মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গ্যাটকোকে ঢাকার কমলাপুর অভ্যন্তরীণ কনটেইনার ডিপো (আইসিডি) ও চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের কাজ পাইয়ে দিয়ে রাষ্ট্রের ১৪ কোটি ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৬ টাকার ক্ষতি করেছেন। অপর মামলা খারিজ এদিকে, দশম সংসদ নির্বাচনের পর সারাদেশে অবরোধ ও হরতালে পেট্রোলবোমা হামলায় ৪২ জনের মৃতু্যর ঘটনায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে করা মামলা খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। তদন্ত শেষে পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম জিয়াদুর রহমান বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিকী ২০১৫ সালের ২ ফেব্রম্নয়ারি ঢাকার হাকিম আদালতে খালেদা জিয়াসহ চারজনকে আসামি করে এ মামলা দায়ের করেন। পরে আদালতের নির্দেশে গুলশান থানা পুলিশ তদন্তভার পায়। খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমদ (পরে মারা গেছেন) এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা সমশের মবিন চৌধুরীকে আসামি করা হয় এ মামলায়। মামলার বিবরণে বলা হয়, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি সারাদেশে অবরোধের ডাক দেন। এরপর দফায় দফায় হরতালের ঘোষণা দেয় তার দল। ওই কর্মসূচির মধ্যে ২০১৫ সালের ১ ফেব্রম্নয়ারি পর্যন্ত সারাদেশে অগ্নিদগ্ধ হয়ে ৪২ মারা যান, সরকারের কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়। এ মামলার তদন্ত দীর্ঘদিন ঝুলে থাকলেও সরকার বদলের পর চলতি বছরের ২১ সেপ্টেম্বর গুলশান থানার এসআই শাহীন মোলস্না আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। সেখানে বলা হয়, আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনো প্রমাণ তদন্তে পাওয়া যায়নি।