শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১

হারুন ও তার পরিবারের সদস্যদের দুদকে তলব

যাযাদি রিপোর্ট
  ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
হারুন অর রশিদ

'কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ' অর্জনের অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশিদকে তলব করেছে দুদক।

বৃহস্পতিবার পাঠানো এক নোটিশে ঢাকা মহানগর পুলিশের এই অতিরিক্ত কমিশনারকে আগামী ৩১ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টায় দুদকের সেগুনবাগিচা কার্যালয়ে হাজির থাকতে বলা হয়েছে।

ওইদিন এবং ৩ নভেম্বর বিভিন্ন সময় হারুনের পরিবারের একাধিক সদস্যদেরও দুদকে তলব করা হয়েছে। তারা হলেন হারুনের স্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট অ্যান্ড অ্যাগ্রো লিমিটেডের পরিচালক শিরিন আক্তার, হারুনের মা ও প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট অ্যান্ড অ্যাগ্রো লিমিটেডের চেয়ারম্যান জহুরা খাতুন, হারুনের ভাই ও প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট অ্যান্ড অ্যাগ্রো লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম শাহরিয়ার, হারুনের শ্বশুর মো. সোলায়মান, হারুনের চাচা ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদ, আরেক চাচা মো. মতিউর রহমান, হারুনের খালা মোছাম্মৎ মিনারা বেগম, মামা মো. সুমরাজ মিয়া রয়েছেন।

এছাড়া হারুনের ব্যবসায়িক অংশীদার ও প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট অ্যান্ড অ্যাগ্রো লিমিটেডের পরিচালক মো. আলাউদ্দিন আল সোহেল, চাচাত ভাই ও হাওর এয়ার ট্রাভেলস লিমিটেডের পরিচালক আল রাসেল, হারুনের ব্যবসায়িক অংশীদার ও গোল্ডেন স্কাই ফুটওয়্যার লিমিটেডের চেয়ারম্যান রাকিব উদ্দিন দেওয়ান রতনকেও তলব করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নানা কারণে আলোচিত হারুনের বিরুদ্ধে প্রভাব খাটিয়ে নামে-বেনামে রাজধানীতে দুই ডজন বাড়ি, অর্ধশতাধিক ফ্ল্যাট ও পস্নটের মালিক হওয়ার অভিযোগ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া তিনি যুক্তরাষ্ট্র, দুবাই ও জেদ্দাসহ বিভিন্ন জায়গায় অঢেল সম্পদ গড়েছেন বলে অভিযোগ পেয়েছে দুদক।

এসব অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদকের উপপরিচালক জয়নাল আবেদীনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে, যেখানে সদস্য হিসেবে আছেন সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন ও উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ রাকিব উদ্দিন মিনহাজ।

২০২২ সালের জুলাই থেকে ডিএমপির ডিবি প্রধানের দায়িত্ব পালন করছিলেন হারুন অর রশীদ। গণ-আন্দোলনে সরকার পতনের চার দিন আগে গত ৩১ জুলাই তাকে সেখান থেকে সরিয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনারের (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) দায়িত্ব দেওয়া হয়। সরকার পতনের পর থেকেই তার হদিস মিলছে না।

ডিবিতে দায়িত্ব পালনকালে হারুন তার কার্যালয়ে অভিযোগ নিয়ে আসা বিভিন্নজনকে ভাত খাওয়াতেন। সেসব ছবি নিজের ফেইসবুকে শেয়ার করতেন, যা নিয়ে বেশ আলোচনা ছিল।

সবশেষ কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় সমন্বয়কারীকে তুলে নিয়ে ডিবি কার্যালয়ে কয়েকদিন রাখেন হারুন। তাদের আপ্যায়ন করার একটি ছবি আবার আলোচনা তৈরি করে।

পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার থাকাকালে ২০১১ সালে তৎকালীন বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপ বিএনপি নেতা জয়নুল আবদিন ফারুককে ধাওয়া দিয়ে পিটিয়ে আলোচিত হন হারুন।

পরে ডিএমপির লালবাগ বিভাগে কয়েক বছর দায়িত্ব পালনের পর গাজীপুরের পুলিশ সুপার হন তিনি। সেখানে কয়েক বছর দায়িত্ব পালনের মধ্যে ২০১৮ সালের মে মাসে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময় বিএনপি তার বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ তোলে। এরপর ওই বছরের আগস্টের শুরুতে তাকে ঢাকা মহানগর পুলিশে বদলি করা হয়।

নারায়ণগঞ্জে ১১ মাসের দায়িত্বে হকার ও অবৈধ দখল উচ্ছেদসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়ে তিনি যেমন প্রশংসিত হন, তেমনি এ জেলার অনেক প্রভাবশালীর সঙ্গে 'টক্করে' গিয়ে আলোচনার জন্ম দেন।

২০১৯ সালে পারটেক্স গ্রম্নপের কর্ণধার এম এ হাশেমের ছেলে আমবার গ্রম্নপের চেয়ারম্যান শওকত আজিজের স্ত্রী ও সন্তানকে আটক করেও আলোচনায় আসেন তিনি। পরে তাকে নারায়ণগঞ্জ থেকে সরিয়ে পুলিশ সদর দপ্তরে আনা হয়।

ডিআইজি হিসেবে ২০২২ সালের ১১ মে পদোন্নতি পাওয়ার পর একই বছর ১৩ জুলাই ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে ডিবির দায়িত্ব পান। এর আগে অতিরিক্ত ডিআইজি হিসেবে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনারের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে