জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হচ্ছে আজ

সাত বিভাগে টিকা পাবে ৬২ লাখ কিশোরী

প্রকাশ | ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
ঢাকা বিভাগ ছাড়া দেশের সাত বিভাগে আজ থেকে শুরু হচ্ছে মেয়েদের জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে বিনামূল্যে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকাদান কর্মসূচি। এই ক্যাম্পেইন চলবে চার সপ্তাহ। এ ক্যাম্পেইনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পঞ্চম-নবম শ্রেণীর ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সি ৬২ লাখ ১২ হাজার ৫৩২ জন কিশোরীকে এই টিকা দেওয়া হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধের লক্ষ্যে মোট ১৮ দিন টিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এর মধ্যে প্রথম ১০ দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ও ইপিআই স্থায়ী কেন্দ্রগুলোতে এ কার্যক্রম চলবে। কেউ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টিকা নিতে অসমর্থ হলে তারা স্থায়ী কেন্দ্রে টিকা নিতে পারবে। এছাড়া স্থায়ী কেন্দ্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বহির্ভূত ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সি কিশোরীরাও টিকা গ্রহণ করতে পারবে। এছাড়া পরবর্তী আটদিন নিয়মিত ইপিআই স্থায়ী (যেমন জেলা হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স) ও অস্থায়ী (যেমন বিভিন্ন ইউনিয়ন, ওয়ার্ডের টিকাদান কেন্দ্র) টিকাদান কেন্দ্রের মাধ্যমে এ ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) উপ-পরিচালক ডা. মোহাম্মদ শাহরিয়ার সাজ্জাদ বলেন, সরকারের উদ্যোগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডবিস্নউএইচও), ইউনিসেফ ও দ্যা ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স-গ্যাভির সহায়তায় এই টিকাদান কর্মসূচি চলবে। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে ১৫ বছরের কম বয়সি মেয়েদের ৯০ শতাংশকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার। সাতটি বিভাগের নির্দিষ্ট বয়সি ও নির্ধারিত শ্রেণীতে অধ্যয়নরত কিশোরীরা িি.িাধীবঢ়র.মড়া.নফ ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করে টিকাকার্ড সংগ্রহ করতে পারবে। পরে ওই কার্ড দেখিয়ে টিকার ডোজ গ্রহণ করা যাবে। তিনি বলেন, টিকাদান কর্মসূচি দেশের প্রন্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছে দিতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। এ ছাড়া অভিভাবকদেরও টিকা গ্রহণে উৎসাহিত করতে হবে। এর আগে ২০২৩ সালে ঢাকা বিভাগের ১৫ লাখেরও বেশি কিশোরীকে এক ডোজ এইচপিভি টিকা প্রদান করা হয়েছে। এতে কোন কিশোরীর কোন বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, প্রতি বছর বিশ্বের প্রায় ৬ লাখ ৬০ হাজার নারী জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। এদের মধ্যে প্রায় তিন লাখ ৫০ হাজার মৃতু্য বরণ করে থাকেন, যার প্রায় ৯৪ শাতাংশই মৃতু্যই বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল বা স্বল্পোন্নত দেশে ঘটে থাকে। বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় আট হাজার ২৬৮ জন নারী জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন এবং তার মধ্যে প্রায় চার হাজার ৯৭১ জন নারী মৃতু্যবরণ করেন। বাংলাদেশে ১৫ থেকে ৪৪ বছর বয়সি নারীদের ক্যান্সারজনিত মৃতু্যর ক্ষেত্রে জরায়ুমুখ ক্যান্সার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) ডিপিএম ডা. রাজীব সরকার বলেন, জরায়ুমুখ ক্যান্সারের লক্ষণ প্রকাশ পেতে ১৫-২০ বছর সময় লাগে। এজন্য এই রোগকে নীরব ঘাতক বলা হয়। আক্রান্ত রোগীদের অধিকাংশই প্রায় শেষপর্যায়ে শনাক্ত হন যখন রোগ থেকে সেরে ওঠা খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। কিশোরীদের নির্দিষ্ট বয়সে এক ডোজ এইচপিভি টিকা প্রদান করলে এই ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব।