সাভারের আশুলিয়ায় পোশাকশ্রমিক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তিনজন গুলিবিদ্ধসহ পাঁচ শ্রমিক আহত হয়েছেন। বুধবার বেলা ১১টার দিকে নরসিংহপুর-কাশিমপুর সড়কের বাংলাবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছেন।
আহত শ্রমিকরা হলেন- হালিমা খাতুন, ববিতা আক্তার, মোর্শেদা খাতুন ও চম্পা খাতুন। অন্য একজনের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। তাদের মধ্যে হালিমা খাতুন সুসুকা গার্মেন্টের শ্রমিক, বাকিরা জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশনের শ্রমিক বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে, এ দিন দুপুরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের নয়ারহাট এলাকায় অবরোধ করে নানা দাবিতে বিক্ষোভ দেখান শ্রমিকরা। এ সময় মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
শ্রমিকরা জানান, জেনারেশন নেক্সট পোশাক কারখানার শ্রমিকদের তিন মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। বকেয়া বেতন ও বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে কারখানাটির সামনে একত্রিত হন শ্রমিকরা। পরে তারা পাশের সিগমা অ্যাপারেলস, ডি-সান, সুসুকা, জি-ম্যাক্স ও শিনশিন পোশাক কারখানায় গিয়ে শ্রমিকদের বের করে আন্দোলনে নামান।
এরপর শ্রমিকরা সড়ক অবরোধের চেষ্টা করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বাধা দেন। এতে শ্রমিকরা ক্ষিপ্ত হয়ে আইনশৃঙ্খলার্ ক্ষাকারী বাহিনীকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গুলি ছুড়লে তিনজন শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হন। আহত হন আরও দুইজন।
নারী ও শিশু হাসপাতালের সহকারী ব্যবস্থাপক এইচ এম আসাফুদ্দৌলা রিজভী বলেন, 'মোট চারজনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে পেয়েছি, এর মধ্যে তিনজন গুলিবিদ্ধ বলে নিশ্চিত হয়েছি। বাকি জনের তলপেটে ইনজুরি রয়েছে, সেটা গুলির ইনজুরি কিনা, আমরা নিশ্চিত না।'
শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, 'গুলির কোনো ঘটনা ঘটেনি। শ্রমিকরা যখন পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে, তখন সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়।'
এদিকে, আশুলিয়ায় মজুরি বৃদ্ধিসহ নানা দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। এতে মহাসড়কটির কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার দুপুরে নয়ারহাট এলাকায় গিল্ডেন শাহরিয়ার কারখানার কয়েকশত শ্রমিক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।
শ্রমিকরা জানান, গিল্ডেন শাহরিয়ার কারখানার বিদেশি মালিকপক্ষ শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানালেও আমাদের দেশের ম্যানেজমেন্ট ১২-১৩ হাজার টাকা বেতন প্রদান করে। বিদেশি মালিকপক্ষ ২৪ হাজার ৫০০ টাকা বেতন প্রদানের নির্দেশ দিলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এ ছাড়াও হাজিরা বোনাস বৃদ্ধি, ইনক্রিমেন্ট, সুচিকিৎসা নিশ্চিত এবং ছুটি প্রদানসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি জানান শ্রমিকরা।
এ ব্যাপারে কারখানা কর্তৃপক্ষ ও শিল্প পুলিশের কোনো কর্মকর্তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে ঘটনাস্থলে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত হয়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেন।