শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১

ফ্যাসিবাদ দূর না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বেন না :মাহমুদুর রহমান

যাযাদি ডেস্ক
  ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
ফ্যাসিবাদ দূর না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বেন না :মাহমুদুর রহমান

গণ-অভু্যত্থানের মধ্য দিয়ে দেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হলেও শেখ হাসিনা সরকারের চিহ্নিত দালালরা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে বহালতবিয়তে থেকে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। ১৫ দিনের মধ্যে গণমাধ্যম থেকে ফ্যাসিবাদের দালালদের বহিষ্কার করতে হবে।

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গণমাধ্যমের স্বাধীনতাবিরোধী কালাকানুন বাতিল, সাংবাদিক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন এবং ৪

ফ্যাসিবাদমুক্ত গণমাধ্যমের দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে সাংবাদিক নেতারা এই হুঁশিয়ারি দেন।

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) যৌথ উদ্যোগে সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, ফ্যাসিবাদের পতন হলেও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র থামেনি। ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদ পরাজিত হলেও তারা ফিরে আসার চেষ্টা করছে। গণমাধ্যমে হাসিনা সরকারের চিহ্নিত দালালদের মাধ্যমে আবারও ফ্যাসিবাদ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। আমরা ১৬ বছর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছি, আমাদের সংগ্রাম জারি রাখতে হবে। বাংলাদেশের সব সেক্টর থেকে ফ্যাসিবাদ দূর না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বেন না। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের ঐকমত্য থাকতে হবে। গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠায় আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

তিনি আরও বলেন, যেসব সাংবাদিক ফ্যাসিবাদের পক্ষে দালালি করেছে, তাদের অবিলম্বে বহিষ্কার করতে হবে। দেশ ও জনগণের বিরুদ্ধে গিয়ে যারা ফ্যাসিবাদের পক্ষ নিয়েছে, তারা সাংবাদিক হতে পারে না। আন্দোলনে গুলি চালাতে যারা টকশোতে বক্তব্য দিয়েছেন, আন্দোলনকারীদের উপহাস করেছেন তারা সাংবাদিক নন। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

অন্তর্র্বর্তী সরকারের প্রতি ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে মাহমুদুর রহমান বলেন, বারবার আহ্বান জানানোর পরও দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে কুখ্যাত সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়নি। সেই সুযোগে তারা বিভিন্ন জায়গায় অশান্তি তৈরির ষড়যন্ত্র করছে। আমি বলব, এটি এই সরকারের ব্যর্থতা।

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী বলেন, আজ ফ্যাসিস্টমুক্ত দেশে দাঁড়িয়ে কথা বলছি, কিন্তু ফ্যাসিস্টদের ঝড়ানো রক্তের দাগ এখনো শুকায়নি। ফ্যাসিবাদের বিরোধিতা করায় দালাল সাংবাদিকরা আমাদের জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে বের করে দিয়েছিল। শেখ হাসিনার আমলে সাগর-রুনিসহ অসংখ্য সাংবাদিকদের হত্যা করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যমগুলোর মালিকদের প্রতি আহ্বান জানাই, অবিলম্বে ফ্যাসিস্ট সরকারের দালাল সাংবাদিকদের অপসারণ করুন, নতুবা আগস্ট গণ-অভু্যত্থানের শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা হবে।

তিনি আরও বলেন, অন্তর্র্বর্তী সরকারের কাছে আহ্বান জানাই, ফ্যাসিবাদের দালাল সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন। সুষ্ঠু সাংবাদিকতার পথ সুগম করতে ফ্যাসিবাদী সরকারের তৈরি করা সব নিবর্তনমূলক আইন বাতিল করতে হবে। আইন প্রণয়ন করে স্বাধীন সাংবাদিকতার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। সাংবাদিকদের সুরক্ষা দিতে হবে। আমার দেশসহ যেসব পত্রিকাকে ফ্যাসিবাদী সরকার ধ্বংস করেছে, তাদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহীদুল ইসলাম বলেন, আজও ফ্যাসিবাদের দোসররা বিভিন্ন গণমাধ্যমে কাজ করছে। ফ্যাসিবাদের পতনের পরও শেখ হাসিনার দোসরদের পুনর্বাসনের ষড়যন্ত্র করছে। অন্তর্র্বর্তী সরকারের কাছে আহ্বান জানাই, ফ্যাসিবাদবিরোধী সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈঠক করে গণমাধ্যম সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। ফ্যাসিবাদের আমলে ৬৫ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে, এসব হত্যাকান্ডের বিচার করতে হবে। ১৫ দিনের মধ্যে গণমাধ্যমকে ফ্যাসিবাদের দালালমুক্ত করতে হবে। না হলে ফ্যাসিবাদবিরোধী সাংবাদিকদের নিয়ে আমরা আন্দোলনে নামব।

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- বিএফইউজের সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শাহনেওয়াজ প্রমুখ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে