সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ও শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, নিয়োগ বাণিজ্য, নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে।
মঙ্গলবার ঢাকার সেগুন বাগিচায় অবস্থিত দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির মহাপরিচালক (তদন্ত-২) মো. আকতার হোসেন। তিনি বলেন, সাবেক দুই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অর্থ পাচার, ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রকল্পে অনিয়ম করে অর্থ আত্মসাতসহ দেশ-বিদেশে বিপুল অবৈধ সম্পদ গড়ার অভিযোগ আছে। যার মধ্যে সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা কমিশন হিসেবে গ্রহণ করার অভিযোগ রয়েছে। কমিশন বাণিজ্যের মাধ্যমে তিনি অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন।
সাবেক এই মন্ত্রীর নিজ নামে গাজীপুরের জয়দেবপুরে তিনতলা একটি বাড়ি, একই এলাকায় আরেকটি দোতলা ভবন, তার নামে বিভিন্ন ব্যাংকে জমা ও অন্য বিনিয়োগ পাওয়া গেছে। তার নামে ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৩-৪৬৭৭ ও ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৫-৯৮৬০ নম্বরের দুটি দামি গাড়ি আছে। এ ছাড়া তার নামে গাজীপুরের বিভিন্ন মৌজায় ৬৯১ দশমিক ৮ শতক জমি এবং ১০১ দশমকি ৪৮৫ শতক অকৃষি জমি আছে। মন্ত্রী থাকাকালে কোটি কোটি টাকার বিনিময়ে অসংখ্য ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ প্রদানের অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। এ ছাড়া তার নিজের নামে, স্ত্রী ও অন্য আত্মীয়স্বজনের নামে-বেনামে সম্পদ অর্জন করেছেন বলে গোয়েন্দা তথ্যানুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এ ছাড়া সিলেট-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে কমিশন নিয়ে কোটি কোটি টাকা অবৈধভাবে অর্জন করেছেন। নিজ নামে উত্তরা আবাসিক এলাকায় ফ্ল্যাটসহ ৫ কাঠা জমি, নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকায় ৩ কাঠা জমি, তার একক ও যৌথ মালিকানায় সিলেট বিয়ানীবাজারে অকৃষি জমি, তার নামে বিভিন্ন ব্যাংকে জমা ও অন্য বিনিয়োগ, তার ও তার স্ত্রীর নামে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ এবং বিভিন্ন ব্যাংকে মোটা অঙ্কের টাকা থাকার তথ্য মিলেছে। এ ছাড়া তার ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৮-৪৪০০ নম্বরের একটি দামি গাড়ি আছে। তার ভাই যুক্তরাজ্যপ্রবাসী ডা. নজরুল ইসলাম এবং যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বন্ধু কামাল আহমদের মাধ্যমে বিপুল অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন। মন্ত্রী থাকাকালে ঠিকাদারদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা কমিশন হিসেবে নিয়েছেন। তার নিজ নামে, স্ত্রী ও অন্য আত্মীয়স্বজনের নামে-বেনামে অবৈধ সম্পদ করেছেন।