দাবি অর্থনীতি সমিতির
৪৬ বছরে পাচার প্রায় ৮ লাখ কোটি টাকা
প্রকাশ | ২২ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
স্বাধীনতার পর থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবছর পর্যন্ত ৪৬ বছরে দেশ থেকে পাচার হওয়ার টাকার পরিমাণ ৭ লাখ ৯৮ হাজার ৩২৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে অর্থ পাচারের পরিমাণ কমপক্ষে ৭৫ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা, যা একই অর্থ বছরের সৃষ্ট মোট কালো টাকার ৯ শতাংশের সমপরিমাণ।
দেশ থেকে পাচার হওয়া এই অর্থ ফেরত আনতে অন্তর্র্বর্তী সরকারের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি। একইসঙ্গে অর্থ পাচারের উৎসগুলো বন্ধে অন্তর্র্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টাকে সর্বোতভাবে সমর্থন জানিয়েছে।
সোমবার বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডক্টর মো. আইনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ সমর্থনের কথা জানানো হয়।
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি মনে করছে, দেশের অর্থনীতিতে ক্যানসার ব্যাধির মতো ছড়িয়ে পড়া কালো টাকা, অর্থপাচার ও দুর্নীতির মতো মৌলিক সমস্যা নির্মূলে বর্তমান অন্তর্র্বর্তী সরকার সমর্থ হবে।
অর্থনীতিতে পেশাদারদের সংগঠনটি মনে করছে, প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) অন্তত ৩ শতাংশের সমপরিমাণ মতো অর্থ পাচার হয়ে যাচ্ছে, যা দেশে বহুমাত্রিক বৈষম্য ও দারিদ্র্যের বিস্তার ঘটাচ্ছে এবং সর্বগ্রাসী দুর্নীতিকে উৎসাহিত করছে।
অর্থনীতি সমিতির হিসাবে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশে অর্থ পাচারের পরিমাণ হবে কমপক্ষে ৭৫ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা, যা একই অর্থবছরের সৃষ্ট মোট কালো টাকার (৮ লাখ ৪১ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা) ৯ শতাংশের সমপরিমাণ এবং একই অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের ১৬.৩ শতাংশের সমপরিমাণ। এ হিসাবে ৪৬ বছরে (১৯৭২-৭৩ থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে) দেশের মোট অর্থ পাচারের পরিমাণ হবে কমপক্ষে ৭ লাখ ৯৮ হাজার ৩২৭ কোটি টাকা। যেখানে প্রতিবছর বাজেট সংকুলানের জন্য সরকারকে দেশি-বিদেশি বিপুল ঋণ নিতে হচ্ছে, সেখানে মোট বাজেটের প্রায় এক-পঞ্চমাংশের সমপরিমাণ অর্থ পাচার হয়ে যাওয়া জাতি হিসেবে অত্যন্ত উদ্বেগের।
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে অন্তর্র্বর্তী সরকারের টাস্কফোর্স গঠনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায়। তবে মনে করে, যেহেতু দুর্নীতি-কালো টাকা-অর্থ পাচার বাংলাদেশের অর্থনীতিকে টেকসই ও উন্নত করার পথে অন্যতম প্রতিবন্ধকে পরিণত হয়েছে, সেহেতু 'দুর্নীতি, কালো টাকা ও অর্থ পাচার কমিশন' শীর্ষক একটি স্বাধীন কমিশন গঠন করা প্রয়োজন।
'বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির বিকল্প বাজেট প্রস্তাবনা ২০২৩-২৪ : বৈষম্য নিরসনে জনগণতান্ত্রিক বাজেট' দলিলে এই কমিশনের বিশদ রূপরেখা দেওয়া আছে। যেখানে উলেস্নখ করা হয়, এই কমিশনের প্রধান কাজ হবে দুর্নীতি, কালো টাকা ও অর্থ পাচারসংশ্লিষ্ট বিষয়াদি গভীর অনুসন্ধান ও গবেষণামূলক কর্মকান্ড নিরন্তর চালিয়ে যাওয়া এবং অনুসন্ধান-গবেষণার ফল প্রতি তিন মাস অন্তর গণমাধ্যমে জনগণকে অবহিত করা।