মাতুয়াইল মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট হাসপাতালকে (আইসিএমএইচ) 'সুপার স্পেশালাইজড' হাসপাতাল হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।
তিনি বলেন, 'প্রায় দুই দশক ধরে রাজধানীর মাতুয়াইলে মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসছে শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট। প্রতিষ্ঠানটি স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি আশপাশের নিম্নআয়ের মানুষের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। আমরা চাই মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবায় প্রতিষ্ঠানটি একটি সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল হিসেবে গড়ে উঠুক।'
রোববার মাতুয়াইল আইসিএমএইচের শিশু চক্ষু সেবা কেন্দ্রে আরইটি ক্যাম মেশিন ফর রেটিনোপ্যাথি ও প্রিম্যাচুরিটি (আরওপি) স্ক্রিনিং এবং জাতীয় অধ্যাপক ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক এম কিউ কে তালুকদারের নামে একটি লাইব্রেরি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
নূরজাহান বেগম বলেন, 'আইসিএমএইচ এ এলাকার মানুষের একটা ভরসার প্রতীক হয়ে উঠেছে। আমরা প্রতিষ্ঠানটির উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করছি। আমরা চাই প্রতিষ্ঠানটি আরও মানসমৃদ্ধ হোক, মা ও শিশুরা যেন এই প্রতিষ্ঠানে এসে সর্বাধুনিক সেবা নিতে পারে। এই হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্স ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যথাপোযুক্ত পদোন্নতি ও পেনশন না পাওয়াসহ যেসব সমস্যার কথা তুলে ধরা হয়েছে, আমরা আমাদের অবস্থান থেকে সেগুলোর সমাধানে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।'
এ সময় স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ সচিব ডা. মো. সারওয়ার বারী বলেন, 'এ হাসপাতালকে এগিয়ে নিতে কি কি করা উচিত- আপনারা তা আমাদের জানান। আমাদের মন্ত্রণালয় সবসময় এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ছিল, আগামীতেও থাকবে।'
তিনি বলেন, এ প্রতিষ্ঠানটি মা ও শিশু স্বাস্থ্য সেবার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখছে। আজ নতুন করে ল্যাব উদ্বোধন উলেস্নখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। এখানে অনেক অভিজ্ঞ চিকিৎসক কাজ করছেন। নতুন করে শিশুদের জন্য প্রথমবারের মতো শিশু চক্ষু সেবা চালু হচ্ছে, যা খুবই ভালো দিক।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব রনজিত কুমার সরকার বলেন, মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবার জন্য এ প্রতিষ্ঠান অত্যন্ত সুপরিচিত। এখানে শিশু চক্ষু সেবা কেন্দ্র, আরইটি ক্যাম মেশিন ফর রেটিনোপ্যাথি ও প্রিম্যাচুরিটি (আরওপি) স্ক্রিনিং এবং এম কিউ কে তালুকদারের নামে একটি লাইব্রেরি চালু হচ্ছে, যা খুবই আনন্দের। এ প্রতিষ্ঠানের আরও উন্নতি প্রয়োজন। আপনারা এ প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় দিক তুলে ধরবেন, আমাদের দিক থেকে চেষ্টা থাকবে।'
অনুষ্ঠানে উপস্থিত জাতীয় অধ্যাপক ও আইসিএমএইচের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক অধ্যাপক ডা. এম কিউ কে তালুকদার তাকে সংবর্ধনা দেওয়ায় এবং তার নামে লাইব্রেরি চালু করায় আনন্দিত হয়েছেন বলে জানান। তিনি বলেন, 'আমার বয়স ৮৪ বছর। সকালেও অসুস্থ ছিলাম, এখানে আসতে পেরে ভালো লাগছে।'
তার নিজ হাতে গড়া এ প্রতিষ্ঠানটির উত্তরোত্তর উন্নতি কামনা করেন। তিনি আইসিএমএইচ-এর নির্বাহী পরিচালক (ইন-চার্জ) সহযোগী অধ্যাপক ডা. মজিবুর রহমানের দক্ষ ব্যবস্থাপনায় স্বল্পসময়ের মধ্যে হাসপাতালটির অভূতপূর্ব উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তাকে আইসিএমএইচ'র নির্বাহী পরিচালকের পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব দেওয়া হলে এ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে এমন প্রত্যাশা করে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে এ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনার সুপারিশ করেন।
আইসিএমএইচ'র নির্বাহী পরিচালক (ইনচার্জ) ডা. মজিবুর রহমান এ প্রতিষ্ঠানে নতুন করে ১০তলা ভবন নির্মাণ করার আশা প্রকাশ করেন। তিনি এ প্রতিষ্ঠানের নাম ডা. এম কিউ কে তালুকদারের নামে নামকরণ করার জন্য দাবি পেশ করবেন বলেও উলেস্নখ করেন। অনুষ্ঠানে মা ও শিশু স্বাস্থ্য খাতের বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন।