যশোরে বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে শহরের বিভিন্ন এলাকা। ঘরের ভেতরে ঢুকেছে বৃষ্টির পানি, রাস্তাঘাটে হাঁটু সমান পানি। শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে অঝোর ধারায় বৃষ্টি নামে, সেইসঙ্গে লাগাতার বজ্রাঘাত।
শহরের পালবাড়ি এলাকার ইজিবাইক চালক রোস্তম আলী বলেন, এমন বৃষ্টি আগে দেখিনি। বৃষ্টিতো হচ্ছে, সঙ্গে বুক কাঁপানো বজ্রাঘাত। একটা ভয়ংকর অবস্থা।
এদিকে, শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত যশোরে রেকর্ড করা হয়েছে ৯২ মিলিমিটার বৃষ্টি। বিকাল ৪টার দিকে যশোর বিমানবন্দর বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ঘাঁটির আবহাওয়া অফিস এই তথ্য জানিয়েছে।
এদিকে, বিরামহীন বৃষ্টিতে যশোর পৌর শহরের কয়েকটি নিম্নাঞ্চল এলাকা ডুবে গেছে। এসব এলাকায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন এলাকার মানুষ।
শহরের পুরাতন কসবা মসিউর রহমান সড়কের বাসিন্দা মেরুনা জেসমিন বলেন, তিন ঘণ্টার বৃষ্টিতে আমার ঘরে ছয় ইঞ্চির মতো পানি জমেছে। বাড়ির লোকজন মিলে পানি বাইরে বের করতে হয়েছে।
শহরের বেজপাড়া চোপদারপাড়া এলাকার বাসিন্দা জিলস্নুর রহমান জানান, তাদের এলাকাসহ ষষ্টীতলা, টিবি ক্লিনিক এলাকা, চার খাম্বা মোড়, ভোলা ট্যাংক রোড, খড়কী, শংকরপুর এলাকা পস্নাবিত হয়েছে। এছাড়া শহরের স্টেডিয়ামপাড়া, মিশনপাড়া, উপশহর, চাঁচড়া, কারবালা, এমএম কলেজ এলাকা, নাজিরশংকরপুর, বকচর, আবরপুরসহ বেশ কয়েকটি এলাকাও বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে।
যশোর সদরের আব্দুলপুর গ্রামের সবজি চাষি আমিন উদ্দিন বলেন, আমাদের এলাকায় এখন ঝাল, বেগুন, টমেটো, বাঁধাকপি, ফুলকপি, ওলকপি ইত্যাদির চারা লাগানো হচ্ছে। আমার এই সবের বীজতলা রয়েছে। এই বৃষ্টিতে যেসব বীজের চারা গজায়নি, সেগুলো নষ্ট হয়ে যাবে। এছাড়া গত দুই তিন যারা চারা রোপণ করেছেন, তাদের চারাও নষ্ট হবে।
যোগাযোগ করা হলে যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. সুশান্ত কুমার তরফদার বলেন, 'শীতকালীন আগাম সবজি চাষিদের জন্য এটি একটি দুঃসংবাদ। এবার বৃষ্টিতে দেশে ফসলের বেশ ক্ষতি হয়েছে। কৃষকরা আশায় বুক বেঁধে আগাম সবজি চাষে বেশ আগ্রহী হয়েছিলেন। আজকের বৃষ্টিতে তাদের বড় ক্ষতি হচ্ছে। ফসলের বিলম্ব হবে। এছাড়া বীজতলা বা নতুন চারা রোপণে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।'