সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নতুন 'সড়ক নিরাপত্তা আইন' প্রণয়নসহ বিভিন্ন দাবি জানিয়েছে রোড সেফটি কোয়ালিশন বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানিয়েছেন হেলথ সিস্টেম রিসার্চ ডিভিশন অ্যান্ড আরটিআই প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ ইউনিটের পরিচালক সেলিম মাহমুদ চৌধুরী। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত প্রবন্ধে সেলিম মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের প্রচলিত 'সড়ক পরিবহণ আইন ২০১৮'-তে বেশকিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। বর্তমান আইনটিতে মূলত পরিবহণ ব্যবস্থার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এতে প্রচলিত সড়ক ব্যবহারকারীর আচরণগত ঝুঁকিগুলো যেমন- বেপরোয়া গতি, হেলমেট ব্যবহার না করা, মদ্যপ বা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো, শিটবেল্ট বা চাইল্ড রেস্ট্রিয়েন্ট ব্যবহার না করা ইত্যাদি বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা যথাযথভাবে উলেস্নখ করা হয়নি। প্রচলিত আইনে জাতিসংঘ ঘোষিত ডিকেড অব অ্যাকশন ফর রোড সেফটি ২০২১-২০৩০ এ উলিস্নখিত মাল্টিমোডাল ট্রান্সপোর্ট বা বহুমুখী পরিবহণ ব্যবস্থা ও ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা, নিরাপদ সড়ক অবকাঠামো, নিরাপদ যানবাহন, নিরাপদ সড়ক ব্যবহারকারী এবং রোডক্র্যাশ পরবর্তী সাড়া প্রদান ও ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বের বিষয়ে কিছু উলেস্নখ করা হয়নি বলে জানান তিনি। এ ছাড়াও বর্তমান আইনে ঝুঁকিপূর্ণ সড়ক ব্যবহারকারী যেমন- পথচারী, সাইক্লিস্ট, শিশু এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন বা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সুরক্ষার বিষয়টি উপেক্ষিত হয়েছে। যথাযথ মানদন্ড অনুসরণ করে রোড ক্র্যাশের তদন্ত করা এবং রেকর্ড সংরক্ষণ করার বিষয়ে বর্তমান আইনি কাঠামোতে কোনো বিধান রাখা হয়নি বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা একটি মন্ত্রণালয় কিংবা একটি দপ্তরের একার কাজ নয়। এতে অনেকগুলো মন্ত্রণালয় ও সরকারি দপ্তরের সক্রিয় অংশগ্রহণ যেমন দরকার তেমনই প্রয়োজন লিড এজেন্সি নির্ধারণ করা, যা আইনি কাঠামোর দ্বারা স্বীকৃত হতে হবে। বর্তমান আইনি কাঠামোতে সড়ক নিরাপত্তা কার্যক্রমকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য কোনো লিড এজেন্সি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে কিছু উলেস্নখ নেই। সংবাদ সম্মেলনে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, শুধু আইন করলেই হবে না, আইনের বাস্তবায়ন করতে হবে। যেসব আইন আছে তার কিছুটাও যদি বাস্তবায়ন হতো, তাহলেও কিছুটা উন্নতি হতো। বর্তমান বাস্তবতার আলোকে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ সময় বিভিন্ন দাবি তুলে ধরা হয়। সংবাদ সম্মেলনে সিআইপিআরবি এর রোড সেফটি প্রকল্পের ব্যবস্থাপক কাজী বোরহান উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ এনজিওস নেটওয়ার্ক ফর রেডিও অ্যান্ড প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এএইচএম বজলুর রহমান, ব্র্যাকের সড়ক নিরাপত্তা কর্মসূচি প্রোগ্রাম ম্যানেজার এম খালিদ মাহমুদ, স্টেপস টুয়ার্ডস ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক রঞ্জন কর্মকার, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ প্রকল্প কর্মকর্তা ওয়ালী নোমান, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রকল্প কর্মকর্তা শরাফত-ই-আলম, ঢাকা আহছানিয়া মিশনের প্রকল্প সমন্বয়কারী শারমিন রহমান, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক বজলুর রহমানসহ প্রমুখ।