ঢাবিতে বিপস্নবের গ্রাফিতি দেখলেন প্রধান উপদেষ্টা

প্রকাশ | ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
ছাত্র-জনতার অভু্যত্থানের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার দেওয়ালগুলোতে বিপস্নবীদের আঁকা গ্রাফিতি বুধবার ঘুরে দেখেন অন্তর্র্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস -ফোকাস বাংলা
ছাত্র-জনতার অভু্যত্থানের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার দেওয়ালগুলোতে বিপস্নবীদের আঁকা গ্রাফিতি ঘুরে ঘুরে দেখেছেন অন্তর্র্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার দেয়ালে আঁকা এসব গ্রাফিতি ঘুরে দেখেন তিনি। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার অভু্যত্থানের পস্ন্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও অন্তর্র্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ এবং আন্দোলনের লিয়াজোঁ কমিটির সমন্বয়ক ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম। এ ছাড়া অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্র্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। গত জুলাইয়ের শুরুর দিকে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। তখন তা দমনে প্রথমে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগকে মাঠে নামানো হয়। এরপর শেখ হাসিনার সরকার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করে। এ কারণে ওই আন্দোলন রূপ নেয় সরকার পতনের আন্দোলনে। এক পর্যায়ে ছাত্র-জনতার অভু্যত্থান ঘটে। এই অভু্যত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটে। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে পালিয়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। তার সরকারের অনেক মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের নেতাদের অনেকে বিদেশে পালিয়ে গেছেন। কেউ কেউ গা ঢাকা দিয়েছেন। সেই আন্দোলনে সরকারের হিসাব মতে, অনেক শিশু-কিশোরসহ ৭৩৭ জনের মৃতু্য হয়েছে। যদিও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্বাস্থ্য বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির তথ্য মতে, আন্দোলনে শহীদের সংখ্যা এক হাজার ৪২৩ জনের বেশি। এছাড়া সরকারের হিসাবে, আহত হয়েছেন ২৩ হাজারের বেশি মানুষ। এদের মধ্যে ৪০০ জন চোখ হারিয়েছেন। দুই চোখ হারিয়েছেন ২০০ জন। ঢাকা-থিম্পু বাণিজ্য সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ এদিকে, বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ভুটানের রাষ্ট্রদূত রিনচেন কুয়েনসিল সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, 'আমরা আমাদের সম্পর্ক জোরদার দেখতে চাই।' বৈঠকে দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে বাণিজ্য বাড়ানোর উপায়, বাংলাদেশে ভুটানের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, পারস্পরিক স্বার্থের অন্যান্য ক্ষেত্র এবং নেপালের বৌদ্ধ ধর্মে বাংলার প্রভাব নিয়ে আলোচনা হয়। ভুটানের রাষ্ট্রদূত ২০২০ সালে দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তির (পিটিএ) প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যার সঙ্গে ভুটানের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত রয়েছে। তিনি বাণিজ্য বাড়ানোর বিশাল সুযোগ রয়েছে উলেস্নখ করে পিটিএ'তে আরও পণ্য অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানান। রাষ্ট্রদূত কুড়িগ্রামে ভুটানের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) প্রশংসা করে বলেন, ভুটান ইতোমধ্যে সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী একটি ওয়ার্কিং গ্রম্নপ গঠন করেছে। বাংলাদেশি বৌদ্ধ ভিক্ষু ও পন্ডিতরা কীভাবে তিব্বত, নেপাল ও ভুটানে বৌদ্ধ ধর্ম প্রচার করেছিলেন রাষ্ট্রদূত কুয়েনসিল তা স্মরণ করেন। তিব্বতে বৌদ্ধ ধর্মকে পুনরুজ্জনকারী দশম শতাব্দীর সন্ন্যাসী অতীশ দীপঙ্কর এবং তার পূর্বপুরুষ অষ্টম শতাব্দীর সন্ন্যাসী শান্তিরক্ষিত সম্পর্কে কথা বলেন। দু'জনেরই জন্ম বাংলাদেশের আধুনিক মুন্সীগঞ্জ জেলায়। তিনি বলেন, ১৫ শতকের প্রথম দিকে বাংলাদেশে জন্ম নেওয়া বানরত্ন ভুটান সফর করেছিলেন এবং সেখানে একটি বুদ্ধমূর্তি ও একটি মঠ স্থাপন করেছিলেন। রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, বানরত্নকে এখনো তার দেশের মানুষ শ্রদ্ধা করে। \হবৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব ও মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ইশরাত জাহান।