ছাত্র আন্দোলনে নিহত আবু সাঈদ নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ

প্রকাশ | ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

বেরোবি প্রতিনিধি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। সোমবার বিকালে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) প্রকাশিত ফলাফলে এ তথ্য জানা গেছে। গত ১১ জুলাই আবু সাঈদ নিহত হওয়ার আগে ক্যাম্পাস থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনে মিছিল নিয়ে বের হতে চাইলে ছাত্রলীগ বাধা দেয়। একপর্যায়ের তাকে চড়-থাপ্পড় দেওয়া হয়। ওইদিন আবু সাঈদকে গলা টিপে ধরার ঘটনাও ঘটে। এই ট্রমা নিয়ে পরদিন পরীক্ষায় বসেন আবু সাঈদ। আবু সাঈদের সঙ্গে আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী বাংলা বিভাগের শামসুর রহমান সুমন বলেন, '১২ জুলাই ছিল আবু সাঈদ ভাইয়ের নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা। ওই দিন সকালে আমাদের মিটিং করার কথা ছিল। আবু সাঈদ ভাই বলছিলেন, আমার জীবনের এটা প্রথম পরীক্ষা। পরীক্ষা দিবো কিনা? আন্দোলনের কারণে কিছুই পড়া হয়নি। বললাম, ভাই পরীক্ষা দিয়ে আসেন আমরা বিকালে মিটিং করব। আগের দিন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের চড়-থাপ্পড়ের স্ট্রেস নিয়ে পরীক্ষা দেন সাঈদ ভাই। আজ ফল প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু আবু সাঈদ ভাই নাই। আমরা শুধু বীর সাঈদ ভাইকেই হারাইনি, হারিয়েছি মেধাবী একজন শিক্ষার্থীকেও।' ইংরেজি বিভাগের সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, 'আবু সাঈদ পড়াশোনায় মনোযোগী ছিল। ওর টার্গেট ছিল জীবনে ভালো কিছু করার। কিন্তু অধিকার আদায় করতে গিয়ে নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছে। সে আজ বেঁচে থাকলে হয়তো বা ভালো কিছু করত।' এনটিআরসিএ সূত্রে জানা যায়, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) এর ব্যবস্থাপনায় অষ্টাদশ শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা ২০২৩-এর স্কুল (নিম্নমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান/দাখিল ও তদূর্ধ্ব পর্যায়ের মাদরাসা) ও স্কুল-২ (মাধ্যমিক কারিগরি ও ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট, উচ্চ মাধ্যমিক কারিগরি ও ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট এবং কারিগরি ডিপেস্নামা ইনস্টিটিউট) পর্যায়ের লিখিত পরীক্ষা ১২ জুলাই ও কলেজ (কলেজ, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিকোত্তর/উচ্চ মাধ্যমিক কারিগরি/ভোকেশনাল/ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান/ইনস্টিটিউট এবং আলিম ও তদূর্ধ্ব পর্যায়ের মাদরাসা) পর্যায়ের লিখিত পরীক্ষা ১৩ জুলাই অনুষ্ঠিত হয়। প্রসঙ্গত, এই পরীক্ষায় তিন লাখ ৪৮ হাজার ৬৮০ পরীক্ষার্থী অংশ নেন। এর মধ্যে স্কুল ও সমপর্যায়ের ৫৫ হাজার ৮৯০ জন, স্কুল-২ পর্যায়ের পাঁচ হাজার ৩২৩ জন এবং কলেজ ও সমপর্যায়ের ২২ হাজার ৬৫২ জনসহ মোট ৮৩ হাজার ৮৬৫ জন লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।