দেশে স্বাস্থ্যসেবা সুরক্ষা আইন অতি জরুরি

গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা

প্রকাশ | ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
'দেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে বরাদ্দ অপ্রতুল। যা বরাদ্দ আছে সেটিও ঠিকভাবে ব্যবহার হচ্ছে না। এছাড়াও এই স্বাস্থ্যসেবা নিতে গিয়ে মানুষ সর্বস্বান্ত হয়ে যাচ্ছে। তার ওপর দুর্নীতির বেড়াজালে এই খাত রুগ্‌ণ হয়ে পড়েছে। তাই দেশে স্বাস্থ্যসেবা সুরক্ষায় একটি আইন অতি জরুরি হয়ে পড়েছে।' শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে 'অপ্রতুল বাজেট এবং দুর্নীতির বেড়াজাল: স্বাস্থ্যখাতের রুগ্‌ণদশা' শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন। নাগরিক সংগঠন 'সুস্বাস্থ্যের বাংলাদেশ' এ গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে। এ সময় বক্তারা জবাবদিহিমূলক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য যৌক্তিক মতামত রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের কাছে পৌঁছানোর আহ্বান জানান। এছাড়াও বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের অপ্রতুল বাজেট ও দুর্নীতির বেড়াজালে আটকেপড়া বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষজ্ঞরা স্বাস্থ্যখাতের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ও সমস্যা বিশ্লেষণ করেন। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. এমএইচ চৌধুরী লেলিন বলেন, আমাদের বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ একেবারেই অপ্রতুল। এটা বাড়ানো হোক। দেশে একটি স্বাস্থ্যসেবা সুরক্ষা আইন অতি জরুরি হয়ে পড়েছে। সেখানে পক্ষসমূহের দায়িত্ব ও দায় নির্ধারণ করা থাকবে। দেশের স্বাস্থ্য শিক্ষার মান নির্ধারণ এবং মেডিকেল টু্যরিজম বিষয়ে গুরুত্ব দিতে স্বাস্থ্য খাতের নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। ডা. আতিয়ার রহমান বলেন, স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতি সরকারি ও বেসরকারি, উভয়ক্ষেত্রেই ঘটেছে। ইসলামি ব্যাংক হাসপাতালের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, এস আলম গোষ্ঠী এই হাসপাতালটির দখল নিয়েছিল এবং বড় মাত্রায় দুর্নীতি করেছিল। তিনি এসব দুর্নীতি তদন্তের আহ্বান জানান। বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের স্বাস্থ্যখাতে অপ্রতুল বাজেট সত্ত্বেও এখানে কিন্তু দুর্নীতি ঠিকই হয়েছে। তিনি তাই এই খাতে দুর্নীতি নির্মূলে অধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে পরামর্শ দিয়েছেন। বিশেষ করে নিয়োগ বাণিজ্যের মতো দুর্নীতি বন্ধ করতে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা ব্যক্ত করেন তিনি। দেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থা স্মরণ করিয়ে দিয়ে ডা. রফিকুল বলেন, দেশের মানুষের ব্যক্তিগত ব্যয়ের প্রায় ৪৪ শতাংশ চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যয় করতে হচ্ছে। এমতাবস্থায় এখাতে আরও বরাদ্দ জরুরি বলে অভিমত দেন তিনি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন সুমন বলেন, বাজেট ব্যয়ের ক্ষেত্রে যে দক্ষতা প্রয়োজন, সেটাতে আমাদের ঘাটতি রয়েছে। বাজেট ব্যয়ের ক্ষেত্রে যদি দক্ষতার অভাব থাকে সেটাও কিন্তু অন্য একজনের জন্য দুর্নীতির সুযোগ করে দেয়। দক্ষতা বৃদ্ধিতে এরই মধ্যে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ডা. কাজী সাইফউদ্দীন বেননূরের সভাপতিত্বে বৈঠকে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ লাং ফাউন্ডেশনের ট্রেজারার অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুস শাকুর খান। এতে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ইউনিসেফের ন্যাশনাল কনসালটেন্ট ডা. মো. আব্দুর রাজ্জাকুল আলম। এই খাতের বিভিন্ন দুর্নীতি ও এর ভূমিকা নিয়ে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন এমিনেন্স অ্যাসোসিয়েটস ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. মো. শামীম হায়দার তালুকদার।