শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক সাইফুল ইসলাম ওএসডি

প্রকাশ | ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

বরিশাল অফিস
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে পদত্যাগ করা আলোচিত পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলামকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ওএসডি করা হয়েছে। বুধবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. আবু রায়হান দোলন স্বাক্ষরিত বদলিসংক্রান্ত ওই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এ ঘটনায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করার পাশাপাশি হাসপাতালের নতুন পরিচালক পদে সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকরা। বদলিসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন সূত্রে জানা যায়, শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলামকে অবিলম্বে আর্থিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব তার পরবর্তী কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তরপূর্বক আগামী দুই কর্মদিবসের মধ্যে বদলীকৃত কর্মস্থলে যোগদান করতে হবে। অন্যথায় তৃতীয় কর্মদিবসে বর্তমান কর্মস্থল তাৎক্ষণিক অব্যাহতি (স্ট্যান্ড রিলিজ) মর্মে গণ্য হবে। এর আগে নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডে জড়িয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের আন্দোলনের মুখে গত ২৯ সেপ্টেম্বর পদত্যাগ করেন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম। জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে হাসিনা সরকারের পক্ষাবলম্বন ও দুর্নীতির অভিযোগে তার পদত্যাগ দাবিতে হাসপাতাল ক্যাম্পাসে মানববন্ধন ও শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে তিনি পদত্যাগে বাধ্য হন। শেবাচিম কলেজের শির্ক্ষাথীরা জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে গত ৩ আগস্ট পরিচালক সাইফুল ইসলামসহ তার অনুসারীরা স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের পক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে। তখন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দমাতে নানান অপকর্ম করেছেন তিনি। এছাড়াও তিনি নানান দুর্নীতি ও অনিয়মে জড়িত। হাসপাতালের সব টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ, টাকা লুটপাট করা, সৎ, যোগ্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নানানভাবে হয়রানি করেছেন তিনি। তাছাড়া দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম চিকিৎসা সেবাকেন্দ্র বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে রোগীদের জায়গা সংকট। তার মধ্যে ওএসডি হওয়া পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম নিজ ভাইয়ের চাকরির জন্য বেসরকারি একটি ব্যাংককে অনিয়মের মাধ্যমে নতুন ভবনের নিচতলার অর্ধেকাংশ বরাদ্দ দিয়ে দেন। অথচ হাসপাতালের সরকারি কোনো স্টাফের বেতন বা লেনদেন সেই ব্যাংকে হয় না। তাই হাসপাতালের উন্নয়নে তার পদত্যাগ সময়ের দাবি ছিল। এদিকে তার ওএসডির খবরে এখানে পরবর্তী পরিচালক হিসেবে সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা চাচ্ছেন শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকরা। এরই মধ্যে তারা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, সিনিয়র সচিব ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে এই দাবি জানিয়ে লিখিত দিয়েছেন। তাদের দাবি প্রশাসনিক দুর্বলতা, অবহেলা, সিন্ডিকেট বাণিজ্য, রাজনৈতিক দাপট ও দুর্নীতির কারণে হাসপাতালের বেহাল অবস্থা। হাসপাতালে প্রবেশ থেকে শুরু করে পদে পদে হয়রানি ও অবহেলার শিকার হচ্ছে রোগীরা, যার ক্ষোভ গিয়ে পড়ছে কর্মরত চিকিৎসকদের ওপর। তাই স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়ন, রোগী হয়রানি বন্ধ ও চিকিৎসক নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য হাসপাতালের পরিচালক পদে সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা প্রয়োজন।