খিলক্ষেতে সেনাবাহিনীর হাতে অস্ত্রসহ হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তার
প্রকাশ | ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
বিমানবন্দর/দক্ষিণখান প্রতিনিধি
রাজধানীর খিলক্ষেত লেকসিটি কনকর্ড ছায়ানীড় ভবনের একটি ফ্ল্যাট থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মাদক, অস্ত্র ও নগদ অর্থ উদ্ধার ও অস্ত্রসহ হত্যা মামলার আসামি নাফিস মো. আলম ডনকে গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। সোমবার রাতে বনানী ১১-এর সেলসিয়াস বারের সামনে থেকে ডনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার খিলক্ষেতের বাসা থেকে মো. সুজন নামে এক সহযোগীকে আটক করা হয়।
দিয়াবাড়ি সেনা ক্যাম্পের একজন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, 'নাফিসের বাংলাদেশ ও কানাডার নাগরিকত্ব রয়েছে। কানাডার পাসপোর্ট দেখিয়ে সে নিজেকে ফরেনার হিসেবে পরিচয় দিয়ে বিদেশি মদ ব্যবসার সাম্রাজ্য তৈরি করেছে। বনানী ১১-এর সেলসিয়াস শিশা বার ও একই রোডের বনানী ফার্মাসিসহ বেশ কিছু নামিদামি বার ও ক্লাবে সে মদ সরবরাহ করে। তার মদ সরবরাহের কোম্পানির নাম 'সিন্ডিকেট ইন্টারন্যাশনাল।'
জানা যায়, বসুন্ধরা, বারিধারা, গুলশান, বনানী এলাকাসহ ঢাকার বেশ কিছু স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যেও সে এই মদের চালান জোগায়। সে নিজেকে ডন বলে পরিচয় দিতে বেশি পছন্দ করে। তার ফেসবুক প্রোফাইল ঘাটলে কেউ বিশ্বাসই করবে না বাংলাদেশের মতো একটি দেশে এভাবে জনসমক্ষে কেউ অস্ত্র, মদ, নারী ইত্যাদি নিয়ে উন্মাদনা ছড়াতে পারে? বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রদের বিরুদ্ধে তার শটগান দিয়ে ফায়ারের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হলে সে সেই ভিডিও দিয়ে নিজের আধিপত্য আরও বেশি জাহির করার চেষ্টা করে।
প্রাথমিক তদন্তের সূত্র উলেস্নখ করে ওই কর্মকর্তা জানান, নাফিসের কাছে পাওয়া পিস্তলটি ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থানা থেকে লুট হওয়া পুলিশের পিস্তলগুলোর মধ্যে একটি। তবে কোন থানা থেকে এটি লুট করা হয়েছে, সে বিষয়ে তদন্ত চলছে। নাফিসের এই সাম্রাজ্যে জড়িত রয়েছে তার স্ত্রীসহ আরও অনেকেই।
দিয়াবাড়ি সেনা ক্যাম্পের দায়িত্বরত কর্মকর্তা আরও বলেন, 'নাফিসকে গ্রেপ্তার করার জন্য আমরা অনেক দিন ধরে চেষ্টা করছিলাম। সে এতটাই উন্মাদ যে, নিয়মকানুন ও আইনের তোয়াক্কা করে না। তাকে গ্রেপ্তার করার মাধ্যমে মাদক চোরাকারবারিদের প্রতি আমরা একটি শক্ত বার্তা দিতে পেরেছি বলে মনে করি। আমাদের এই প্রচেষ্টা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।'
নাফিসের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হত্যা মামলাসহ ৭টি মামলা রয়েছে। অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার ও মাদকদ্রব্য সেবন আইনের আওতায় তার বিরুদ্ধে খিলক্ষেত থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলেও ওই কর্মকর্তা জানান।