স্বৈরাচারের দোসররা প্রশাসনের মধ্যে থাকলে দেশকে তারা বিপজ্জনক পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির উদ্যোগে ডেঙ্গু প্রতিরোধে গণসচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণকালে সাংবাদিকদের সামনে তিনি এসব কথা বলেন।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম উর্মি প্রসঙ্গে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আরও বলেন, একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লালমনিরহাটের উর্মি তিনি আবু সাঈদের মতো একজন মহিমান্বিত আত্মদানকারী, সাহসী বীর তরুণ ছাত্র যে অকাতরে নিজের জীবন দিয়েছে, বুক চিতিয়ে হাসিনার পুলিশের গুলি বরণ করেছে তাকে বলছে সন্ত্রাসী। তাকে বলছে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী। উর্মির মতো লোকজনই তো প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় আছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তো প্রশাসনের একটি অংশ। আজকে সচিবালয় থেকে শুরু করে বিচারালয় থেকে শুরু করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কীভাবে স্বৈরাচারের দোসররা একটি বিপস্নবের সরকারকে, একটি গণ-আন্দোলনের সরকারকে ব্যর্থ করতে চাইবে সেটা তো আমরা প্রত্যেকেই জানি।
অন্তর্র্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'আপনারা মহানুভবতা, মানবতা অবশ্যই রাখবেন কিন্তু যারা নিজেরা মানবতা দেখায়নি, যারা মহানুভবতা দেখায়নি, যারা শেখ হাসিনাকে উদ্বুদ্ধ করেছে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতাকে গুলি করতে সেই স্বৈরাচারের দোসর যদি প্রশাসনের মধ্যে থাকে তারা আপনাদের প্রতি পদে পদে বাধা দেবে। তাদের অতি দ্রম্নত চিহ্নিত করে গণতন্ত্রকামী মানুষের পক্ষে যারা ছিল অথবা যারা নিরপেক্ষ ছিল তারা যে দলেরই সমর্থক হোক না কেন এসব মেধাবী লোকদের আপনারা প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় বসান। সেটা না হলে দেশকে তারা বিপজ্জনক পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাবে। কারণ, তাদের পিছে একটি বিশেষ পরাশক্তির প্রভু আছে যাদের আশ্রয়ে তারা আছে।'
রিজভী বলেন, পতিত স্বৈরাচারের পুনরুত্থান যাতে না ঘটে। আর যেন কোনো মায়ের বুক খালি না হয়। শেখ হাসিনার পুনরুত্থান মানে দেশ হবে এক ভয়ংকর বধ্যভূমি। এই বধ্যভূমি যাতে তৈরি না হয় তাই অন্তর্র্বর্তী সরকারকে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে যেতে হবে।
প্রশাসনে যাদের নতুন প্রমোশন হচ্ছে তাদের উদ্দেশে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, প্রশাসনে যাদের নতুন প্রমোশন হচ্ছে যারা দীর্ঘদিন বঞ্চিত ছিলেন এবং যাদের পদায়ন হচ্ছে তাদের উদ্দেশে বলতে চাই আওয়ামী প্রশাসন লুট করেছে জনগণের টাকা। অনেকেই কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে। আপনারা বঞ্চিত ছিলেন আপনাদের চিহ্নিত করা হয়েছিল বিরোধী দলের লোক হিসেবে। কিন্তু আওয়ামী লীগ যে কায়দায় করেছে তাদের একেক জন সচিব আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার কাহিনী। একজন ডিসি বা অ্যাডিশনাল কমিশনার কিংবা প্রশাসনের অন্য কর্মকর্তারা শেখ হাসিনার আমলে যে কাজ করেছে আপনারাও যদি সেই পথ অনুসরণ করেন তাহলে আপনাদেরও ধিক্কার জানানোর ভাষা নেই। আপনারা যদি মনে করেন আমরা এত দিন বঞ্চিত ছিলাম এখন ভাগবাটোয়ারা করে সেটি পূরণ করব। তাহলে কিন্তু এই জাতি চিরদিনের জন্য অন্ধকারে চলে যাবে এবং ওই যে পতিত স্বৈরাচার নানাভাবে আসার চেষ্টা করবে।'
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দীন আলম, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা জাহিদুল কবির, যুবদল নেতা মেহবুব মাসুম শান্ত, আরিফুর রহমান তুষার, ছাত্রদলের নেতা আব্দুল আউয়াল, মাসুদুর রহমান মাসুদ, রাজু আহমেদ প্রমুখ।