মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, 'পাহারা দিয়ে উৎসব উদযাপন আনন্দময় হয় না। পুলিশ দিয়ে, আনসার দিয়ে আমরা পূজাটাকে আনন্দময় করব- এটা হয় না। এটা আসলেই একটা আনন্দের, হিন্দু-মুসলিম সবাই মিলে আমরা আনন্দ করব। সেজন্য সামাজিক একটা পরিবেশ তৈরি করতে হবে- যেন সবাই আনন্দটা করতে পারি। এখানে রাজনৈতিক দলের যারা রয়েছেন, তারাও যেন সহযোগিতা করি। তাহলে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পূজার আনন্দটা উপভোগ করতে পারব।
সোমবার দুপুরে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে পূজা উদযাপন পরিষদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। ফরিদা আখতার বলেন, 'বিদু্যৎ বিভাগের দায়িত্বে যারা আছেন, তাদেরকে অনুরোধ করব পূজা চলাকালে বিদু্যৎ বিভ্রাট যেন না হয়। যদি কোনো কারণে সমস্যা হয়- তাহলে বিকল্প ব্যবস্থা রাখতে হবে।' এ সময় তিনি জামাতে নামাজের সময় মাইক বন্ধ রাখার অনুরোধ করেন।
উপদেষ্টা বলেন, 'বাংলাদেশ একটা সম্প্রীতির দেশ। আমিও মনে করি দেশে সংখ্যালঘু বা সংখ্যা গরিষ্ঠ বলে কিছু নেই। সবাই আমরা একটা পরিবার। আশাকরি আমরা ভালো একটা পূজা উদযাপন করতে পারব।' স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, 'চট্টগ্রামে আমার বাড়ি হলেও অনেকে বলেন- টাঙ্গাইল আমার বাপের বাড়ি। ১৯৮৭ সাল থেকে আমি টাঙ্গাইলে কাজ করার সুবাদে এটা হয়েছে।'
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, 'মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী না থাকলে বাংলাদেশ হতো কি-না সন্দেহ আছে। তিনি বিশ্বের দরবারে টাঙ্গাইলকে পরিচিত করেছেন। মওলানা ভাসানীর জীবনী সকল পাঠ্যপুস্তকে থাকা দরকার- এজন্য যদি আমাকে মানববন্ধন কর্মসূচিতে দাঁড়াতে হয়, দাঁড়াব।'
জেলা প্রশাসক শরীফা হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম সানতু, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মো. শিহাব রায়হান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এএম জহিরুল হায়াত, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার গুন ঝন্টু, টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় কালীমন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক জীবন কৃষ্ণ চৌধুরী, সদর উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি চিত্তরঞ্জন সরকার, সাধারণ সম্পাদক দীলিপ কুমার দাস, টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাবের সভাপতি জাফর আহমেদ প্রমুখ।
সভায় জেলা ও ১২টি উপজেলার পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, হিন্দু ধর্মীয় বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন শ্রেণিপেশার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে তিনি জেলার দেলদুয়ার উপজেলার বিষ্ণুপুরে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা উবীনীগ কার্যালয়ে যান। পরে একই উপজেলার পাথরাইলে স্থানীয় পূজা উদযাপন পরিষদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।