আজকের যায়যায়দিন

জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মুখে সরকার পতনের সময় থেকে র?্যাবের একজন সদস্যও 'আত্মগোপনে নেই' বলে জানিয়েছেন এ বাহিনীর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস।

ছাত্র-জনতার ওই আন্দোলনে র?্যাব কোনো ধরনের 'প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করেনি' বলেও দাবি করেছেন তিনি।

এইর্ যাব কর্মকর্তা বলেন, '৫ আগস্ট পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ের্ যাবের কোনো সদস্যই পালিয়ে যায়নি, কর্মবিরতিতেও যায়নি।'

রোববার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র?্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন মুনীম ফেরদৌস।

তিনি বলেন, 'আপনারা জানেন,র্ যাব একটি কম্পোজিট ফোর্স। এখানে প্রায় ৮টা বাহিনী থেকে আমাদের সদস্যরা আসেন। এর মধ্যে প্রায় ৪৪ শতাংশ আসেন পুলিশ থেকে। এখানে সবচেয়ে বড় অংশটাই পুলিশের। অলমোস্ট ৫০ ভাগের কাছাকাছি, অর্ধেক।র্ যাব কিন্তু ছোট একটা বাহিনী। ১০ হাজার পস্নাস-মাইনাস একটা ফোর্স। এই ১০ হাজার ফোর্সের মধ্যে ৪৪ ভাগ পুলিশ। আমরা প্রথম থেকে যেভাবে একসঙ্গে ছিলাম, আমরা শেষ পর্যন্ত একসঙ্গে ছিলাম। এখানে অনেকের অনেক ধরনের সমস্যা ছিল, কিন্তু আমাদেরর্ যাব ফোর্সেসে কখনোই কোনো সমস্যা হয় নাই।'

৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের ১৮৭ জন সদস্য এখনো কর্মস্থলে যোগ দেননি বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। তবের্ যাবের মতো বিজিবিও বলেছে, তাদের কোনো সদস্য অনুপস্থিত নেই।

র?্যাব বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে 'ছিল' দাবি করে ফেরদৌস বলেন, 'এর আগেও আমি বলেছি, ছাত্র-জনতার ওপরের্ যাবের কোনো সদস্য লিথ্যাল উইপন (প্রাণঘাতী অস্ত্র) ব্যবহার করেনি। সেইভাবে সাধারণ ছাত্র-জনতার যে আন্দোলন ছিল, সেটার সঙ্গে আমরা ছিলাম, সেটার সঙ্গে আমরা আছি।'

গণ-অভু্যত্থান সফল করতেও 'করণীয় সব কিছুই করা হচ্ছে' বলে মন্তব্য করেছেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফেরদৌস।

গত ১৮ জুলাই কমপিস্নট শাটডাউন কর্মসূচিতে সংঘর্ষ ও পুলিশের গুলিতে বেশ কয়েকজনের প্রাণহানির পরদিনর্ যাবের হেলিকপ্টার আকাশে উড়তে দেখা যায়। আকাশ থেকে আন্দোলনকারীদের গুলি করা হয়েছে, এমন অভিযোগ ওঠে।

সে সময়ের আওয়ামী লীগ সরকার বিষয়টি অস্বীকার করে। পরের্ যাবও ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করে।

'প্রতিদিনই রাঘববোয়ালদের ধরছি'

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবের্ যাবের মুখপাত্র ফোরদৌস বলেন, 'বড় পর্যায়ের ৩৯ জন নেতাকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। যারা মামলার এক-দুই নাম্বার আসামি। প্রতিদিনই রাঘববোয়ালদের ধরছি। সব মিলিয়ে ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে আমরা ১ হাজার ১৭০ জনকে গ্রেপ্তার করেছি।'

অভিযানে এখন পর্যন্ত ২১৯টি অস্ত্র ও ১০ হাজার ৬৪২ রাউন্ড গুলি উদ্ধারের কথা জানিয়ে ফেরদৌস বলেন, 'আমাদের এই কার্যক্রম চলমান আছে।'

অপহৃত শিশু উদ্ধার

সংবাদ সম্মলনে ঢাকার সদরঘাট থেকে অপহৃত প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী আব্দুলস্নাহ আল নূর তুষারকে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থেকে উদ্ধারের কথা জানান লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস।

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার আমরাগাছি হোগলপাতি এলাকা থেকে তুষারকে শনিবার রাতে র?্যাব উদ্ধার করে।

ফেরদৌস বলেন, গত ৩০ সেপ্টেম্বর সদরঘাটের সোয়ারীঘাট এলাকা থেকে আট বছর বয়সি তুষারকে অপহরণ করা হয়েছিল।

'তিনি আরও বলেন, তুষারের মায়ের সঙ্গে অপহরণকারী বাদল ওরফে হৃদয় নামের এক তরুণের পরিচয় হয় মোবাইল ফোনে। পরিচয়ের সুবাদে ঘটনার দিন তুষারকে নিয়ে তার মা সোয়ারীঘাট এলাকায় বাদলের সঙ্গে দেখা করতে যান। ওই সময় চিপস কিনে দেওয়ার কথা বলে কৌশলে তুষারকে অপহরণ করে নিয়ে যায় বাদল।'

এরপর তুষারের মা ঢাকার কোতোয়ালি থানায় জিডি করেন। গত বুধবার এক ব্যক্তি তুষারের মাকে ফোন করে ছেলের জন্য দুই লাখ টাকা দাবি করেন। ওই ফোনের পর তুষারের বাবা থানায় মামলা করেন।

ফোরদৌস জানান, অভিযানের সময়র্ যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে আসামিরা পালিয়ে যায়, তবে তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।