এবারের শারদীয় দুর্গাপূজায় কোনো নিরাপত্তাঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছেন অন্তর্র্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। রোববার বিকালে রমনা কালীমন্দির পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, দুর্গাপূজা যেন ভালোভাবে নির্বিঘ্নে হয়, সেজন্য আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ৮ দফা নির্দেশনা প্রতিটি পূজামন্ডপে পাঠিয়েছি।
এছাড়া বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি, এসপি, ডিসি, ইউএনও, ওসিসহ আমাদের প্রশাসনে যারা রয়েছেন, সবাইকে আমরা নির্দেশনা পাঠিয়েছি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, পূজা কমিটি ভালো আয়োজন করেছে। তারা এখানে ২৪ ঘণ্টা স্বেচ্ছাসেবী দিয়েছে। স্বেচ্ছাসেবীরা ২৪ ঘণ্টা থাকবেন। এবার কোনো ধরনের নিরাপত্তাঝুঁকি নেই। পূজা এবার নির্বিঘ্নে হবে। এ সময় উসকানির বিরুদ্ধে সত্য ঘটনা তুলে ধরতে গণমাধ্যমকে আহ্বানকে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
মন্ডপে ব্যাগ সঙ্গে না রাখার অনুরোধ
এদিকে, বাঙালি হিন্দুদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার নিরাপত্তা নিশ্চিতে দর্শনার্থীদের ব্যাগ, থলে বা পোটলা নিয়ে মন্ডপে প্রবেশ না করতে অনুরোধ করেছে পুলিশ সদর দপ্তর।
রোববার এক বার্তায় এ অনুরোধ জানিয়ে পূজা ঘিরে সোশাল মিডিয়ায় গুজব ছড়ানো থেকে বিরত থাকাসহ কয়েকটি পরামর্শও দেওয়া হয়েছে এ বাহিনীর পক্ষ থেকে।
গত ২ অক্টোবর মহালয়ায় দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গাকে মর্ত্যে আহ্বান জানানোর মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে শারদীয় দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। এরপর ৯ অক্টোবর ষষ্ঠী, ১০ অক্টোবর সপ্তমী, ১১ অক্টোবর অষ্টমী ও ১২ অক্টোবর নবমী এবং ১৩ অক্টোবর দশমী শেষে হবে দেবী বিসর্জন।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা হয়, যা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে। তবে দুর্গাপূজা ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তা প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে আশ্বস্ত করেছে পুলিশ।
পুলিশের যত পরামর্শ : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন- ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব, বস্নগ এবং মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যেন কোনো অমূলক ঘটনা বা গুজব সৃষ্টি করে কিংবা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সামাজিক শান্তি বিনষ্ট করতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক থাকা। এ ধরনের পরিস্থিতির উদ্ভব হলে পুলিশকে অবিলম্বে অবহিত করতে হবে।
পূজামন্ডপে আসা নারী ও পুরুষ দর্শনার্থীদের জন্য পৃথক প্রবেশ ও প্রস্থান পথের ব্যবস্থা করতে হবে। পূজামন্ডপে কোনো ব্যাগ, থলে বা পোটলা নিয়ে প্রবেশ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। মন্ডপে সিসি ক্যামেরা ও অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র স্থাপন করতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ পূজামন্ডপে আর্চওয়ে গেট স্থাপন করতে হবে। পূজামন্ডপে এবং প্রতিমা বিসর্জনস্থলে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখা এবং সম্ভব হলে 'স্ট্যান্ডবাই জেনারেটর অথবা হ্যাজাক লাইটের ব্যবস্থা রাখতে হবে। পূজা চলাকালে আতশবাজি ও পটকা ফাটানো থেকে বিরত থাকতে হবে। পূজামন্ডপের নিরাপত্তায় স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করে তাদের আলাদা পোশাক, দৃশ্যমান পরিচয়পত্র ও 'স্বেচ্ছাসেবক' লিখিত আর্মড ব্যান্ড প্রদান করতে হবে। প্রতিমা বিসর্জনের সময় শোভাযাত্রার নির্ধারিত রুট ব্যবহার করতে হবে। পুলিশের সহায়তা প্রয়োজন হলে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের কন্ট্রোল রুমের ০২২৩৩৮০৬৬১, ০২২৩৩৮১৯৬৭, ০১৩২০০০১২৯৯, ০১৩২০০০১৩০০ নম্বর দেওয়া হয়েছে বার্তায়।
জরুরি প্রয়োজনে ঢাকা ম ৪
মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কন্ট্রোল রুম: ০২২২৩৩৫৫৫০০, ০১৮১৭৬০২০৫০ এ যোগাযোগ করতেও বলা হয়েছে।
এছাড়া ঢাকেশ্বরী মন্দির সেন্ট্রাল কন্ট্রোল রুম: ৯৬১১৩৫৩, ০১৭০৫৫০৫৫২৯; র?্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র?্যাব) কন্ট্রোল রুম: ০১৭৭৭৭২০০২৯; ফায়ার সার্ভিস সেন্ট্রাল কন্ট্রোল রুম: ০২২২৩৩৫৫৫৫৫, ০১৭১৩০৩৮১৮১, ০১৭১৩০৩৮১৮২, ০১৭৩০৩৩৬৬৯৯ নম্বরেও যোগাযোগ করার অনুরোধ জানান হয়।
জেলা পুলিশ সুপার ও থানার ওসির সঙ্গে যোগাযোগের জন্য বাংলাদেশ পুলিশের ওয়েবসাইট (িি.িঢ়ড়ষরপব.মড়া.নফ) থেকে নম্বর সংগ্রহ করার জন্য বলা হয় বার্তায়।
পাশাপাশি যে কোনো প্রয়োজনে যে কোনো ও সময় অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের সেবার জন্য জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে যোগাযোগ করার অনুরোধ করেছে পুলিশ সদর দপ্তর।